উৎসবমুখর পরিবেশে দেশব্যাপী ‘সোনালিকা ডে’ আয়োজন
Published: 4th, October 2025 GMT
লাঙল কিংবা কাস্তে-হাতুড়ির সময় পেরিয়ে কৃষি এখন পৌঁছে গেছে আধুনিক যুগে। বিশ্বজুড়েই কৃষিকাজে এখন ব্যবহার বেড়েছে আধুনিক যন্ত্রপাতির। বাংলাদেশের কৃষিতেও দ্রুত বাড়ছে আধুনিক কৃষিযন্ত্রের ব্যবহার, বদলে যাচ্ছে চিরচেনা দৃশ্যপট। কৃষি যান্ত্রিকীকরণের আধুনিক এই যুগে ২০০৭ সালে সোনালিকা ট্রাক্টর দিয়ে যাত্রা শুরু করে এসিআই মটরস্। বর্তমানে এসিআই মটরস্-এর ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলার দিয়ে আমাদের দেশের প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ জমি চাষ হচ্ছে। বাংলাদেশে বর্তমানে সোনালিকা ট্রাক্টরের রয়েছে ২৬ হাজারের বেশি গ্রাহক। প্রতিষ্ঠানটি দেশে সর্বাধিক বিক্রীত ট্রাক্টর ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে অন্যতম।
এই ধারাবাহিক সাফল্যের অংশ হিসেবেই গত ২২ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে উদ্যাপন করা হয় ‘সোনালিকা ডে ২০২৫’। এসিআই মটরস্-এর উদ্যোগে আয়োজিত এ বার্ষিক সেবা ও মতবিনিময় সভা কেবল রাজশাহীতেই সীমাবদ্ধ নয়। সারা দেশে মোট ৫০টি স্থানে আয়োজিত হবে এমন মতবিনিময় সভা। এ আয়োজনের মাধ্যমে প্রায় ৬ হাজার গ্রাহকের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা হবে বলে জানান আয়োজকেরা। শুধু সেবাই নয়, দিনটিকে ঘিরে গ্রাহকেরা পরিবার-পরিজন নিয়ে একত্র হওয়ার সুযোগ পান। ফলে অনুষ্ঠানটি রূপ নেয় একধরনের পারিবারিক মিলনমেলায়।
‘সোনালিকা ডে’র মতবিনিময় সভায় অংশ নেন গ্রাহক মো.
আরেকজন গ্রাহক মো. এরশাদ প্রামাণিক বলেন, ‘পারিবারিকভাবে আমি অনেক অসচ্ছল ছিলাম। সোনালিকা ট্রাক্টর কেনার আগে আমি মানুষের জন্য কাজ করতাম। ট্রাক্টর কেনার পর আমি স্বাবলম্বী হয়েছি, নিজের কর্মসংস্থানের পথ তৈরি হয়েছে। আর ট্রাক্টরে কোনো সমস্যা হলে কোম্পানিকে জানালেই সঙ্গে সঙ্গে সার্ভিস পেয়ে যাই।’
এসিআই মটরস্-এর চিফ বিজনেস অফিসার ইঞ্জিনিয়ার আসিফ উদ্দীন বলেন, ‘এ ধরনের আয়োজনের মাধ্যমে মূলত আমরা গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ করি। এতে তাঁদের সঙ্গে মতবিনিময় করার সুযোগ পাওয়া যায়। এ আয়োজন সারা দেশে গ্রাহকদের কাছে ‘‘সোনালিকা ডে’’ নামে পরিচিত। এই দিনে গ্রাহকেরা পরিবার-পরিজন নিয়ে এখানে আসেন, সবাই একসঙ্গে সময় কাটান এবং নিজেদের অভিজ্ঞতা, সুখ-দুঃখ শেয়ার করেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই সামনের কৃষি মৌসুম আসার আগেই গ্রাহকেরা যেন তাঁদের ট্রাক্টর ভালোভাবে সার্ভিস করিয়ে নিতে পারেন। এতে করে তাঁরা পুরো মৌসুম নিরবচ্ছিন্নভাবে ট্রাক্টর চালাতে পারবেন। আমি বিশ্বাস করি, এ ধরনের আয়োজন আমাদের গ্রাহকদের সঙ্গে সম্পর্ক ও বন্ধনকে আরও সুন্দর ও দৃঢ় করে তুলবে।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র হক র
এছাড়াও পড়ুন:
দিনাজপুরে মেতেছে বিজয়া দশমীর সিঁদুর খেলা
দিনাজপুরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিজয়া দশমীতে অনুষ্ঠিত হলো ঐতিহ্যবাহী সিঁদুর খেলা।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুপুর থেকে শহরের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ও প্রতিমা বিসর্জন কেন্দ্রে হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী, শিশু ও প্রবীণ সবাই অংশ নেন এই আনন্দঘন উৎসবে।
আরো পড়ুন:
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে উৎসবমুখর পরিবেশে প্রতিমা বিসর্জন
বুড়িগঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জন, সদরঘাটে ভক্তদের ঢল
শঙ্খধ্বনি, ঢাক-ঢোলের তালে প্রতিমার সামনে একে অপরের মুখে, কপালে ও গালে সিঁদুর লেপন করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন ভক্তরা। লাল রঙে রঙিন হয়ে ওঠে চারপাশ, সৃষ্টি হয় এক অনিন্দ্যসুন্দর পরিবেশ। সিঁদুর খেলাকে কেন্দ্র করে শহরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে।
দিনাজপুর শহরের বড় মণ্ডপ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে একই দৃশ্য দেখা গেছে। প্রতিমা বিসর্জনের আগে এভাবেই মা দুর্গাকে বিদায় জানান ভক্তরা।
পণ্ডিতদের মতে, বিজয়া দশমীর সিঁদুর খেলা মূলত মা দুর্গাকে বিদায়ের আগে তাকে শুভকামনা ও আশীর্বাদ জানানোর একটি প্রতীকী রীতি। বিশেষত বিবাহিত নারীরা একে অপরকে সিঁদুর পরিয়ে স্বামীর দীর্ঘায়ু ও পরিবারের মঙ্গল কামনা করেন।
দিনাজপুর শহরের রাজবাটি, কালীতলা, বড় মণ্ডপসহ বিভিন্ন পূজামণ্ডপে ছিল এই উৎসবের প্রাণবন্ত আয়োজন। ছোট-বড় সবাই লাল সিঁদুরে রঙিন হয়ে একে অপরকে আলিঙ্গন করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
শেষ বিকেলে ঢাক-ঢোলের বাদ্য, শঙ্খধ্বনি ও উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি শুরু হয়। দিনাজপুরে সিঁদুর খেলার এ উৎসব শুধু ধর্মীয় আবেগ নয়, বরং বাঙালি সংস্কৃতির প্রাণের এক রঙিন প্রকাশ।
স্থানীয় পূজারী সুবর্ণা রায় বলেন, “মা দুর্গাকে বিদায় জানাতে মন খারাপ লাগে। তবে সিঁদুর খেলা আনন্দের মধ্য দিয়ে সেই বিষাদকে কিছুটা কমিয়ে দেয়।”
অর্পিতা এক কলেজ ছাত্রী জানান, সারা বছর অপেক্ষা করি দুর্গাপূজার জন্য। আজকের দিনটা আবেগের, আবার আনন্দেরও। মা-কে বিদায় জানালেও সিঁদুর খেলায় মন ভরে যায়।
দিনাজপুর পৌর এলাকার বাসিন্দা শান্তনু চক্রবর্তী বলেন, “সিঁদুর খেলা আমাদের সংস্কৃতির অংশ। এই খেলায় আমরা শুধু আনন্দই পাই না, বরং ঐক্যের বার্তাও ছড়িয়ে যায়।”
আরেক তরুণ ভক্ত রুবেল দেবনাথ বলেন, “সিঁদুর খেলা শুধু একটি আচার নয়, এটি আমাদের মাঝে ভ্রাতৃত্ব ও আনন্দ ভাগাভাগি করার এক বিশেষ উপলক্ষ।”
ঢাকা/মোসলেম/মেহেদী