গায়ক জুবিনের মৃত্যু নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য, আসলে মৃত্যুর কারণ কী
Published: 4th, October 2025 GMT
ভারতীয় গায়ক জুবিন গার্গের মৃত্যুর তদন্তে নতুন মোড় এসেছে। তাঁর ব্যান্ড সদস্য শেখর জ্যোতি গোস্বামী অভিযোগ করেছেন, জুবিনের ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মা ও নর্থইস্ট ইন্ডিয়া ফেস্টিভ্যালের আয়োজক শ্যামকানু মহন্ত তাঁকে বিষপ্রয়োগে হত্যা করেছেন এবং ঘটনাটিকে দুর্ঘটনা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছেন।
ভারতীয় নাগরিক নিরাপত্তা সংহিতার (বিএনএনএস) অধীনে রেকর্ড করা সাক্ষ্য অনুযায়ী গোস্বামী তদন্তকারীদের জানিয়েছেন যে সিঙ্গাপুরে জুবিন গার্গের মৃত্যুর আগে-পরে সিদ্ধার্থ শর্মার আচরণ ছিল সন্দেহজনক।
জ্যোতি গোস্বামী জানান, ঘটনার দিন ইয়টে ভ্রমণের সময় শর্মা নাবিকের কাছ থেকে জোর করে ইয়টের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন, যার ফলে ইয়টটি মাঝসমুদ্রে বিপজ্জনকভাবে দুলতে থাকে এবং যাত্রীদের জীবন ঝুঁকিতে পড়ে। তিনি আরও বলেন, শর্মা ‘আসাম অ্যাসোসিয়েশন (সিঙ্গাপুর)’-এর সদস্য ও প্রবাসী তন্ময় ফুকনকে বলেছিলেন, তিনি যেন পানীয় সরবরাহ না করেন। কারণ, শর্মা নিজেই তা দেবেন।
গোস্বামীর ভাষ্য অনুযায়ী, যখন জুবিন শ্বাস নিতে লড়াই করছিলেন ও প্রায় ডুবে যাচ্ছিলেন, তখন শর্মাকে বলতে শোনা যায়, ‘যেতে দে, যেতে দে।’ গোস্বামী জোর দিয়ে বলেন, জুবিন ছিলেন প্রশিক্ষিত সাঁতারু, যিনি নিজে তাঁদের দুজনকেও সাঁতার শিখিয়েছিলেন, তাই তাঁর মৃত্যু ডুবে যাওয়ার কারণে হওয়ার কথা নয়।
গোস্বামীর দাবি, শর্মা ও মহন্ত দুজনেই জুবিনকে বিষ প্রয়োগ করেছিলেন এবং ষড়যন্ত্র গোপন রাখতে ইচ্ছা করেই সিঙ্গাপুরকে বেছে নিয়েছিলেন। তিনি আরও জানান, শর্মা তাঁকে ইয়টের কোনো ভিডিও কাউকে না দিতেও নির্দেশ দিয়েছিলেন।
জিজ্ঞাসাবাদের সময় শর্মা ও মহন্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে গোস্বামী তদন্তকারীদের জানান, যখন জুবিনের মুখ ও নাক দিয়ে ফেনা বের হচ্ছিল, তখন শর্মা বলেছিলেন, এটি কেবল ‘অ্যাসিড রিফ্ল্যাক্স’, চিন্তার কিছু নেই। তিনি তৎক্ষণাৎ চিকিৎসক না ডেকে বরং এমন আচরণ করেন, যা জুবিনের ‘অকালমৃত্যু’ ত্বরান্বিত করে।
তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নথি, আর্থিক লেনদেন, সাক্ষ্যসহ বিভিন্ন প্রমাণ প্রাথমিকভাবে শর্মার দোষী ভূমিকা প্রমাণ করছে।
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) ও ইনকাম ট্যাক্স (আই-টি) বিভাগও এই মামলায় যোগ দিতে পারে—বিশেষ করে শ্যামকানু মহন্তের নামে আর্থিক অপরাধ ও বেনামি সম্পত্তি অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
আসাম পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ইতিমধ্যে মহন্তের বিরুদ্ধে ২০ বছর আগের একটি নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চাকরির সময়ের আর্থিক অনিয়মও খুঁজে পেয়েছে। ঘটনাসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইডি ও আয়কর দপ্তরের কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে সিআইডি সদর দপ্তরে গিয়ে মামলার নথি পর্যালোচনা করেছেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর ছ ন আর থ ক তদন ত মহন ত
এছাড়াও পড়ুন:
পুলিশ সদস্যদের হেনস্তা, বিএনপির ৯ নেতাকর্মীর নামে মামলা
মানিকগঞ্জের ঘিওর থানার ভেতরে মোটরসাইকেল রাখাকে কেন্দ্র করে পুলিশ সদস্যদের হেনস্তা করার ঘটনায় বিএনপির ৯ নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা হয়েছে।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে ঘিওর থানার এএসআই রফিকুল ইসলাম ৯ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত ৩০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
আরো পড়ুন:
খাগড়াছড়িতে হত্যা ও হামলার ঘটনায় ৩ মামলা
ময়মনসিংহে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা, গ্রেপ্তার ২
আসামিদের সবাই মানিকগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী খন্দকার আকবর হোসেন বাবলুর অনুসারী।
ঘিওর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কহিনুর ইসলাম জানান, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
মামলার বাদী এএসআই রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘মারধর ও হুমকির বিষয়ে থানায় মামলা করেছি। বিষয়টি থানার ওসিসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। একজন পুলিশের গায়ে হাত তোলার বিষয়টি কষ্টকর ও লজ্জাজনক।’’
আসামিরা হলেন, ঘিওর সদর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মীর কাওসার, খন্দকার বিল্টু, খন্দকার সেলিম জিএস, উজ্জল হোসেন, হারেজ মিয়া, রফিকুল ইসলাম পিন্টু, রাজু খন্দকার, শহিদুল ইসলাম চান্দু ও শফিউল আলম বিল্টু। তারা সবাই জেলা ও উপজেলা বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য খন্দকার আকবর হোসেন বাবলু একটি মাইক্রোবাস, ১০ থেকে ১২টি মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে ঘিওর থানার ভিতরে প্রবেশ করেন। তারা যানবাহনগুলো থানার ভেতর রাখতে চাইলে দায়িত্বরত নারী কনস্টেবল আন্না আক্তার প্রথমে তাদের বাধা দেন। নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করলে ডিউটি অফিসার এএসআই রফিকুল ইসলামকে জানান ওই নারী কনস্টেবল। ডিউটি অফিসার বহর নিয়ে তাদের থানায় ঢোকার কারণ জানতে চাইলে আসামিরা তাকেসহ নারী কনস্টেবলকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। গালাগাল করতে নিষেধ করলে এএসআই রফিকুলকে মারধর করেন আসামিরা। খবর পেয়ে থানার পেছনে ঘিওর কলেজ মাঠে দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা এগিয়ে আসলে আসামিরা তাদের হুমকি দিয়ে চলে যান।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য খন্দকার আকবর হোসেন বাবলু বলেন, ‘‘আমার সামনে আওয়ামী লীগের দোসর পুলিশ নেতাকর্মীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। পুলিশ আওয়ামী লীগের দোসর বলে আমাদের থানায় ঢুকতে বাধা দিয়েছে। পুলিশকে গালাগাল অথবা গায়ে হাত দেওয়া হয়নি। বরং পুলিশই বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে।’’
ঢাকা/চন্দন/বকুল