সোনারগাঁয়ে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে হত্যা
Published: 4th, October 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় যৌতুকের দাবিতে স্মৃতি রানী বর্মণ (২৫) নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার সাত ভাইয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগে জানা গেছে।
নিহত স্মৃতি রানী বর্মণ কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার উত্তর দুর্গাপুর গ্রামের যতীন্দ্র চন্দ্র বর্মণের মেয়ে। তিনি সোনারগাঁয়ের বেনু চন্দ্র বর্মণের ছেলে সনজিৎ চন্দ্র বর্মণের স্ত্রী।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই শ্যামু চন্দ্র বর্মণ বাদী হয়ে শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রাতে সোনারগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে স্বামী সনজিৎ চন্দ্র বর্মণ, শ্বশুর বেনু চন্দ্র বর্মণ, শ্বাশুড়ি জোসনা রানী বর্মণ, আত্মীয় স্বরসতি চন্দ্র বর্মণসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২-৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, বিয়ের পর থেকেই স্বামীসহ আসামিরা ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে স্মৃতি রানীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিলেন। পরিবারের পক্ষ থেকে কয়েক ধাপে ৩ লাখ টাকা দেওয়ার পরও তারা বাকি ২ লাখ টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন।
গত ২ অক্টোবর রাতে স্মৃতি রানী তার ভাইকে ফোন করে জানায়, যৌতুকের টাকা না দিলে তাকে হত্যা করা হবে বলে স্বামী-শ্বশুরবাড়ির লোকজন হুমকি দিয়েছে। পরদিন সকালে আবারও ফোনে যৌতুকের টাকা দাবি করা হয়।
বিকেলে পরিবার বিষয়টি জানতে পেরে কুমিল্লা থেকে সোনারগাঁয়ের উদ্দেশে রওনা দেয়। পথে দাউদকান্দি ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে আসামিরা ফোনে জানায়, স্মৃতি রানী অসুস্থ হয়ে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন। পরে পরিবার হাসপাতালে গিয়ে স্মৃতি রানীর মরদেহ দেখতে পান।
নিহত স্মৃতি রানী বর্মণের ভাই শ্যামু চন্দ্র বর্মণ বর্মণ বলেন আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে স্মৃতি রানীকে শ্বাসরোধে হত্যা করে হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে।
সোনারগাঁ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রাশেদুল ইসলাম খাঁন বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেয়ে মামলা নেওয়া হয়ছে।লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়ছে।আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ন রগ ও গ হবধ অপর ধ স ন রগ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় বাউল শিল্পীঅনিকার রহস্যজনক মৃত্যু, স্বামী আটক
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বাউল শিল্পি আনিকা আক্তার অনিকার (১৯) রহস্য জনক মৃত্যু হয়েছে। নিহতের পরিবার দাবী পারিবারিক কলহের জের ধরে অনিকাকে হত্যা করেছে তার স্বামী হাবিবুর রহমান(২৫)।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ নিহতের স্বামী হাবিবুর রহমান কে আটক করেছে।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে ফতুল্লার ভুইগড় এলাকার ভাড়া বাসা থেকে অনিকার মৃত দেহ তার স্বামী হাবিবুর রহমান স্থানীয় একটি বেসরকারী হাসপাতালে নিয়ে যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে হাবিবুর রহমানকে আটক করে অনিকার লাশ ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেন।
নিহত আনিকা আক্তার অনিকা (১৯) মাদারীপুর জেলার মোস্তফাকুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম জানান, ময়না তদন্তের পর মৃত্যুর কারন জানাযাবে।
হাবিবুর ও অনিকা ফতুল্লার ভুইগড় এলাকায় মাস্টারের ভাড়াটিয়া বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন। এ ভাড়াটিয়া বাসায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
অনিকার বাবা জাহাঙ্গীর আলম জানান, ৫ বছর আগে অনিকাকে হাবিবুর ভালোবেসে বিয়ে করে।
তাদের বিয়ের পর জানতে পেরেছি স্ত্রীর সাথে সামান্য বিষয় নিয়ে ঝগড়া হলেই নতুন করে আবার বিয়ে করতেন। এভাবে হাবিব পর্যায়ক্রমে অনিকার আগে ৪টি বিয়ে করেছে। ৪ মাস আগে অনিকার একটি কন্যা সন্তান হয়েছে। সেই সন্তান কোলে নিয়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকের পাশে অবস্থিত একাধীক বাউল ক্লাবে গিয়ে গান করতেন। সারারাত গান গেয়ে যে টাকা উপার্জন করতেন সেই টাকা বাসায় আসলেই অনিকার কাছ থেকে জোড় করে নিয়ে যেত হাবিবুর রহমান।
তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি মালা নামে এক বাউল নারী শিল্পিকে হাবিবুর বিয়ে করেন। হাবিবুরের কাছে সেই বিয়ের সত্যতা জানার চেষ্টা করেন অনিকা। এ নিয়ে হাবিবুর ক্ষিপ্ত হয়ে ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে গ্রামের বাড়ি চাদপুর চলে যায়। সেখান থেকে কয়েকদিন আগে অনিকাকে তালাকের প্রথম নোটিশ পাঠায়। অনিকা সেই নোটিশ নিয়ে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে নালিশ করেন। এতে হাবিবুর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে স্বর্না নামে আরেকজন নারী বাউল শিল্পিকে দিয়ে অনিকাকে হত্যার চেষ্টা করেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে অনিকার বাসায় গিয়ে হামলা চালায় স্বর্না। এসময় বেধরক মারধর করে অনিকার পরিহিত নাকের গলার ও হাতের স্বর্ণের অলংকার খুলে নেয়। তখন অনিকার ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে অনিকাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করায়। ওইসময় কৌশলে স্বর্ণা পালিয়ে যায়।
অনিকার বাবাসহ তাদের পরিবারের দাবী পরিকল্পিত ভাবে অনিকাকে হত্যা করে তা আড়াল করতেই হাবিবুর মৃত দেহ নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছে। এ হত্যাকান্ডের সর্বচ্চো শাস্তি দাবী করেন নিহতের পরিবার।
এবিষয়ে হাবিবুর রহমান জানান, অনিকাকে সে হত্যা করেনি। গ্রামের বাড়ি চাদপুর থেকে এসে অনিকার খোজে তাদের ভাড়া নেয়া ভুইগড়ের ফ্ল্যাট বাসায় যায়। সেখানে গিয়ে দরজায় অনেক সময় ধাক্কা ধাক্কি করেন। তখন দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে দেখি অনিকার নিথর দেহ জানালার গ্রীলের সাথে ওড়না দিয়ে গলায় ফাস লাগানো অবস্থায় ঝুলছে। এরপর তাকে নিয়ে সাইনবোর্ড প্রোঅ্যাকটিব হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক অনিকাকে মৃত ঘোষনা করেন।
তিনি আরো বলেন, অনিকাকে যে তালাকের নোটিশ পাঠিয়েছি সেটি ভুয়া তাকে ভয় দেখানোর জন্য পাঠিয়ে ছিলাম।