শহিদুল আলমসহ ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটককৃতদের মুক্তির দাবি এইচআরএফবির
Published: 9th, October 2025 GMT
ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক বাংলাদেশি আলোকচিত্রী শহিদুল আলমসহ বিভিন্ন দেশের মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিকদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি)। আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে মানবাধিকার সংস্থাটি এই দাবি জানায়।
গতকাল বুধবার বাংলাদেশ সময় সকাল সোয়া ১০টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় আলোকচিত্রী শহিদুল আলম তিনিসহ বহরে থাকা ব্যক্তিদের আটকে দেওয়ার খবর জানান। শহিদুল আলম বলেন, তাঁদের বহনকারী গাজা অভিমুখী জাহাজটি মাঝসমুদ্রে আটকে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। তিনি অপহরণের শিকার হয়েছেন।
শহিদুল আলম কনশেনস নামের যে জাহাজে আছেন, তা আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) ও থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা (টিএমটিজি) নৌবহরের একটি জাহাজ। আন্তর্জাতিক সাংবাদিক ও চিকিৎসাকর্মীবাহী এই জাহাজ ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধ ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গাজা অভিমুখে রওনা হয়েছিল।
এইচআরএফবির বিবৃতিতে বলা হয়, তারা মনে করে গাজায় চলমান মানবিক সংকট মোকাবিলায় সহায়তা ও সহমর্মিতা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে যাত্রারত মানবাধিকারকর্মীদের আটক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও মানবিক আচরণের পরিপন্থী। এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও মানবিক সহায়তার মৌলিক অধিকারের ওপরও সরাসরি আঘাত।
আরও পড়ুনশহিদুল আলমকে নিরাপদে দেশে ফেরাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আহ্বান২০ ঘণ্টা আগেবিবৃতিতে শহিদুল আলমের নিরাপদ মুক্তির জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে কূটনৈতিক উদ্যোগ নিতে আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে ফ্রিডম ফ্লোটিলা অভিযানে অংশ নেওয়া সব মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক, চিকিৎসক, জাহাজের ক্যাপ্টেন ও স্টাফদের অবিলম্বে মুক্তির জন্যও যাতে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি সে আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন এইচআরএফবির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) চেয়ারপারসন জেড আই খান পান্না, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, ব্লাস্ট-এর নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভানেত্রী ফওজিয়া মোসলেম, নারীপক্ষের সভানেত্রী গীতা দাস, এইচআরএফবির বিশেষজ্ঞ হামিদা হোসেন, চাকমা সার্কেল প্রধান রাজা দেবাশীষ রায়, আইনজীবী সুলতানা কামাল, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, স্টেপস–এর নির্বাহী পরিচালক রঞ্জন কর্মকার।
বিবৃতিদাতাদের মধ্যে আরও রয়েছেন বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক সালেহ আহমেদ, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্মস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, অ্যাসিড সারভাইভার্স ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সরদার জাহাঙ্গীর হোসেন, বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শিপন কুমার রবিদাস, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ, ফেয়ার–এর নির্বাহী পরিচালক দেওয়ান জামান, এইচআরএফবির সদস্য খুশী কবির, পল্লব চাকমা, রোকেয়া রফিক বেবী, আবদুস সাত্তার দুলাল এবং আশরাফুন্নাহার মিষ্টি।
আরও পড়ুনইসরায়েলি বাহিনী আমাদের আটকে দিয়েছে, আমাকে অপহরণ করেছে: শহিদুল আলম০৮ অক্টোবর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এইচআরএফব র ম নব ধ ক র ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে চার জেলে অপহৃত, মুক্তিপণ দিয়ে বাড়ি ফিরেছেন একজন
সুন্দরবনের লোনাজলে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে চার জেলে অপহরণের স্বীকার হয়েছেন। তাঁদের ছাড়তে মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে বনদস্যুরা। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা রেঞ্জের আঠারবেকি এলাকার একটি খালে কাকড়া ধরার সময় তাঁদের অপহরণ করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, দস্যু আলিম বাহিনীর সদস্যরাই জেলেদের অপহরণ করেন। অপহৃত জেলেদের মধ্যে একজন মুক্তিপণ দিয়ে গতকাল রোববার বাড়ি ফিরেছেন।
শ্যামনগর উপজেলার বড়ভেটখালী গ্রামের ইউসুফ গাজী বলেন, তিনি ২০ নভেম্বর কৈখালী স্টেশন থেকে অনুমতিপত্র (পাস) নিয়ে নিজের নৌকায় মরগাং গ্রামের ইব্রাহিম শেখ ও আনিস শেখকে নিয়ে বনে প্রবেশ করেন। একইভাবে পাস নিয়ে মরগাং গ্রামের হাসান শেখ ও বড়ভেটখালী গ্রামের আবদুল গাজীও বনে ঢোকেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় আঠারবেকি ভাইজো খালে কাঁকড়া ধরার সময় দস্যুরা তাঁদের নৌকা আটকে দেয়। তিনটি নৌকা থেকে তারা চারজনকে তুলে নেয়। পরে জানায়, মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা দিলে ছাড়া পাওয়া যাবে। গতকাল ভোরে ৫০ হাজার টাকা পরিশোধের পর দস্যুরা হাসান শেখকে একটি নৌকায় তুলে দেয়। সকাল ৯টার দিকে তিনি বাড়ি পৌঁছান।
শ্যামনগর মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কাসেম মোরেল জানান, সুন্দরবনে দস্যুতা আবারও বেড়ে উঠেছে। ভেটখালী ও মরগাং গ্রামের বেশ কয়েকজন জেলে সম্প্রতি আঠারবেকি এলাকা থেকে অপহৃত হয়েছেন বলে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়েছেন।
সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তা হক বলেন, ‘জেলেরা আমাদের কিছুই জানায় না। মহাজন বা পরিবারের লোকজন মুক্তিপণ দিয়ে তাঁদের ছাড়িয়ে আনে, পরে আমরা খবর পাই। দুর্গম বনাঞ্চলে দ্রুত অভিযান চালানোও কঠিন। বনদস্যু দমনে একটি স্মার্ট পেট্রোল টিম ও দুটি বিশেষ দল মাঠে রয়েছে। সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গেলে অপহৃত জেলেদের উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হবে।’