সরকার পতন: যুক্তরাষ্ট্রের পরের টার্গেট ভেনেজুয়েলা?
Published: 5th, October 2025 GMT
ট্রাম্প প্রশাসন কি ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার পরিকল্পনা করছে? সংক্ষিপ্ত উত্তর হলো: সম্ভবত ইচ্ছাকৃতভাবে নয়, তবে ঘটনাচক্রে এমনটা ঘটতে পারে। আর সেটাই আসল সমস্যা।
যুক্তরাষ্ট্র-ভেনেজুয়েলা সাম্প্রতিক উত্তেজনা পুরোনো সেই পরিচিত গল্পই মনে করিয়ে দিচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসন ভেনেজুয়েলার ভেতরে সক্রিয় মাদক চক্রগুলোর ওপর সামরিক হামলা করার চিন্তাভাবনা করছে। এটি প্রকারন্তরে মাদুরোকে দুর্বল করার একটি বৃহত্তর কৌশলের অংশ।
যদিও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো কোনো পদক্ষেপের অনুমোদন দেননি। মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও ভেনেজুয়েলার মধ্যে আলাপ-আলোচনা চলছে। স্পষ্ট কোনো পরিণতি নির্ধারণ না করেই চাপ বাড়ানোর কৌশল এটি।
ট্রাম্প প্রশাসন অত্যন্ত চতুরতার সঙ্গে এটিকে সরাসরি শাসন পরিবর্তনের কথা না বলে মাদক ও সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান হিসেবে উপস্থাপন করেছে।
আরও পড়ুন'যুদ্ধক্ষেত্র' ভেনেজুয়েলা: ২-০ তে পিছিয়ে ট্রাম্প ফের পুতিনের সামনে১৫ মার্চ ২০১৯যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও কট্টরনীতি বাস্তবায়নের পেছনে প্রধান চালিকা শক্তি। ভেনেজুয়েলাকে তাঁর কিউবান-আমেরিকান অভিজ্ঞতার যে প্রিজম, তা দিয়েই দেখেন। তিনি মনে করেন, মাদুরোর শাসন কিউবার গোয়েন্দা সংস্থার দ্বারা টিকে আছে, আর ভেনেজুয়েলার তেল কিউবার অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখছে। এই দৃষ্টিভঙ্গিতে মাদুরোকে অপসারণ করাই হলো ‘মহাদেশ পরিষ্কারের প্রথম ধাপ’।
কিন্তু বাস্তবতা এখানে মতাদর্শকে টক্কর দিচ্ছে। ট্রাম্প নিজে ভেনেজুয়েলায় শাসন পরিবর্তনের চেষ্টার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন, তবে তিনি ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছে বড় সামরিক শক্তি মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন। এই বৈপরীত্য কেবল কূটনৈতিক ছলনা নয়; বরং ভেনেজুয়েলা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৃত উদ্দেশ্য কি, তা নিয়েই বিভ্রান্তি তৈরি করে।
যুক্তরাষ্ট্র কি মাদুরোকে আলোচনায় বসতে চাপ দিচ্ছে? দেশটি কি আশা করছে, ভেনেজুয়েলার সেনাবাহিনীকে দিয়ে একটি অভ্যুত্থান ঘটাবে? অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে একটি জনবিদ্রোহ সৃষ্টির কথা চিন্তা করছে? নাকি এগুলোর সবই?
দুঃখজনক হলো, ট্রাম্প প্রশাসন ভেনেজুয়েলায় ঘটনাচক্রে সরকার পরিবর্তনের দিকে এগোচ্ছে। কেউই পরিষ্কারভাবে ভেনেজুয়েলার পুনর্গঠন চাইছে না। তবে বর্তমান নীতির ফল অনিবার্যভাবেই আমাদের ওপর এই দায় চাপিয়ে দিতে পারে। এটি কৌশল নয়, এটি কঠোরতার ছদ্মবেশে আসলে দায়িত্বহীনতা।ইচ্ছাকৃত হোক আর অনিচ্ছাকৃত—সরকার পরিবর্তন যে নানা সমস্যা তৈরি করে, সেটা পরবর্তী সময় দেখা যায়। ভেনেজুয়েলার পরিস্থিতি ইরাক বা লিবিয়ার মতো না হলেও একই ধরনের সমস্যা সেখানে আছে। দেশটি তেলের ওপর নির্ভরশীল আর প্রতিষ্ঠানগুলোও দুর্বল।
বিরোধী দলগুলো বিভক্ত ও নেতাদের বড় একটা অংশ নির্বাসিতও। সেনাবাহিনীর একটা অংশ মাদক পাচারের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। যেকোনো অন্তর্বর্তী সরকারকে তাৎক্ষণিক বৈধতার সংকটের কারণে অর্থনৈতিক সংকট ও সহিংসতার মুখোমুখি হতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের এবারের কৌশল হয়তো বিপরীত ফলই বয়ে আনবে। মাদুরো এখন জরুরি অবস্থা ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং সামরিক-বেসামরিক বাহিনীকে সক্রিয় করতে যাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের হুমকির বিরুদ্ধে তিনি জাতীয়তাবাদী আবেগের জাগরণ ঘটাচ্ছেন।
কোনো স্বৈরশাসককে বাইরের চাপ, যা বিদেশি আক্রমণ হিসেবে দেখানো যায়, দুর্বল করতে পারে না। আমরা এমন দৃশ্য আগে দেখেছি—কিউবা, ইরান, উত্তর কোরিয়ায়। সাধারণত এর সমাপ্তি ভালো হয় না।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নিকোলা মাদুরো.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের সঙ্গে জয়ের পর শ্রীমঙ্গলের বাড়িতে শমিত, মানুষের ভিড়, উৎসব
বাংলাদেশ জাতীয় দলে যোগ দেওয়ার পর প্রথমবারের মতো মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে পৈতৃক বাড়িতে গিয়েছেন ফুটবলার শমিত সোম। ভারতের বিরুদ্ধে ২২ বছর পর জয়ের আনন্দ নিয়ে আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে তিনি শ্রীমঙ্গলের দক্ষিণ উত্তরসুর গ্রামে পৌঁছালে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে।
পরিবারের সদস্যদের উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি কানাডায় জন্ম নেওয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই ফুটবলারকে একনজর দেখতে আশপাশের মানুষ ছুটে আসেন। শমিত সোম গাড়ি থেকে নামতেই মঙ্গলপ্রদীপ জ্বালিয়ে বরণ করে নেন পরিবারের সদস্যরা। পরে বাড়িতে প্রবেশ করেন ২৭ বছর বয়সী এই ফুটবলার।
আগে অনেকবার এসেছি। তবে জাতীয় দলে খেলার পর এটাই প্রথমবার। এবারের অনুভূতিটা একদমই আলাদা।শমিত সোম, ফুটবলার, বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলশমিত সোমের আসার খবরে কয়েক দিন ধরেই তাঁর পৈতৃক বাড়িতে উৎসবের আমেজ। স্বজনেরা সুন্দর করে ঘরবাড়ি সাজিয়েছেন। বাড়িতে তাঁর ফুটবল খেলার ছবি দিয়ে ব্যানার টানানো হয়েছে। আগে অনেকবার এসেছেন, তবে বাংলাদেশ দলে যোগ দেওয়ার পর এবারই প্রথম যাওয়া। এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার ভারতের বিপক্ষে জয় নিয়ে ফেরায় উৎসব আরও বেড়ে যায়।
শমিত সোম গাড়ি থেকে নামতেই মঙ্গলপ্রদীপ জ্বালিয়ে বরণ করে নেন পরিবারের সদস্যরা। বুধবার সকালে শ্রীমঙ্গলের দক্ষিণ উত্তরসুর গ্রামে