কুড়িগ্রামে ভেসে এল মৃত গন্ডার, হাড়গোড় যাবে জাদুঘরে
Published: 8th, October 2025 GMT
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দুধকুমার নদে একটি মৃত গন্ডার ভেসে এসেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে ভারতের কোনো বন্য প্রাণী সংরক্ষণ এলাকা থেকে ভেসে এসেছে এটি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কয়েক দিনে ভারতের বিভিন্ন এলাকায় প্রবল বন্যা দেখা দিয়েছে। পাহাড়ধস ও বনাঞ্চল প্লাবিত হয়ে দুধকুমার নদ দিয়ে কাঠের গুঁড়ি, মৃত গরু, সাপ, মাছসহ নানা প্রাণী ভেসে আসছে। গত সোমবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় দুধকুমার নদের স্রোতে গন্ডারটিকে মৃত অবস্থায় প্রথমবার ভাসতে দেখা যায়। পরে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার তিলাই ইউনিয়নের দক্ষিণছাট গোপালপুর গ্রামের চরে আটকে পড়ে প্রাণীটির দেহ।
আরও পড়ুন‘পুষ্পা’ সিনেমার মতো কুড়িগ্রামে ভেসে এল কাঠ, ‘লাল চন্দন’ ভেবে কাড়াকাড়ি৬ ঘণ্টা আগেমঞ্জুরুল ইসলাম নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, উজানের ঢলে কালজানি ও দুধকুমার নদে শত শত গাছের গুঁড়ি ও কাঠ ভেসে এসেছে। এর সঙ্গে ওই মৃত গন্ডার ভেসে আসে।
খবর পেয়ে আজ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান তিলাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো.
ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘গতকাল এলাকাবাসী মৃত দেহটি দেখতে পেয়ে আমাকে খবর দিলে আমি বন বিভাগকে জানাই। আজ বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তাসহ যমুনা সেতু আঞ্চলিক জাদুঘরের কিউরেটর সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।’
কুড়িগ্রাম বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা সাদিকুর রহমান বলেন, গন্ডারটি খুব বড় ও ভারী হওয়ায় সরানো সম্ভব হয়নি। তাই মাটিতে গর্ত করে সেখানেই পুঁতে ফেলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জাদুঘরের লোকজন এর হাড়গোড় সংগ্রহ করবেন।
যমুনা সেতু আঞ্চলিক জাদুঘরের কিউরেটর জুয়েল রানা বলেন, গন্ডারটির দেহ পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। দুই মাস পর পচনপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে হাড়গোড় সংগ্রহ করে জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হবে। এগুলো শিক্ষা ও গবেষণার কাজে ব্যবহৃত হবে।
আরও পড়ুনতিস্তার পানি কুড়িগ্রামে বিপৎসীমার ওপরে, লালমনিরহাটে নিচে০৬ অক্টোবর ২০২৫উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হাতিয়ায় বিএনপির প্রার্থী ও প্রতিপক্ষের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ
নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে বিএনপি নেতা ফজলুল আজিমের সমর্থকদের সঙ্গে দলীয় সংসদ সদস্য প্রার্থী মাহাবুবের রহমান শামীমের সমর্থকদের পাল্টাপাল্টি হামলা, ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত হাতিয়ার ওছখালিতে এ ঘটনা ঘটে। হামলা চলাকালে বেশ কিছু বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। হামলা ভাঙচুরের শিকার হয়েছে একটি আবাসিক হোটেল ও একটি রিসোর্টের কাচ ভাঙচুর করা হয়। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, আজ সন্ধ্যায় সাবেক সংসদ সদস্য ফজলুল আজিমকে প্রার্থী করার দাবিতে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী মশালমিছিল বের করেন তাঁর সমর্থকেরা। একই সময় মাহবুবের রহমান শামীমের সমর্থকেরাও মিছিল বের করেন। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ মুখোমুখি হলে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়।
পাল্টাপাল্টি হামলা ও ধাওয়া চলাকালে বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। আজিমের সমর্থকেরা ওছখালী বাজার নিজেদের দখলে নিয়ে মশাল হাতে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় তাঁরা রাস্তায় আগুন জ্বালান ও শামীমের ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলেন। পাল্টাপাল্টি হামলা চলার সময় একটি আবাসিক হোটেল ও একটি রিসোর্টের কাচ ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে হাতিয়া থানা-পুলিশ ও নৌ পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। তবে বর্তমানে ওছখালি বাজারে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
ফজলুল আজিমের সমর্থক হাতিয়া পৌরসভা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন বলেন, তাঁরা ওছখালি বাজারে ফজলুল আজিমের সমর্থনে শান্তিপূর্ণভাবে মশালমিছিল বের করেন। এ সময় শামীমের লোকজন হামলা চালান। এতে তাঁদের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হন। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেন মাহবুবের রহমান শামীমের নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা হাতিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক লুৎফুল্লাহিল মজিদ। তিনি বলেন, দুপুরের পর থেকে তাঁরা বিএনপির দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা ও গণসংযোগ করছিলেন। সন্ধ্যায় তাঁদের লোকজন ওছখালি জিরোপয়েন্টে এলে ফজলুল আজিমের লোকজন উসকানিমূলক স্লোগান দিয়ে হামলা চালান। তাঁরা একটি হোটেল ও রিসোর্ট ভাঙচুর করেন এবং কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন দেন। এতে তাঁদের কয়েকজন আহত হন।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আজমল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, ফজলুল আজিমের লোকজন আগে থেকে বিএনপির প্রার্থিতা পরিবর্তনের দাবিতে মশালমিছিল বের করার জন্য প্রচারণা চালিয়ে আসছেন। এরই মধ্যে দলীয় প্রার্থী মাহবুবের রহমান শামীমের সমর্থকেরাও ফেসবুকে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। আজ সন্ধ্যায় ফজলুল আজিমের অনুসারীরা তাঁর বাসভবন থেকে মশালমিছিল নিয়ে ওছখালির দিকে রওনা হন। একই সময় শামীমের অনুসারীরাও ধানের শীষের পক্ষে মিছিল বের করেন। একপর্যায়ে দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া ও হামলার ঘটনা ঘটে। এতে দুই পক্ষের পাঁচ-সাতজন আহত হয়েছেন। পুলিশ ও নৌবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।