দুর্গাপূজার ছুটিতে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় বিদ্যালয়ের দুটি মেহগনি গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক মজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে।

শনিবার (৪ অক্টোবর) উপজেলার ফারাকপুর হাজী আফসার উদ্দিন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের আঙিনার ওই গাছ দুটি কাটা হয়।

আরো পড়ুন:

প্রভাবশালী চাল ব্যবসায়ী কুষ্টিয়ার রশিদ ফের গ্রেপ্তার

এনসিপির কুষ্টিয়া জেলা সমন্বয় কমিটি অনুমোদন

বিদ্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কোনো সভা বা নিলাম ছাড়াই গোপনে প্রায় ২ লাখ টাকায় গাছ দুইটি মেহগনি গাছ বিক্রি করেছেন হাজী আফসার উদ্দিন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মজিবুর রহমান। এর আগেও তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের সম্পদ গোপনে বিক্রিরও অভিযোগ রয়েছে।

এতে এলাকাবাসী অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের অভিযোগ, গাছ কেটে বিক্রির ঘটনায় বিদ্যালয়ের সৌন্দর্য্য ও পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসনের কাছে তদন্ত  সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মজিবুর রহমান বলেন, “টেন্ডার ছাড়াই গাছ কাটা হয়েছে, এটা ঠিক। তবে টাকাগুলো বিদ্যালয়ের উন্নয়নে ব্যয় হবে। এ নিয়ে প্রশ্ন করার কিছু নেই।”

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, “গাছ কাটার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। এই নিয়ে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বললে ভালো হয়।”

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.

ফারুক আহমেদ বলেন, “ঘটনা সত্য হলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

উপজেলা বন কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, “টেন্ডার ছাড়াই গাছ কাটার নিয়ম নেই। এ নিয়ে আমরা অবশ্যই প্রধান শিক্ষকের কাছে জবাব চাইব।”

ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, “বিধিবহির্ভূত কোনো কাজের সুযোগ নেই। ঘটনা তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/কাঞ্চন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ উপজ ল ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

নীলফামারীতে বিপৎসীমার ওপরে তিস্তার পানি, রেড অ্যালার্ট

ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে নীলফামারী জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদীর পানি আবারও বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

রোববার সকাল ছয়টায় লালমনিরহাট জেলার দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। ১২ ঘণ্টার ব্যবধানের সন্ধ্যা ছয়টায় সেখানে ৮৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

ওই পয়েন্টে তিস্তা নদীর বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ মিটার। সকাল ৬টায় প্রবাহিত হচ্ছিল ৫১ দশমিক ৪৩ মিটার দিয়ে। সন্ধ্যা ছয়টায় সেখানে প্রবাহিত হচ্ছিল ৫২ দশমিক ২৮ মিটার দিয়ে। তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তার ডান তীরের বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেখানে বাশের পাইলিং করে বালির বস্তা নিক্ষেপ করছে পাউবো।

তিস্তার তীরবর্তী ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, খালিশাচাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম এবং চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বাড়িঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে।

ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ খান জানান, রোববার দুপুরের পর থেকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে, যা অব্যাহত আছে। তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ইউনিয়নের ঝাড় সিংহেরস্বর ও পূর্ব ছাতনাই গ্রামের বোল্ডারের চর, খোকার চর, খাড়াপাড়া, ফ্লাটপাড়াসহ তিস্তাপারের বিভিন্ন চরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বাড়িঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে। টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, দুপুরের পর থেকে তিস্তা নদীর পানি দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিস্তীর্ণ এলাকার রোপা আমন খেত তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন বাড়িঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সূত্রমতে, রোববার সকাল ছয়টায় লালমনিরহাট জেলার দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি ৫১ দশমিক ৪৩ মিটার, সকাল ৯টায় ৫১ দশমিক ৪৮ মিটার, দুপুর ১২টায় ৫২ মিটার, বেলা তিনটায় ৫২ দশমিক ১৪ মিটার এবং সন্ধ্যা ৬টায় ৫২ দশমিক দশমিক ২৮ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল তিস্তা নদীর পানি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। রোববার সকাল ছয়টায় বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও সন্ধ্যা ৬টায় ৮৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তিস্তা নদীর জিরো পয়েন্টের কাছাকাছি কালীগঞ্জ নামের স্থানে তিস্তার ডান তীরের প্রধান বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেটির মেরামতকাজ চলছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সব কটি (৪৪ টি) জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। তিনি জানান, তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করে সন্ধ্যায় মাইকিং করা হয়েছে। রাত ৮টার দিকে পানি বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ