গাজীপুরে আলোচিত সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যাকাণ্ডে সরকারের ব্যর্থতা, পুলিশ প্রশাসনের অবহেলা ও শক্তিশালী গোষ্ঠীর ইন্ধন থাকার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

সোমবার (১১ আগস্ট) সকাল ১১টায় গাজীপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন সংগঠনের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ও দলীয় মুখপাত্র মাওলানা আতাউর রহমান।

তিনি বলেন, “স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও সরকার তাদের যথাযথ দায়িত্ব পালন না করায় সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মমভাবে খুন হতে হয়েছে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে। শুধু ভিডিও ধারণের কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেনি, এর পেছনে বড় কোনো ঘটনা লুকিয়ে আছে। আমরা জানতে পেরেছি, হত্যাকাণ্ড ঘটানোর জন্য সরাসরি নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।”

আরো পড়ুন:

সাংবাদিক তুহিন হত্যা: ‘শরীরে ধারালো অস্ত্রের ৯ গভীর ক্ষত’

চার টুকরো করে যুবকের লাশ খালে ফেলেন দম্পতি

তিনি আরো বলেন, “গ্রেপ্তার হওয়া কেউ গাজীপুরের বাসিন্দা নয়। তাহলে গাজীপুরে এই খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতারা কারা ছিল? কারা এই সন্ত্রাসীদের লালন-পালন করছে, যারা হত্যা, চাঁদাবাজি, ছিনতাই চালিয়ে যাচ্ছে- তাদের নাম প্রকাশ করতে হবে।

দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে উদ্বেগ জানিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, “গাজীপুরে প্রতিনিয়ত খুন, ছিনতাই ও চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সন্ত্রাসীরা এখানে আশ্রয় নিচ্ছে। অথচ তাদের বিষয়ে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। বিশাল জনগোষ্ঠীর এ শহরে পুলিশের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। অবিলম্বে পুলিশ সংখ্যা বৃদ্ধি এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়ন করতে হবে।”

আগামী জাতীয় নির্বাচনে সমান প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) বজায় থাকবে কিনা তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন রয়েছে বলে জানান মাওলানা আতাউর রহমান।

এছাড়া সংবাদ সম্মেলনের তিনি সরকার ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউ নিহত সাংবাদিক তুহিনের পরিবারের পাশে দাঁড়াইনি বলে দুঃখ প্রকাশ করে তার পরিবারের দায়িত্ব সরকারকে নেওয়ার আহ্বানও জানান।

প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তারা সাংবাদিক হত্যা মামলার দ্রুত তদন্ত, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন। তারা সতর্ক করে বলেন, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও জনগণের জানার অধিকার মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ইসলামী আন্দোলন গাজীপুর মহানগরের সভাপতি মাওলানা ফয়জ উদ্দিনের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন, মহানগর শাখার সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান মিয়াজী, এমএ হানিফ সরকার, অধ্যক্ষ  শহিদুল ইসলাম, মুফতি হোসাইন আহমদ, এইচএম সাইদুর রহমান, এসএম ওয়াহিদুল ইসলাম, আবু জাফর হাওলাদার প্রমুখ।

ঢাকা/রেজাউল/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য র রহম ন ইসল ম সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

লিফলেট বিতরণে যাওয়া বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে হামলার অভিযোগ

মাদারীপুরের শিবচরে তারেক রহমানের ৩১ দফা–সংবলিত লিফলেট বিতরণের সময় বিএনপির নেতা–কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সোমবার রাত আটটার দিকে শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বিকেলে তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লিফলেট নিয়ে বের হন মাদারীপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেন ওরফে লাবলু সিদ্দিকীর কর্মী-সমর্থকেরা। শিবচর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিতরণ করেন তাঁরা। ফেরার পথে উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকায় এলে শিবচর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক আওয়ামী লীগ দলীয় চেয়ারম্যান বাবুল ফকিরের লোকজনের সঙ্গে বিএনপির নেতা–কর্মীদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজন বিএনপির নেতা–কর্মীদের ওপর হামলা চালান বলে অভিযোগ।

এ সময় উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে আহত হন উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন। ভাঙচুর করা হয় পাঁচটি মোটরসাইকেল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শিবচর থানা–পুলিশ ও জেলার অতিরিক্ত পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়া সুমন আহম্মেদ ও রাশেদ মৃধা বলেন, তারেক রহমানের ৩১ দফা লিফলেট নিয়ে তাঁরা চরশ্যামাইল এলাকার কাজীর দোকান নামক স্থানে এলে আওয়ামী লীগ নেতা বাবুল ফকিরের ছেলে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা সুমন ফকিরের নেতৃত্বে শতাধিক মানুষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে তাঁদের অনেক লোকজন আহত হয়েছেন। মোটরসাইকেল রেখে তাঁদের অনেকে সেখান থেকে ফিরেছেন।

বিএনপি নেতা সাজ্জাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, প্রথমে বিএনপি কর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কয়েকজন অনুসারীর কথাকাটাকাটি হয়। পরে বিষয়টি মিটমাটও হয়ে গেছে। লিফলেট বিতরণ শেষ করে মোটরসাইকেল নিয়ে ফেরার সময় রাস্তায় গতিরোধ করে দুই দিক থেকে লাঠিসোঁটা নিয়ে আক্রমণ করে। কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। হামলায় যারা আহত বেশির ভাগই বিএনপির কর্মী সমর্থক। তিনি হামলার নিন্দা জানিয়ে জড়িতের বিচার দাবি করেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে বাবলু ফকিরের মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘খবর পেয়ে আমিসহ অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিই। এ ঘটনায় থানায় এখনো অভিযোগ দেয়নি কেউ। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ