মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে তরুণকে এলোপাতাড়ি কোপ, হাসপাতালে মৃত্যু
Published: 4th, October 2025 GMT
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে এক তরুণকে এলোপাতাড়ি কুপিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত তরুণের নাম আরমান হোসেন ওরফে বিজয়। তিনি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর গ্রামের রবি মেম্বারের বাড়ির শাহীন চৌধুরীর ছেলে। তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
নিহত ব্যক্তির পরিবার জানায়, গতকাল রাত ১০টার দিকে উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কল্যাণ মার্কেটের কাছে আরমানকে কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে রাত ১২টার দিকে নোয়াখালীর জেনারেল হাসপাতালে আরমানের মৃত্যু হয়।
নিহত আরমানের মামা ইসমাইল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, রাতে স্থানীয় হাজীপুর ১ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন ব্রিজ এলাকা থেকে মোটরসাইকেলে করে একলাশপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কল্যাণ মার্কেটে যাচ্ছিলেন আরমান। তাঁর সঙ্গে মো.
এক প্রশ্নের জবাবে ইসমাইল হোসেন বলেন, ১০ থেকে ১৫ দিন আগে নতুন ব্রিজ এলাকায় দুই দল তরুণের মধ্যে মারামারি ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তরুণদের একটি পক্ষ আরমানের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। এর জেরেই তাঁর ওপর হামলা হয়েছে।
জানতে চাইলে বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান প্রথম আলোকে বলেন, নিহত তরুণের পরিবারের অভিযোগের আলোকে এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান চলমান। নিহত তরুণের বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানান ওসি।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুড়িগ্রামে গৃহবধূকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ, বিচার দাবি
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে গৃহবধূ ফাতেমাকে দলবদ্ধ ধর্ষণের পর গলাটিপে হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে নিহতের পরিবার।
বুধবার (১ অক্টোবর) দুপুরে কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে নিহতের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
পরকীয়া নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে কথা কাটাকাটি, যুবককে কুপিয়ে হত্যা
বাড়ির মেয়েদের দিকে কুদৃষ্টি দেওয়ায় আকবরকে হত্যা
নিহত গৃহবধূ ফাতেমার পিতা মো. আসাদ আলী (আসাবুদ্দিন) লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করে বলেন, “আমার মেয়েকে গত ১৪ আগস্ট রাতে উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের উত্তর বালাডোবা গ্রামে স্বামীর বাড়িতে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়। পরে লাশ ঘরের আড়ায় ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালানো হয়।”
তিনি জানান, ফাতেমার স্বামী শামীম মোল্লা জীবিকার তাগিদে টাঙ্গাইল জেলায় থাকলেও নিয়মিত পরিবারের খোঁজখবর নিতেন। স্বামীর অনুপস্থিতিতে এলাকার কিছু দুষ্কৃতিকারী ও মাদকসেবী ফাতেমাকে দীর্ঘদিন ধরে উত্যক্ত করত। ঘটনার রাতে ফাতেমার শাশুড়ি ও জা নিজ বাড়িতে ছিলেন না। তারা আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলেন। এ সময় প্রথমে সফিকুল ইসলাম সফি নামের এক যুবক তার বাড়িতে প্রবেশ করলে স্থানীয় কয়েকজন তাকে আটক করে। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে টাকা নেয়। এরপর রাত গভীর হলে সফিকুলসহ প্রায় ১২ জন সংঘবদ্ধভাবে ফাতেমার ঘরে প্রবেশ করে পালাক্রমে ধর্ষণ ও হত্যা করে।
আসাদ আলীর অভিযোগ, ঘটনার পর বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবলু মিয়ার প্রত্যক্ষ তদবিরে স্থানীয় পুলিশ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। নামাজের চর পুলিশ ফাঁড়ি থেকে এসআই জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে এসে লাশের সুরতহালে গলায় ও শরীরে জখম থাকার পরও আত্মহত্যার কাহিনি সাজায় পুলিশ। এমনকি থানায় মামলা করতে গেলে জোরপূর্বক সাদা কাগজে তার (আসাদ আলীর) নিকট থেকে স্বাক্ষর নিয়ে মেয়ের আত্মহত্যার স্বীকারোক্তি তৈরি করে পুলিশ। এখন পর্যন্ত তিনি মেয়ের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনও পাননি তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো জানান, ঘটনাস্থল থেকে মেয়ের শাড়ি উদ্ধার করা হলেও লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় সালোয়ার কামিজ পরিহিত অবস্থায়। এ নিয়ে গ্রামে নানা প্রশ্ন উঠলেও পুলিশ গুরুত্ব দেয়নি। অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও মামলা ও তদন্তে কোনো অগ্রগতি নেই। বরং ভিকটিমের পরিবারকেই হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
ফাতেমার বাবা মো. আসাদ আলী বলেন, “আমার মেয়েকে গণধর্ষণ ও হত্যার পর ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়েছে। পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিরা টাকার বিনিময়ে সত্য গোপন করছে। একজন পিতা হিসেবে আমি আমার মেয়ে হত্যার ন্যায়বিচার চাই। অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।
ঢাকা/সৈকত/মেহেদী