কেন নাভি পরিষ্কার রাখা জরুরি

নিয়মিত নাভি পরিষ্কার না করলে এখানে নানা ধরনের রোগের সংক্রমণ হতে পারে। এর মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ হলো ছত্রাকের সংক্রমণ, যা চুলকানি, লালচে ভাব এবং দুর্গন্ধের কারণ হতে পারে। এ ছাড়া নাভির ভেতর জমে থাকা ময়লা, ব্যাকটেরিয়া ও ঘামের মিশ্রণ থেকে একধরনের গন্ধ সৃষ্টি হয়। নাভির ভেতরে চুল বা লোম থাকলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে।

শিশুদের নাভির যত্ন

নবজাতকের নাভির বিশেষ যত্ন প্রয়োজন। সাধারণত জন্মের পর কয়েক দিনের মধ্যে নাভির গোড়া শুকিয়ে যায় এবং এটি নিজে থেকেই পড়ে যায়। তাই এ সময় নাভি পরিষ্কার রাখার জন্য কিছু বিষয় মেনে চলতে হবে। যেমন—
১.

শুষ্ক রাখা: শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত নাভি সব সময় শুষ্ক রাখতে হবে। গোসলের সময় নাভি ভিজে গেলে পরিষ্কার তুলা বা নরম কাপড়ের সাহায্যে আলতোভাবে মুছে দিন।
২. চিকিৎসকের পরামর্শ: নাভির গোড়ায় কোনো ধরনের লোশন, তেল বা পাউডার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন, যদিনা চিকিৎসক পরামর্শ দেন।
৩. সংক্রমণের লক্ষণ: যদি নাভির গোড়ায় লালচে ভাব, ফোলা, পুঁজ বা দুর্গন্ধ দেখা যায়, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

বড়দের নাভি পরিষ্কারের নিয়ম

১. প্রতিদিন পরিষ্কার: প্রতিদিন গোসলের সময় হালকা গরম পানি এবং মৃদু সাবান দিয়ে নাভি পরিষ্কার করা ভালো। নরম কাপড় বা আঙুল ব্যবহার করে নাভির ভেতরের অংশ আলতোভাবে পরিষ্কার করুন।
২. গভীরভাবে পরিষ্কার: সপ্তাহে অন্তত একবার বা দুবার কটনবাড ব্যবহার করে নাভির ভেতরের ভাঁজগুলো আলতোভাবে পরিষ্কার করতে পারেন। পরিষ্কারের পর নাভি ভালোভাবে শুকিয়ে নিন। পানি বা সাবান জমে থাকলে সেখানে জীবাণু জন্মাতে পারে।
৩. সাবধানতা: নাভি পরিষ্কারের সময় জোরে ঘষা উচিত নয়। এতে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। অ্যালকোহল, হাইড্রোজেন পারক্সাইড বা অন্য কোনো কড়া রাসায়নিক ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। এতে ত্বকে জ্বালা হতে পারে।

কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন

যদি নাভিতে দীর্ঘস্থায়ী লাল ভাব, ব্যথা, ফোলা, চুলকানি বা অস্বাভাবিক দুর্গন্ধ থাকে বা পুঁজ হয়, তাহলে দ্রুত একজন চর্মরোগবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

আরও পড়ুনবিসিএস ভাইভার পরই আব্বাকে ফোন করে বললাম, ‘আজ থেকে আর রিকশা চালাতে হবে না’ ১০ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর ন ভ র ভ তর পর ষ ক র র চ ক ৎসক

এছাড়াও পড়ুন:

কপ ঘিরে নানা দুর্বলতা, সংস্কারের আহ্বান

ব্রাজিলের বেলেমে এবারের কপ সম্মেলন ঘিরে মৌলিক একটি প্রশ্ন সামনে আসছে। সেটি হলো, প্রতিবছর জাতিসংঘের এই জলবায়ু সম্মেলন আসলে কী কারণে আয়োজন করা হয়?

৩০ বছর ধরে কপ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই সময়ে জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় বৈশ্বিক পদক্ষেপ কিছুটা অগ্রগতি এনেছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্প্রসারণ হয়েছে। জলবায়ু তহবিল বেড়েছে। তবে এগুলো যথেষ্ট নয়। এত আয়োজন, এত আলাপ–আলোচনার পরও গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন বাড়ছে। এর জেরে স্বাভাবিকভাবেই বৃদ্ধি পাচ্ছে তাপমাত্রা।

এমন পরিস্থিতিতে কপ সংস্কারের দাবি জোরালো হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে ৩০ জনের বেশি বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলেছে রয়টার্স। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কূটনৈতিক, জাতিসংঘের সাবেক মধ্যস্থতাকারী, বিভিন্ন সরকারে মন্ত্রী ও অধিকারকর্মীরা। তাঁদের অনেকেই মনে করেন, ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে কপের হালনাগাদ করার প্রয়োজন রয়েছে।

যেমন পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে ইউরোপীয় একজন মধ্যস্থতাকারী বলেন, কপ সম্মেলনগুলো মেলার মতো হয়ে পড়েছে। এখানে শুধু আলোচনাই হয়। এই অবস্থা থেকে সরে গিয়ে লক্ষ্য বাস্তবায়নের ওপর জোর দিতে হবে। ইউরোপীয় এই মধ্যস্থতাকারীর সঙ্গে অনেকেই একমত হলেও, সংস্কারটি কেমন হবে, তা নিয়ে অনেকের দ্বিমত রয়েছে।

কারণ, বর্তমান সময়টাকে সংস্কারের জন্য উপযুক্ত মনে করছেন না অনেকেই। পেরুর আবহাওয়া মন্ত্রী মানুয়েল পুলগার ভিদালের মতে, যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশে জলবায়ুবিরোধী রাজনীতির উত্থান হয়েছে। বিভিন্ন দেশে পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন নীতি দুর্বল করার প্রবণতা দেখা দিচ্ছে। এসব পরিস্থিতিতে কপে বড় পরিবর্তন আনার চেষ্টা করলে উল্টো ক্ষতি হতে পারে।

এ ছাড়া কপে যাঁরা পরিবর্তন চান, তাঁদের বড় হতাশা হলো, এই সম্মেলনে প্রায় ২০০ দেশের পূর্ণ ঐকমত্য ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। ফলে উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রস্তাবগুলো বহুবার আটকে গেছে। উদাহরণ হিসেবে বলতে গেলে, কপ২৬-এ ‘কয়লা ব্যবহার পর্যায়ক্রমে বন্ধ করা’ নিয়ে আপত্তি তোলে ভারত। ফলে শেষ মুহূর্তে ‘পর্যায়ক্রমে কয়লার ব্যবহার কমানোর’ সিদ্ধান্ত হয়।

এ ক্ষেত্রে একটি সমাধান হতে পারে, কপে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সিদ্ধান্ত নেওয়া। কিন্তু সেটি চালু করতেও প্রথমে সব দেশের পূর্ণ সমর্থন প্রয়োজন, যা বড় একটি বাধা। কিছু সরকার প্রস্তাব করেছে, কপ যেন দুই বছর পরপর হয়। তবে ইন্টার-আমেরিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সভাপতির বিশেষ উপদেষ্টা অবিনাশ প্রসাদ বলেন, দুই বছর পরপর কপ হলে তা গতি হারাতে পারে।

জাতিসংঘ নিজেও কপের পরিবর্তন চায়। জাতিসংঘ জলবায়ুবিষয়ক সচিবালয়ের প্রধান সাইমন স্টিয়েল একটি ১৫ সদস্যের দল গঠন করেছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক বিশ্বনেতা, কূটনীতিক, মন্ত্রী, ব্যবসায়ী ও আদিবাসী প্রতিনিধিরা। তাঁরা আগামী দশকে কপকে কীভাবে আরও কার্যকর করা যায়, এ বিষয়ে পরামর্শ দেবেন। স্টিয়েল বলেন, ‘নতুন যুগে আমাদের পরিবর্তিত ও উন্নত হতে হবে।’

নানা জটিলতা ও লক্ষ্য বাস্তবায়নের ধীরগতির কারণে হতাশা প্রকাশ করেছে এবারের কপ৩০–এর আয়োজন দেশ ব্রাজিলও। দেশটি বলেছে, নতুন প্রতিশ্রুতি নয়, বরং পুরোনোগুলো বাস্তবায়নে মনোযোগ দেওয়া উচিত। এমন পরিস্থিতিতে এবারের কপে একটি প্রস্তাব করা হয়েছে। তা হলো, বিশ্বের জলবায়ু কূটনীতি যেন আলোচনাকেন্দ্রিক থেকে বাস্তবায়নকেন্দ্রিক করা যায়। এখন দেখার পালা, এই প্রস্তাব কতটা সফল হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শ্রমিকের মজুরি ৩ বছর পরপর বাড়বে
  • ৩ বছর পরপর বাড়বে মজুরি
  • কপ ঘিরে নানা দুর্বলতা, সংস্কারের আহ্বান