দুই নারী আনসারের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান প্রশিক্ষকের
Published: 5th, October 2025 GMT
খুলনার দিঘলিয়া উপজেলা আনসার প্রশিক্ষক মো. মিলন মিয়ার বিরুদ্ধে দুই নারী সদস্যকে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় নেশাখোর অপবাদ দিয়ে তাদের দুর্গাপূজার দায়িত্ব থেকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এসব ঘটনায় উপজেলা আনসার কমান্ডার বরাবর ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
আরো পড়ুন:
দুর্গাপূজার ছুটিতে বিদ্যালয়ের গাছ বিক্রির অভিযোগ
সিলেটে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ
নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন দিঘলিয়া উপজেলা আনসার প্রশিক্ষক মিলন মিয়া। তিনি জানান, দুর্গপূজার দায়িত্বে না দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
প্রথম অভিযোগকারী নারীর দেওয়া অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত চার বছর ধরে বিভিন্ন সময় ফোনে বা দেখা হলে অনৈতিক প্রস্তাব দেন উপজেলা আনসার প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মিলন। এমনকি তার সঙ্গে একান্ত সময় দিতে বলেন তিনি। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সদ্য সমাপ্ত দুর্গাপূজায় আনসার ডিউটিতে ১৬ সেপ্টেম্বর যাচাই-বাচাইতে কাগজপত্র সঠিক থাকার পরও নেশাখোর অপবাদ দিয়ে তাকে বাদ দেওয়া হয়। যদিও পরে অন্য একটি গ্রুপে তাকে দুর্গাপূজার ডিউটিতে নেওয়া হয়।
লিখিত অভিযোগে আরো এক নারী আনসার সদস্য উল্লেখ করেন, তিনি দরিদ্র অবস্থায় জীবনযাপন করছেন। দুর্গাপূজার ডিউটিতে লোক নিয়োগ হচ্ছে জানতে পেরে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর ডিউটি পাওয়ার জন্য উপজেলা আনসার অফিসে যান। সেখানে উপজেলা আনসার প্রশিক্ষক মিলনের সঙ্গে তার কথা হয়। মিলন দুর্গাপূজায় ডিউটি দেবেন বলে আশ্বস্ত করেন। এক কপি ছবি, এক কপি ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি ও মোবাইল নম্বর দিয়ে যেতে বলেন তিনি।
লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, “গত ১৯ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা ১৯ মিনিটে মিলন স্যার আমাকে ফোন করে বলেন, পূজার ডিউটিতে বিনা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লোক নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবুও তুমি যদি ডিউটির পূর্বে একান্তে আমার সঙ্গে নির্জনে সারাদিন কাটাতে পার, তাহলে আমি ডিউটির ব্যবস্থা করে দেব। এই কথা অন্য কাউকে জানাতে পারবা না।”
গাজীরহাট ইউনিয়ন আনসার কমান্ডার খায়রুল বলেন, “অভিযোগকারী আমার এলাকার মেয়ে। তিনি নেশার সঙ্গে জড়িত না। যাচাই-বাছাইয়ের দিন উপজেলা আনসার প্রশিক্ষক মিলন তাকে সবার সামনে নেশাখোর বলে অপবাদ দিয়ে আনসার ডিউটি থেকে বাদ দেন। পরে তাকে আমার গ্রুপে ডিউটিতে নেই।”
ভুক্তভোগী বলেন, “আনসার সদস্য প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর থেকে আমাকে মিলন স্যার যখন দেখা হয় তখন ও মোবাইলে বিভিন্ন অশ্লীল কথা বলেন। এমনকি আমাকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন। তার কথায় রাজি না হওয়ায় দুর্গাপূজা ডিউটি থেকে আমাকে নেশাখোর বলে বাদ দেন। আমি সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানাই।”
দিঘলিয়া উপজেলা আনসার-ভিডিপি কর্মকর্তা শামসুনাহার খানম বলেন, “গত ১৬ সেপ্টম্বর দুর্গাপূজার আনসার ডিউটির যাচাই-বাচাইয়ের দিন একটা মেয়েকে মিলন নেশাখোর বলছিলেন আমি শুনেছি। এ ঘটনা আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। অভিযোগকারীকে ডেকে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
খুলনা জেলা আনসার কমান্ড্যান্ট মো.
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ প রস ত ব র ড উট ত সদস য উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
‘উপদেষ্টাদের অনেকেই সেইফ এক্সিটের কথা ভাবতেছে’, নাহিদ ইসলামের এই বক্তব্য নিয়ে আলোচনা
‘উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছে, তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের (নিরাপদ প্রস্থান) কথা ভাবতেছে’—সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তাঁর এই বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নানা আলোচনা–সমালোচনা চলছে।
বিভিন্ন ফেসবুক পেজ ও অ্যাকাউন্ট থেকে নাহিদ ইসলামের এই বক্তব্যের ভিডিও ও ফটোকার্ড পোস্ট করা হয়েছে। এসব পোস্টে পক্ষে–বিপক্ষে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় একাত্তর টেলিভিশনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ–সংক্রান্ত যে ফটোকার্ড পোস্ট করা হয়েছে, সেখানে আজ রোববার রাত ৯টা পর্যন্ত ১২ হাজার ব্যবহারকারী প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আর ১ হাজার ৪০০টি মন্তব্য করা হয়েছে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের এক দফা ঘোষণা করেছিলেন সে সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলে ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি উপদেষ্টা হয়েছিলেন। তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হয়েছিলেন তিনি। গত ফেব্রুয়ারিতে সরকার থেকে পদত্যাগ করে এনসিপির আহ্বায়কের দায়িত্ব নেন নাহিদ। অবশ্য ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে যোগ দেওয়া মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এখনো উপদেষ্টা রয়েছেন।
টেলিভিশন চ্যানেল একাত্তরকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, তাঁরা কেউ সরকারের উপদেষ্টা পদে যেতে চাননি। তাঁরা জাতীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছিলেন। সেটা হলে ছাত্রদের দায়িত্ব নিতে হতো না। রাজনৈতিক শক্তি বা অভ্যুত্থানের শক্তি সরকারে না থাকলে অন্তর্বর্তী সরকার তিন মাসও টিকত না। প্রথম ছয় মাস সরকারকে উৎখাত করা বা প্রতিবিপ্লব করার নানা ধরনের চেষ্টা চলমান ছিল। এটা এখনো মাঝেমধ্যে আছে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের নেতাদের এবং যাঁরা উপদেষ্টা হয়েছেন, তাঁদের অনেককে বিশ্বাস করাটা আমাদের অবশ্যই ভুল হয়েছিল। আমাদের উচিত ছিল ছাত্র নেতৃত্বকেই শক্তিশালী করা, সরকারে গেলে সম্মিলিতভাবে যাওয়া। নাগরিক সমাজ বা রাজনৈতিক দলকে আমরা যে বিশ্বাসটা করেছিলাম, যে আস্থা রেখেছিলাম, সেই জায়গায় আসলে আমরা প্রতারিত হয়েছি। অনেক উপদেষ্টা নিজেদের আখের গুছিয়েছে অথবা গণ–অভ্যুত্থানের সঙ্গে বিট্রে (প্রতারণা) করেছে। যখন সময় আসবে, তখন আমরা এদের নামও উন্মুক্ত করব।’
সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম আরও বলেছেন, ‘উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে লিয়াজোঁ করে ফেলেছে। তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের কথা ভাবতেছে। এটা আমাদের অনেক পোহাতে হচ্ছে এবং পোহাতে হবে। কিন্তু তারা যদি এটা বিশ্বাস করত যে তাদের নিয়োগকর্তা ছিল গণ–অভ্যুত্থানের শক্তি, রাজপথে নেমে জীবন দেওয়া ও আহত সাধারণ মানুষজন এবং তারা যদি তাদের ওপর ভরসা করত, তাহলে উপদেষ্টাদের এই বিচ্যুতি হতো না।’
এসব বক্তব্যের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আজ রোববার রাতে মুঠোফোনে নাহিদ ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল প্রথম আলো। তবে তিনি সাড়া দেননি।