ঢাকায় যুবদল নেতা হত্যার ঘটনায় আটক ব্যক্তির ডিবি হেফাজতে মৃত্যু
Published: 21st, November 2025 GMT
রাজধানীর পল্লবীতে যুবদল নেতা গোলাম কিবরিয়া হত্যার ঘটনায় আটক মো. মোক্তার হোসেন (৪০) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) হেফাজতে মারা গেছেন।
মোক্তারের মারা যাওয়ার তথ্য আজ শুক্রবার নিশ্চিত করেছে ডিএমপি। তারা এই ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছে।
কিবরিয়া (৪৭) ছিলেন পল্লবী থানা যুবদলের সদস্যসচিব। পাশাপাশি তিনি চিকিৎসা সরঞ্জাম কিনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিক্রি করতেন। গত সোমবার সন্ধ্যায় মুখোশধারী তিন সন্ত্রাসী মিরপুর ১২ নম্বরের একটি দোকানে ঢুকে খুব কাছ থেকে তাঁকে গুলি করে হত্যা করেন।
আজ বেলা ১টার পর ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমানের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত সোমবার সন্ধ্যায় মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের বি ব্লকের বিক্রমপুর হার্ডওয়্যার অ্যান্ড স্যানিটারি নামের দোকানে ঢুকে মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে যুবদল নেতা কিবরিয়াকে হত্যা করে। এই ঘটনায় তাঁর স্ত্রী সাবিহা আক্তার বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। অজ্ঞাতনামা আসামি ৭-৮ জন। সুষ্ঠু তদন্তসহ জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে মামলাটি ডিএমপির ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ডিবি গতকাল বৃহস্পতিবার শরীয়তপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত নজরুল, মাসুম ও জামানকে গ্রেপ্তার করে।
আরও পড়ুনবিদেশে বসে যুবদল নেতা কিবরিয়াকে হত্যার নির্দেশ, খুন করে ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা১৮ নভেম্বর ২০২৫ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেন। কিবরিয়া হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র-গুলি মোক্তারের হেফাজতে আছে বলে জানান তাঁরা। তাঁদের তথ্যের ভিত্তিতে ডিবির একটি দল গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পল্লবীর একটি গ্যারেজে অভিযান চালায়। ডিবির উপস্থিতি টের পেয়ে মোক্তার দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় কৌশলে তাঁকে আটক করা হয়। এ সময় উত্তেজিত জনতা মোক্তারকে মারধর করেন।
ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মোক্তারের তথ্যের ভিত্তিতে পল্লবীর একটি রিকশা গ্যারেজ থেকে পিস্তলের আটটি গুলি উদ্ধার করে ডিবি। পরে মোক্তারকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। গতকাল দিবাগত রাত দেড়টার দিকে মোক্তার অসুস্থবোধ করেন। তাঁকে তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে কিছু ওষুধ দিয়ে তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেন। তাঁকে আবার ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়।
আরও পড়ুনপল্লবীতে যুবদল নেতা কিবরিয়া হত্যা মামলায় দুই আসামি রিমান্ডে২০ ঘণ্টা আগেডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ সকাল ১০টার দিকে খাবার খাওয়ার জন্য মোক্তারকে ডাকাডাকি করা হয়। কোনো সাড়াশব্দ না পাওয়ায় পুলিশ সদস্যরা দ্রুত তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ময়নাতদন্তের জন্য মোক্তারের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানায় ডিএমপি।
এ ঘটনায় ডিএমপির পক্ষ তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এতে বলা হয়, এই তদন্ত কমিটির প্রধান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন) মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য বদল ন ত ক বর য় হত য র ঘটন য় র একট সদস য তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
ছুটির দিনে মাংস খাওয়া হলো না বাবা–ছেলের, মর্গে মিলল লাশ
সকালে ছেলে মেহরাব হোসেন রিমনকে (১২) নিয়ে মাংস কিনতে বেরিয়েছিলেন আবদুর রহিম (৪৮)। ভূমিকম্পের পর রহিমের খোঁজ নিতে গিয়ে দেখেন, তাঁদের দুজনেরই মুঠোফোন বন্ধ। পরে সন্দেহ হওয়ায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে গিয়ে বাবা–ছেলের লাশ শনাক্ত করেছেন পরিবারের সদস্যরা।
আজ শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটের সময় রাজধানীর পুরান ঢাকার বংশালের কসাইটুলীতে একটি ভবনের নিচতলায় নয়নের মাংসের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁরা। হঠাৎ ভূমিকম্প শুরু হয়। তীব্র ঝাঁকুনিতে দোকানের সামনে থাকা ক্রেতাদের ওপর ভবনের ছাদের রেলিং ভেঙে পড়ে। এ ঘটনায় বাবা-ছেলেসহ তিনজন নিহত হন।
নিহত আরেকজন হলেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাফিউল ইসলাম রাফি। গুরুতরভাবে আহত হন রাফিউলের মা নুসরাত। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নিহত আবদুর রহিম বিক্রমপুর গার্ডেন সিটিতে ফেব্রিকসের ব্যবসা করতেন। তাঁর তিন ছেলে ও এক মেয়ে। ছোট ছেলে মেহরাবকে নিয়ে রাজধানীর সুরিটলা স্কুলের পেছনে ভাড়া বাসায় থাকতেন। তাঁদের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রকোনায়।
আজ বেলা দুপুর আড়াইটার দিকে মর্গে গিয়ে দুজনের লাশ শনাক্ত করেন নিহত আবদুর রহিমের ছোট ভাই মো. নাছির ও মো. মোস্তফা।
ভাই ও ভাতিজার লাশ দেখে মর্গের সামনে আর্তনাদ করে ওঠেন নাছির। কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমরা ভাই খুব ভালো মানুষ। দুই বছর আগে হজ করে আসছে। ও আমার ভাই, আমার ভাইকে যেন আল্লাহ জান্নাতবাসী করেন।’
আরও পড়ুনমায়ের সঙ্গে মাংস কিনতে গিয়েছিলেন, আর ফিরলেন না রাফিউল৫৭ মিনিট আগেনাছির আরও বলেন, দুপুরে জুমার নামাজের পর মা ফোন করে বলেন, তাঁর ভাই ও ভাতিজা সকালে মাংস কিনতে বের হয়েছিলেন। ভূমিকম্পের পর থেকে তাঁদের ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। পরে তাঁরা মর্গে খুঁজতে গিয়ে ভাই ও ভাতিজার লাশ শনাক্ত করেন।
আজ সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে এই ভূমিকম্প হয়। বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির তীব্রতা ছিল ৫ দশমিক ৭। উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর মাধবদী। ভূমিকম্পটিকে মাঝারি মাত্রার বলছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আরও পড়ুনভূমিকম্পে পুরান ঢাকায় তিনজন নিহত, তিন জেলায় আহত অর্ধশতাধিক৩ ঘণ্টা আগে