নাসার কৌশলে পড়াশোনা হয় নারায়ণগঞ্জের স্কুলটিতে, খরচ মাত্র ৩০০ টাকা
Published: 4th, October 2025 GMT
ভোরের আলো তখনো পুরোপুরি ছড়িয়ে পড়েনি নোয়াদ্দা এলাকার সরু রাস্তায়। সেই স্নিগ্ধ সকালের নিস্তব্ধতা ভেদ করে ভেসে আসে শিশুদের খিলখিল হাসি। কেউ বই হাতে, কেউ ব্যাগ কাঁধে, কেউ–বা বন্ধুর হাত ধরে ছুটে চলেছে স্কুলের দিকে। তাদের চোখে কৌতূহলের ঝিলিক, যেন কোনো গুপ্তধনের খোঁজে রওনা হয়েছে।
সম্প্রতি এক সকালে রিয়াজ পাবলিক স্কুলে গেলে এমন চিত্র চোখে পড়ে। স্কুলটির অবস্থান নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার নবীগঞ্জের নোয়াদ্দা এলাকায়। স্কুলটি শুধু ইট-কাঠের ভবন নয়, বরং নতুন আশার প্রতীক। নিম্ন ও মধ্যম আয়ের পরিবারের শিশুরা মাসে মাত্র ৩০০ টাকায় এখানে উন্নত মানের শিক্ষা পাচ্ছে। সঙ্গে বিনা মূল্যে মিলছে ইউনিফর্ম, জুতা, ব্যাগ, বইপত্র। শিশুদের কাছে এই বিদ্যালয় যেন স্বপ্নের সিঁড়ি।
স্কুল শুরুর যাত্রা
২০২৩ সালের শুরুতে ইপিলিয়ন গ্রুপের করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কর্মসূচির অংশ হিসেবে রিয়াজ পাবলিক স্কুলের যাত্রা শুরু হয়। নারায়ণগঞ্জের নোয়াদ্দা এলাকায় ৫০ শতাংশ জমির ওপর পাঁচতলার আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর স্কুল করা হয়। স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন ইপিলিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন আল মামুন। খোলা মাঠ, চারপাশে গাছগাছালি, আলো-বাতাসে ভরা ক্লাসরুম শিশুদের মনকে মুক্ত করে, বইয়ের বাইরে বিশাল এক জগৎ দেখাতে শেখায়। সব মিলিয়ে একটি প্রাণবন্ত শেখার পরিবেশ।
অ্যাস্ট্রো ক্যাম্পে অংশ নেওয়ার পর থেকে মহাকাশের প্রতি আমার গভীর আগ্রহ তৈরি হয়েছে। ভবিষ্যতে আমি নাসার একজন সফল বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন দেখি। আর সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে চাই।জান্নাত নূর, রিয়াজ পাবলিক স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীবিদ্যালয়টিতে শিশু থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত ১৯২ জন শিক্ষার্থী পড়ছে। প্রতিটি ক্লাসে সর্বোচ্চ ২৪ জন শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক আছেন ১০ জন। তাদের পড়াশোনা দেখভালের দায়িত্বে আছেন একাডেমিক মেন্টর। পড়াশোনায় সমস্যা থাকলে আলাদা সহায়ক ক্লাসের ব্যবস্থা আছে। মেধাবীরা স্ব-শিক্ষা গ্রুপে একে অপরকে শিক্ষক হয়ে শেখায়। শিক্ষার ধরনও ভিন্নধর্মী।
রিয়াজ পাবলিক স্কুল বাংলাদেশে নাসা অ্যাস্ট্রো ক্যাম্প কমিউনিটি পার্টনারস প্রোগ্রামের (এসিসিপি) অফিশিয়াল সাইট হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এই স্কুলের শিক্ষকেরা নাসা এসিসিপি ক্যাম্প পরিচালনা করার জন্য নাসা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
আধুনিক স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত রিয়াজ পাবলিক স্কুল। নারায়ণগঞ্জের বন্দরের নবীগঞ্জের নোয়াদ্দা এলাকায়.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র য় জ প বল ক স ক ল ন র য়ণগঞ জ র
এছাড়াও পড়ুন:
না.গঞ্জে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গোৎসব সম্পন্ন হওয়ায় ঐক্য পরিষদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা ছাড়াই অত্যান্ত শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা সম্পন্ন হওয়ায় জেলার সর্বস্তরের মানুষ, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা তথা সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, আনসার বাহিনী, বিজিবি, সিটি কর্পোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, সিভিল সার্জন, রেডক্রিসেন্ট, জেলা রোভার, স্বেচ্ছাসেবক, সকল রাজনৈতিক দল ও সাংবাদিকদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছে জেলা ও মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ।
শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে পরিষদের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে দেয়া এক বিবৃতির মাধ্যমে জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি প্রদীপ কুমার দাস ও মহানগরের সভাপতি লিটন চন্দ্র পাল এ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বিবৃতিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি প্রদীপ কুমার দাস বলেন, এবার কোন রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ও শঙ্কা ছাড়াই সুষ্ঠু, সুন্দর, উৎসবমুখর পরিবেশে নারায়ণগঞ্জে শারদীয় দূর্গোৎসব সম্পন্ন হয়েছে। পূজোর এ আয়োজনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতি মুহুর্তে আমাদের পূজো মন্ডপগুলোতে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক টিমের পাশাপাশি সার্বিক নিরাপত্তায় জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ প্রশাসন, এনএসআই, ডিবি, ডিএসবি, সিআইডি, ট্রাফিক পুলিশ, আনসার, বিজিবি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিআইডব্লিউটিএ, ফায়ার সার্ভিসসহ প্রশাসনের বিভিন্ন ইউনিট, বিদ্যুৎ বিভাগ, বিভিন্ন রাজনৈতিকদলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ ও সনাতনী সম্প্রদায়ের সকল নেতৃবৃন্দদের আন্তরিকতা ও সহযোগিতার কারণে আমাদের পূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এজন্য আমরা সকলরর প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।
মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি লিটন চন্দ্র পাল বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সর্বদা অটুট রাখতে সবাই কিভাবে এক ও অভিন্ন হয়ে কাজ করা যায়, তারই অন্যন্য নজির হচ্ছে এবারের এই শারদীয় দুর্গোৎসব।
আমি জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ আমাদের ঐক্য পরিষদ ও অন্যান্য সনাতনী সংগঠনগুলো যারা নির্বিঘ্নে দুর্গাপূজা সমাপ্ত করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
সকলের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সার্বিক সহযোগীতার কারণেই শারদীয় দুর্গা উৎসব নারায়ণগঞ্জে উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছিল। আশা করি, আগামী দিনগুলোতেও এরকম সহযোগীতা ও নিরাপত্তা বজায় থাকবে। আমরা ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সুস্থ্যতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।