কী হবে জানি না, গাজার দিকে যাচ্ছি
Published: 4th, October 2025 GMT
আমরা এখন গাজা থেকে ৩৭০ নটিক্যাল মাইল (৬৮৫ কিলোমিটার) দূরে অবস্থান করছি। স্বাভাবিক সময় অনুযায়ী এক দিনের মধ্যে গাজা পৌঁছানোর কথা। কিন্তু আমাদের সঙ্গে আরও যে ছোট নৌযান আছে, তাদের আমরা ফেলে যেতে চাইছি না। এ কারণে আমাদের হয়তো আরেকটু সময় লাগবে।
আবহাওয়া সারাক্ষণ বদলাচ্ছে। একবার বেশ খারাপ হয়েছিল। এখন মেঘলা কিন্তু উত্তপ্ত। আমাদের একটা ড্রোন ওয়াচ আছে। সেখানে আমরা দেখি আমাদের ওপর কোনো নজরদারি হচ্ছে কি না। সবকিছু তো দেখা যায় না। সবকিছু চোখে ধরা পড়বে, তা–ও হয় না। তবে অক্টোবরের ২ তারিখের দিকে একটা নেভির জাহাজ আমাদের খুব কাছে চলে এসেছিল। আমরা পরে খোঁজ নিয়ে দেখলাম সেটা ইসরায়েলির না, তুরস্ক বা অন্য দেশের হবে।
২০১০ সালে ইসরায়েলিরা গাজা ফ্রিডম ফ্লোটিলাতে হামলা করে ১০ জনকে হত্যা করেছিল। এরপর লোকজনকে অ্যারেস্ট করেছে। নির্যাতন করেছে। এবার এতগুলো নৌযান একসঙ্গে যাওয়ার কারণে একটা বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে। আমাদের ক্ষেত্রে কী হবে, সেটা আমরা জানি না। গাজার দিকে যাচ্ছি।
আমাদের জাহাজে ৯৬ জন। এটা অনেক বড় জাহাজ। আগের এতগুলো নৌযান মিলিয়ে ৫০০–এর মতো লোক ছিল। আমাদের জাহাজ উঁচু হওয়ার কারণে ইসরায়েলি সেনাদের পক্ষে স্বাভাবিকভাবে আরোহণ করা কঠিন। আমরা চিন্তা করছি তারা হয়তো হেলিকপ্টার থেকে নামবে। অন্যদের চেয়ে আমাদের ক্ষেত্রে (আক্রমণ) ভিন্ন হতে পারে।
এর আগে যাঁদের বিশেষ করে আক্রমণ করেছে, তাঁরা স্বাস্থ্যকর্মী ও গণমাধ্যমকর্মী। তাঁদের ওপর ওদের (ইসরায়েলি) আক্রোশ বেশি এবং এখানে (কনশানস জাহাজে) প্রধানত সেই দুই ধরনের কর্মী বেশি যাচ্ছেন। স্বাভাবিকভাবে আমাদের ওপর আক্রোশটা বেশি হতে পারে।
যে বিষয়টি শুরু থেকে ছিল, তা হলো তাদের (ইসরায়েলের আরোপিত) অবরোধটা যে অবৈধ, সেটা প্রমাণ করা। যে আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথ দিয়ে আমরা যাচ্ছি, তাতে ইসরায়েলের আমাদের বাধা দেওয়ার বৈধতা ও এখতিয়ার নেই। আমরা গাজা থেকে যে খবর পেয়েছি, তারা ভীষণ আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছে আমরা যাব। এটার যে প্রতীকী ব্যাপারটা আছে, তা তো আছেই। এর বাইরে আমাদের সঙ্গে যাঁরা স্বাস্থ্যকর্মী আছেন, তাঁরা চিকিৎসা সহায়তা দেবেন। আর পেশাজীবী হিসেবে আমাদের জায়গা থেকে যেটা করার, সেটাই আমরা করব।
আমাদের আগে রওনা দিয়েছিল অন্য আটটি জাহাজ। তার বাইরে ফ্রিডম কোয়ালিশনের দুটি জাহাজ ছিল। যান্ত্রিক সমস্যা হওয়ায় তারা আসতে পারছে না। এখনো ঠিক করা গেছে কি না জানি না। যে আটটি জাহাজ আগে বেরিয়েছিল, সেগুলো আমরা গতকাল অতিক্রম করে এসেছি। এখন ওদের থেকে আমরা কতটা দূরে, তা জানি না। ২০ মাইল বা এ রকম দূরে হতে পারে। আমরা বেশি দূরে যাচ্ছি না। আমাদের জন্য একটু কঠিন। কারণ, আমাদের জাহাজটা আস্তে গেলে সমস্যা হয়। এটা ধীরে চলার জন্য তৈরি না। ওরা যে গতিতে যায়, সে গতিতে গেলে আমাদের সমস্যা। এরপরও আমরা ধীরে যাচ্ছি।
আটক হলে কে কী করবে, সেটা প্রত্যেকে নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে। কী করতে হবে, সেটা কারও ওপর আমরা চাপিয়ে দিইনি। কোন সিদ্ধান্তের ইমপ্লিকেশন (পরিণাম) কী, তা আমরা আলোচনা করেছি। আমি আমার জায়গা থেকে ডিপোর্টেশন (ফেরত পাঠানো) বিকল্প গ্রহণ করতে রাজি না। আমি অবৈধভাবে ঢুকেছি, সেটা আমি মানতে রাজি না। কাজেই আমি সেভাবে এগোব।
সব বাংলাদেশি ভাইবোনদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। তাঁরা ভীষণভাবে সমর্থন দিয়েছেন। বাংলাদেশের নারী–পুরুষের অভূতপূর্ব সমর্থনের বিষয়টি জাহাজে থাকা সবাইকে জানিয়েছি।
শহিদুল আলম, আলোকচিত্রী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দৃক
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের সঙ্গে জয়ের পর শ্রীমঙ্গলের বাড়িতে শমিত, মানুষের ভিড়, উৎসব
বাংলাদেশ জাতীয় দলে যোগ দেওয়ার পর প্রথমবারের মতো মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে পৈতৃক বাড়িতে গিয়েছেন ফুটবলার শমিত সোম। ভারতের বিরুদ্ধে ২২ বছর পর জয়ের আনন্দ নিয়ে আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে তিনি শ্রীমঙ্গলের দক্ষিণ উত্তরসুর গ্রামে পৌঁছালে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে।
পরিবারের সদস্যদের উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি কানাডায় জন্ম নেওয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই ফুটবলারকে একনজর দেখতে আশপাশের মানুষ ছুটে আসেন। শমিত সোম গাড়ি থেকে নামতেই মঙ্গলপ্রদীপ জ্বালিয়ে বরণ করে নেন পরিবারের সদস্যরা। পরে বাড়িতে প্রবেশ করেন ২৭ বছর বয়সী এই ফুটবলার।
আগে অনেকবার এসেছি। তবে জাতীয় দলে খেলার পর এটাই প্রথমবার। এবারের অনুভূতিটা একদমই আলাদা।শমিত সোম, ফুটবলার, বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলশমিত সোমের আসার খবরে কয়েক দিন ধরেই তাঁর পৈতৃক বাড়িতে উৎসবের আমেজ। স্বজনেরা সুন্দর করে ঘরবাড়ি সাজিয়েছেন। বাড়িতে তাঁর ফুটবল খেলার ছবি দিয়ে ব্যানার টানানো হয়েছে। আগে অনেকবার এসেছেন, তবে বাংলাদেশ দলে যোগ দেওয়ার পর এবারই প্রথম যাওয়া। এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার ভারতের বিপক্ষে জয় নিয়ে ফেরায় উৎসব আরও বেড়ে যায়।
শমিত সোম গাড়ি থেকে নামতেই মঙ্গলপ্রদীপ জ্বালিয়ে বরণ করে নেন পরিবারের সদস্যরা। বুধবার সকালে শ্রীমঙ্গলের দক্ষিণ উত্তরসুর গ্রামে