সাইবারট্রাক দুর্ঘটনায় তরুণীর মৃত্যু, টেসলার বিরুদ্ধে মামলা
Published: 4th, October 2025 GMT
ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান টেসলার বিরুদ্ধে সাইবারট্রাকের নকশাগত ত্রুটির অভিযোগে মামলা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের এক দম্পতি। তাঁদের দাবি, ওই ত্রুটির কারণেই ক্যালিফোর্নিয়ায় গাড়ি দুর্ঘটনায় ১৯ বছর বয়সী তাঁদের মেয়ে ক্রিস্টা সুউকাহারার মৃত্যু হয়েছে।
২০২৪ সালের নভেম্বরে ক্যালিফোর্নিয়ার পিডমন্ট এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় টেসলার একটি সাইবারট্রাক গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেলে ব্যাটারি বিস্ফোরিত হয়ে আগুন ধরে যায়। তখন পেছনের আসনে বসা কলেজছাত্রী ক্রিস্টা আগুন থেকে পালাতে পারেননি। গাড়িতে আটকা পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনায় আরও দুই তরুণ—চালক সোরেন ডিকসন (১৯) ও যাত্রী জ্যাক নেলসন (২০) নিহত হন।
ক্রিস্টার মা–বাবা নোয়েল সুউকাহারা ও কার্ল সুউকাহারা আদালতে করা মামলায় অভিযোগ করেছেন, সাইবারট্রাকের দরজার নকশা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তাঁদের ভাষায়, গাড়িটিতে জরুরি পরিস্থিতিতে বের হওয়ার মতো কোনো কার্যকর, সহজলভ্য ও স্পষ্ট ম্যানুয়াল রিলিজ ব্যবস্থা নেই। বিদ্যুৎ–বিভ্রাটের পর তাঁদের মেয়ে গাড়ি থেকে বের হতে না পারায় আগুনের ভেতরেই প্রাণ হারান বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
টেসলার ওনার ম্যানুয়ালে বলা আছে, গাড়ির বিদ্যুৎ চলে গেলে পেছনের আসনের যাত্রীদের একটি রাবার ম্যাট সরিয়ে নিচের যান্ত্রিক তার টানতে হবে, এরপর দরজা ঠেলে খুলতে হবে। তবে সুউকাহারা পরিবারের অভিযোগ, এই প্রক্রিয়া জটিল এবং জরুরি পরিস্থিতিতে কার্যকর নয়। এক বিবৃতিতে ক্রিস্টার বাবা কার্ল সুউকাহারা বলেন, ‘এমনটা কেন ঘটল, আর কেন সে গাড়ি থেকে বের হতে পারল না। একটি ট্রিলিয়ন ডলারের কোম্পানি কীভাবে এমন একটি যন্ত্র বাজারে ছাড়ে, যা এতটা অনিরাপদ?’ দুর্ঘটনার সময় ক্রিস্টার এক বন্ধু তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা করেছিলেন। তিনি গাছের ডাল দিয়ে গাড়ির সামনের কাচ ভেঙে এক যাত্রীকে উদ্ধার করেন। কিন্তু পেছনের আসনে আটকে থাকা ক্রিস্টাকে বের করে আনতে পারেননি।
দুর্ঘটনায় নিহত জ্যাক নেলসনের পরিবারের পক্ষ থেকেও টেসলার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তাদের মামলায় বলা হয়েছে, টেসলা সাইবারট্রাকের নকশাগত ত্রুটির কারণেই একটি বেঁচে যাওয়ার মতো দুর্ঘটনা পরিণত হয়েছে প্রাণঘাতী আগুনে। নেলসন পরিবারের আইনজীবী ম্যাথিউ ডেভিস ব্লুমবার্গকে বলেন, এ ঘটনায় দুটি বিষয় একসঙ্গে সত্য হতে পারে। দুর্ঘটনার জন্য চালক দায়ী হতে পারেন, আবার যাত্রীদের বের হতে না দেওয়ার দায় কোম্পানিরও রয়েছে। এদিকে এসব মামলার কয়েক সপ্তাহ আগেই যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সড়ক নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ টেসলার মডেল ওয়াইয়ের দরজার হ্যান্ডল নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ র ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
পুঁজিবাজারে রুলস হওয়ার আগেই সমাধান খুঁজতে হবে: ডিএসই চেয়ারম্যান
দেশের পুঁজিবাজারে রুলস তৈরি হওয়ার আগেই সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর নিকুঞ্জে ডিএসই টাওয়ারে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (পাবলিক অফার অব ইক্যুইটি সিকিউরিটিজ) রুলস, ২০২৫’ শীর্ষক আলোচনায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
একমি পেস্টিসাইডসের প্রথম প্রান্তিকে লোকসান কমেছে ১৬.৬৭ শতাংশ
সিএসইর কমোডিটি এক্সচেঞ্জের উন্নয়নে মালয়েশিয়া সহযোগিতা করবে: রাষ্টদূত
মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘‘পুঁজিবাজারে অনেক সমস্যা আছে, যে কারণে ভালো ভালো কোম্পানিগুলো এখনো তালিকাভুক্ত হয়নি। এ সমস্যাগুলো দূর করতে রুলস হওয়ার আগেই সমাধান খুঁজতে হবে। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে হবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘মার্কেটের পরিধি বাড়াতে ভালো ও নতুন নতুন প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) আনতে হবে। কিন্তু পুঁজিবাজারে সমস্যাকালীন দরজা–জানালা বন্ধ হয়ে যেতে দেখা যায়। নিয়ন্ত্রক সংস্থার দায়িত্বে যারা থাকেন, তাদের হাতেও অনেক সময় রুলস ছাড়া কিছু করার থাকে না। তাই সমস্যাগুলো যেন জমে না থাকে, সে জন্য রুলস হওয়ার আগেই সমাধান খোঁজা প্রয়োজন।’’
ডিএসইর চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘বাজারে ভালো কোম্পানির সংখ্যা খুবই কম। ভালো কোম্পানির তালিকাভুক্তি বাড়াতে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। এই জায়গায় কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে। তাই ভালো কোম্পানিগুলোকে বাজারে আনার উপযোগী করে রুলস তৈরি করা দরকার।’’
ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) সভাপতি এস এম গোলাম সামদানী ভূঁইয়া বলেন, ‘‘পুঁজিবাজারে আইপিও অনুমোদনে প্রধান বাধা দীর্ঘকালক্ষেপণ। বর্তমানে একটি আইপিও অনুমোদন পেতে এক থেকে দেড় বছর লেগে যায়। যেখানে কোনো কোম্পানি মূলধন সংগ্রহ বা ঋণ সহজে ব্যাংক থেকে পেতে পারে। বিশেষ করে ভালো ভালো কোম্পানি যখন ব্যাংকে ঋণ নিতে যায়, ১৫ দিন থেকে এক মাসের মধ্যে চাহিদামতো ঋণ পেয়ে যায়। গত দুই বছরে পুঁজিবাজারে কোনো আইপিও নেই। ভালো আইপিও না আসার কারণে পুঁজিবাজার নেতিবাচক প্রবণতা থেকে বের হতে পারছে না।’’
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) যৌথভাবে এ বৈঠকের আয়োজন করে। এতে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজ (বিএপিএলসি), বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ), ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি (ডিসিসিআই), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিজের (বিএপিআই) প্রতিনিধি ও পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডাররা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/এনটি/বকুল