গাজাগামী নৌবহর থেকে আটক শহিদুল আলমের ভিডিও বার্তাটি প্রি-রেকর্ডেড, মোটেও সাজানো নয় বলে জানিয়েছে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) ফ্যাক্ট চেক ও মিডিয়া রিসার্চ টিম বাংলাফ্যাক্ট।

বুধবার (৮ অক্টোবর) বাংলাফ্যাক্ট জানায়, ‘গাজাগামী ফ্লোটিলা থেকে আটক শহিদুল আলমের ভিডিও বার্তাটি প্রি-রেকর্ডেড, মোটেও সাজানো নয়। গাজাগামী ফ্লোটিলায় অংশ নেওয়া বাংলাদেশি আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের ফেসবুক পেজে বুধবার বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা ১৭ মিনিটে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। ভিডিওতে শহিদুল আলমকে বলতে শোনা যায়, “যদি আপনারা এই ভিডিওটি দেখে থাকেন, তাহলে বুঝবেন আমাদেরকে ইসরাইলি দখলদার বাহিনী আটক ও অপহরণ করেছে।”

আরো পড়ুন:

ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনির বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ

মিসরে গাজা শান্তি আলোচনায় যোগ দিচ্ছেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত ও জামাতা

বাংলাফ্যাক্ট জানায়, ভিডিওটি ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। শেখ হাসিনার সাবেক উপ-প্রেস সচিব মো.

আশরাফুল আলম খোকন ভিডিওটির একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করে ব্যঙ্গ করে প্রশ্ন তোলেন, আটক করা হলে শহিদুল আলম কীভাবে ভিডিও রেকর্ড করে পোস্ট দিলেন? একই ধরনের মন্তব্য আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ একাধিক ফেসবুক পেজ থেকেও ছড়ানো হচ্ছে।

বাংলাফ্যাক্ট অনুসন্ধান টিম জানায়, কনশানস জাহাজের যাত্রীরা যে ইসরাইলি বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন, তা আলজাজিরা, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস, বিবিসি ও টাইমস অব ইসরাইল-এর প্রতিবেদনে নিশ্চিত করা হয়েছে। গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা ও ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ উভয়পক্ষ থেকেই এই আটকের তথ্য প্রকাশ করা হয়।

আলোচিত ভিডিওতে শহিদুল আলমকে বলতে শোনা যায়, “যদি আপনারা এই ভিডিওটি দেখে থাকেন...”। স্পষ্টত এটি আগে থেকে রেকর্ডিং করা ভিডিও। ফ্লোটিলায় অংশ নেওয়া যাত্রীরা এমন ভিডিও আগে থেকেই প্রস্তুত রাখেন, যাতে আটক হওয়ার পর সেগুলো প্রকাশ করা যায়। চলতি বছরের জুনে Freedom Flotilla Coalition–Gi ‘Madleen’ জাহাজে অংশ নেওয়া কর্মীরা আটক হওয়ার পর তাদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকেও অনুরূপ প্রি-রেকর্ডেড ভিডিও বার্তা প্রকাশ হয়েছিল।

বাংলাফ্যাক্ট জানায়, আলোচিত ভিডিওটি পোস্ট করার প্রায় দুই ঘণ্টা পূর্বে শহীদুল আলম Israelis approaching conscience লিখে ১মিনিট ১৫ সেকেন্ডের আরেকটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন। ইসরাইলি বাহিনী যে তাদের দিকে এগিয়ে আসছিল, এই ব্যাপারে তারা নিশ্চিত ছিলেন। শহিদুল আলমের ফেসবুক পেজে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে, তিনি মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত তার ফেসবুক পেজটি Bangladesh Stands With Palestine এবং Free Shahidul অ্যাক্টিভিস্টরা পরিচালনা করবেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের নিপীড়ন ও দমননীতির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে সোচ্চার থাকায় শহিদুল আলমকে ঘিরে পরিকল্পিতভাবে অপতথ্য ও বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে বলে শনাক্ত করেছে বাংলাফ্যাক্ট।

ঢাকা/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ সব ক প জ র কর ড ড

এছাড়াও পড়ুন:

গাজা অভিমুখী ফ্লোটিলা থেকে শহিদুলকে অপহরণের প্রতিবাদে জবিতে বিক্ষোভ

ইসরায়েলি অবরোধ ভাঙতে মানবিক সহায়তা নিয়ে ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখী ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র একটি নৌযান থেকে বাংলাদেশি আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলমকে অপহরণ করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।

আজ বুধবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাত্তরের গণহত্যা ভাস্কর্য চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি প্রশাসনিক ভবন এলাকা, কাঁঠালতলা, মুক্তমঞ্চ, বিজ্ঞান অনুষদ চত্বরসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে অবস্থিত বাহাদুর শাহ পার্কসংলগ্ন ‘বিশ্বজিৎ চত্বর’-এর সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘মুক্তি মুক্তি চাই, শহিদুল আলমের মুক্তি চাই’; ‘ফ্রম দ্য রিভার টু দ্য সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’; ‘ফিলিস্তিনে মানুষ মরে, জাতিসংঘ কী করে’; ‘স্বপ্ন দেখি প্রতিদিন, স্বাধীন হবে ফিলিস্তিন’ এবং ‘ফিলিস্তিনে গণহত্যা, বন্ধ কর করতে হবে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।

এর আগে আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সোয়া ১০টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় শহিদুল আলম বলেন, তাঁদের বহনকারী গাজা অভিমুখী জাহাজটি মাঝসমুদ্রে আটকে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। তিনি অপহরণের শিকার হয়েছেন।

শহিদুল আলম কনশেনস নামের যে জাহাজে আছেন, তা আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) ও থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা (টিএমটিজি) নৌবহরের একটি জাহাজ। আন্তর্জাতিক সাংবাদিক ও চিকিৎসাকর্মীবাহী এই জাহাজ ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধ ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গাজা অভিমুখে রওনা হয়েছিল।

বিক্ষোভে অংশ নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলিম বলেন, গাজা অভিমুখী ত্রাণবহর সুমুদ ফ্লোটিলায় ইসরায়েলি বর্বর হামলা হয়েছে। বহরে থাকা অধিকারকর্মীদের আটক করা হয়েছে। শহিদুল আলম নিজে বলেছেন তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা সেখানে আটককৃত সকল মানবাধিকারকর্মীর অবিলম্বে মুক্তি চাই।’

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ফয়সাল মুরাদ বলেন, ফিলিস্তিনে কয়েক দশক ধরে বর্বর গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গণহত্যা চালিয়েও তারা ক্ষান্ত হয়নি, তারা গাজায় সব ধরনের খাবার-ওষুধ বন্ধ করে দিয়েছে। এই অবরোধ ভাঙতে সারা পৃথিবীর মানবাধিকারকর্মীরা অর্ধশত নৌযান নিয়ে রওনা হয়েছিলেন। কিন্তু একেক করে সবাইকে আটক করেছে ইসরায়েল।

শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ফয়সাল মুরাদ বলেন, শহিদুল আলমকে মুক্ত করে আনতে অন্তর্বর্তী সরকারের যা যা করার, তা করতে হবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি ইভান তাহসীভ বলেন, ‘গাজাগামী সুমুদ ফ্লোটিলায় শহিদুল আলমের এই যাত্রা সারা বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করে। আমরা জানলাম তাকে অপহরণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আমাদের পুরো জাতিকে অপমান করা হয়েছে। শহিদুল আলমকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানাই।’

আরও পড়ুনইসরায়েলি বাহিনী আমাদের আটকে দিয়েছে, আমাকে অপহরণ করেছে: শহিদুল আলম৭ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শহিদুল আলমের মুক্তির দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
  • শহিদুল আলমকে নিরাপদে দেশে ফেরাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আহ্বান
  • গাজা অভিমুখী ফ্লোটিলা থেকে শহিদুলকে অপহরণের প্রতিবাদে জবিতে বিক্ষোভ