রাজশাহীতে বাসায় ঢুকে বিচারকের ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা
Published: 13th, November 2025 GMT
রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আব্দুর রহমানের বাসায় ঢুকে তার ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা করেছে এক দুর্বৃত্ত। এ সময় বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহার এবং হামলাকারী যুবকও আহত হয়েছেন। তাদেরকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে রাজশাহী শহরের ডাবতলা এলাকায় স্পার্ক ভিউ নামের দশ তলা ভবনের পঞ্চম তলার একটি ফ্ল্যাটে এ হামলা হয়। এ সময় বিচারক আব্দুর রহমান বাসায় ছিলেন না।
আরো পড়ুন:
প্রেমিকাকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ড
বগুড়ায় তোজাম্মেল হত্যা: ৩ জনের ফাঁসি, ৩ জনের যাবজ্জীবন
নিহতের নাম তাওসিফ রহমান সুমন (১৬)। সে নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল। ভবনের অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা সুমনকে ছুরিকাঘাতে আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ভবনে ঢোকার সময় ওই যুবক দারোয়ানের কাছে থাকা খাতায় নিজের নাম লিখেছেন লিমন। বিচারক আব্দুর রহমান সম্পর্কে তার ভাই হন, এ পরিচয় দিয়ে তিনি পঞ্চম তলার ফ্ল্যাটে যান। ভবনে ঢোকার সময় তার হাতে একটি ব্যাগ ছিল।
ভবনের দারোয়ান মেসের আলী জানিয়েছেন, ওই যুবককে তিনি আগে কখনো দেখেননি। বিচারককে ভাই পরিচয় দেওয়ায় তিনি ঢুকতে দেন। তবে, তার আগে নাম ও মোবাইল নম্বর লিখিয়ে নেন। দুপুর আড়াইটার দিকে ওই যুবক ফ্ল্যাটে যান। এর প্রায় ৩০ মিনিট পর ফ্ল্যাটের গৃহকর্মী তাকে এসে জানান যে, ফ্ল্যাটে বিচারকের ছেলে ও স্ত্রীকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। এরইমধ্যে ভবনের অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারাও চলে আসেন। তারা সবাই ফ্ল্যাটে ঢুকে তিনজনকেই আহত পান। তিনজনকেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, নিহত সুমনের মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। হামলকারী যুবক ও বিচারকের স্ত্রীকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়েছে।
ঘটনার পর বিকেল ৫টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান।
তিনি জানান, হামলাকারী ব্যক্তির পকেটে একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি গাড়িচালক। তার সঙ্গে পূর্ববিরোধ থাকতে পারে।
পুলিশ কমিশনার জানান, সিলেটের সুরমা থানায় এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে জিডি করেছিলেন তাসমিন নাহার। আজ কেন এ হামলা হয়েছে, তা তারা এখনো জানেন না।
ঢাকা/কেয়া/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য ব চ রক র রহম ন ভবন র
এছাড়াও পড়ুন:
সাভারের তিন থানায় আ.লীগের ৪২ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
আওয়ামী লীগের কর্মসূচিকে ঘিরে ঢাকার সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৪২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরমধ্যে সাভারে ২৮ জন, আশুলিয়ায় ১১ জন ও ধামরাই থানায় তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকালে সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাই থানা পুলিশ জানায়, আওয়ামী লীগ ঘোষিত কর্মসূচিকে ঘিরে নিরাপত্তা নিশ্চিত ও নাশকতা ঠেকাতে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট ৪২ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরমধ্যে সাভার মডেল থানায় ২৮ জন, আশুলিয়া থানায় পাঁচ জন ও ধামরাই থানায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের আজ সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুয়েল মিয়া জানান, গতকাল থেকে আজ পর্যন্ত মোট ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তারা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল হান্নান বলেন, “আশুলিয়া থানা এলাকা থেকে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলাসহ নাশকতা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তাররা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।”
ধামরাই থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মো. শহীদুল ইসলাম জানান, গতকাল ধামরাই থানা এলাকায় আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে আওয়ামী লীগ ঘোষিত লকডাউন ঘিরে নাশকতা প্রতিরোধে সাভারের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে তৎপরতা বাড়িয়েছে ঢাকা জেলা পুলিশ। সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ে পরিবহনে তল্লাশিসহ টহল কার্যক্রম পরিচালনা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সাভারের আমিনবাজার তল্লাশী চৌকিতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঢাকা-আরিচা ও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে ঢাকামুখী যানবাহনে তল্লাশী চালানোর পাশাপাশি সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদসহ পরিচয় যাচাই করছে পুলিশ। এছাড়া গেল রাতে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে যৌথবাহিনীর টহল তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি। যেকোনো ধরনের সহিংসতা বা নাশকতা প্রতিরোধে ঢাকা জেলা পুলিশের প্রস্তুতি রয়েছে।
ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম আ্যান্ড অপস) মো. আরাফাতুল ইসলাম বলেন, “গতকাল যেমন চলছিল সেভাবেই চেকপোস্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া মোবাইল ডিউটি চলছে। সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় পুলিশ সর্বোচ্চ তৎপর রয়েছে।”
এদিকে সহিংসতা প্রতিরোধে মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়ে রাতে বিক্ষোভ মিছিল করেছ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। এছাড়া জামায়াতে ইসলামী, শিবিরসহ রাজনৈতিক সংগঠনগুলো ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক, নবীনগর-বাইপাইল সড়কসহ বিভিন্ন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে অবস্থান নিয়েছে।
ঢাকা/সাব্বির/এস