শহিদুলসহ ইসরায়েলে বন্দী অধিকারকর্মীদের মুক্তি দাবি আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বদের
Published: 9th, October 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখী নৌবহর থেকে আটক বাংলাদেশি আলোকচিত্রী ও অধিকারকর্মী শহিদুল আলমসহ ইসরায়েলি কারাগারে বিনা বিচারে বন্দী থাকা সবার মুক্তি দাবি করেছেন আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বসহ তাঁর বন্ধু ও পরিবারের সদস্যরা।
আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের দখলদারি এবং গণহত্যার সম্পূর্ণ অবসান চেয়েছেন তাঁরা।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন ভারতের অরুন্ধতী রায়, যুক্তরাষ্ট্রের গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক, ব্রায়ান পালমার ও বিজয় প্রাসাদ, দক্ষিণ আফ্রিকার মাইক ভ্যান গ্রান, নেপালের কনক মণি দীক্ষিত, যুক্তরাজ্যের সোফিয়া করিম, পাকিস্তানের সালিমা হাশমি, নরওয়ের স্ভারে পেদেরসন, জার্মানির রামি–হাবিব ইদ–সাব্বাগ, বাংলাদেশের সায়দিয়া গুলরুখ, শহিদুল আলমের স্ত্রী রেহনুমা আহমেদ প্রমুখ।
এর আগে গতকাল বুধবার বাংলাদেশ সময় সকাল সোয়া ১০টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় শহিদুল আলম বলেন, তাঁদের বহনকারী গাজা অভিমুখী ‘কনশেনস’ জাহাজটি মাঝসমুদ্রে আটকে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। তিনি অপহরণের শিকার হয়েছেন।
শহিদুল আলম দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন এবং ইসরায়েলে আরব সংখ্যালঘুদের নিয়ে কাজ করা মানবাধিকার সংস্থা ‘আদালাহ’র বরাত দিয়ে দৃক আজ জানিয়েছে, শহিদুল আলমসহ গাজা অভিমুখী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ থেকে আটক অধিকারকর্মীদের একটি অংশকে ইসরায়েলের কেৎজিয়েত কারাগারে নেওয়া হয়েছে।
শহিদুল আলমের অবিলম্বে এবং নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, গণহত্যাকারী ও বর্ণবাদী ইসরায়েল রাষ্ট্র কর্তৃক আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে অবৈধভাবে অপহরণ করা কনশেনস জাহাজে থাকা ৯১ জন গণমাধ্যম ও চিকিৎসা পেশাজীবী এবং ইসরায়েলি কারাগারে বিনা বিচারে আটক হাজারো ফিলিস্তিনির মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।
আরও পড়ুনইসরায়েলি বাহিনী আমাদের আটকে দিয়েছে, আমাকে অপহরণ করেছে: শহিদুল আলম০৮ অক্টোবর ২০২৫বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইসরায়েল সম্পূর্ণভাবে দায়মুক্তির সঙ্গে তার কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। গাজায় নির্বিঘ্ন মানবিক প্রবেশাধিকারের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) বাধ্যতামূলক নির্দেশ অমান্য করেছে দেশটি। একই সঙ্গে তারা বেসামরিক নৌ চলাচলকে সুরক্ষা দেওয়া আন্তর্জাতিক আইন উপেক্ষা করেছে এবং অবৈধ অবরোধ ও গণহত্যা বন্ধে বিশ্বজুড়ে লাখো মানুষের দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত সপ্তাহে গাজা অভিমুখী নৌবহর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ৪২টি নৌযান থেকে ৪৭৯ জনকে আটক করে ইসরায়েল। তাঁদের মধ্যে সুইডিশ অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গও ছিলেন। কয়েক ধাপে তাঁদের অধিকাংশকে ফেরত পাঠিয়েছে ইসরায়েল।
আরও পড়ুনশহিদুল আলমসহ নৌবহর থেকে আটক ব্যক্তিদের কারাগারে বন্দী করেছে ইসরায়েল২ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য ন বহর
এছাড়াও পড়ুন:
সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে চার জেলে অপহৃত, মুক্তিপণ দিয়ে বাড়ি ফিরেছেন একজন
সুন্দরবনের লোনাজলে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে চার জেলে অপহরণের স্বীকার হয়েছেন। তাঁদের ছাড়তে মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে বনদস্যুরা। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা রেঞ্জের আঠারবেকি এলাকার একটি খালে কাকড়া ধরার সময় তাঁদের অপহরণ করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, দস্যু আলিম বাহিনীর সদস্যরাই জেলেদের অপহরণ করেন। অপহৃত জেলেদের মধ্যে একজন মুক্তিপণ দিয়ে গতকাল রোববার বাড়ি ফিরেছেন।
শ্যামনগর উপজেলার বড়ভেটখালী গ্রামের ইউসুফ গাজী বলেন, তিনি ২০ নভেম্বর কৈখালী স্টেশন থেকে অনুমতিপত্র (পাস) নিয়ে নিজের নৌকায় মরগাং গ্রামের ইব্রাহিম শেখ ও আনিস শেখকে নিয়ে বনে প্রবেশ করেন। একইভাবে পাস নিয়ে মরগাং গ্রামের হাসান শেখ ও বড়ভেটখালী গ্রামের আবদুল গাজীও বনে ঢোকেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় আঠারবেকি ভাইজো খালে কাঁকড়া ধরার সময় দস্যুরা তাঁদের নৌকা আটকে দেয়। তিনটি নৌকা থেকে তারা চারজনকে তুলে নেয়। পরে জানায়, মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা দিলে ছাড়া পাওয়া যাবে। গতকাল ভোরে ৫০ হাজার টাকা পরিশোধের পর দস্যুরা হাসান শেখকে একটি নৌকায় তুলে দেয়। সকাল ৯টার দিকে তিনি বাড়ি পৌঁছান।
শ্যামনগর মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কাসেম মোরেল জানান, সুন্দরবনে দস্যুতা আবারও বেড়ে উঠেছে। ভেটখালী ও মরগাং গ্রামের বেশ কয়েকজন জেলে সম্প্রতি আঠারবেকি এলাকা থেকে অপহৃত হয়েছেন বলে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়েছেন।
সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তা হক বলেন, ‘জেলেরা আমাদের কিছুই জানায় না। মহাজন বা পরিবারের লোকজন মুক্তিপণ দিয়ে তাঁদের ছাড়িয়ে আনে, পরে আমরা খবর পাই। দুর্গম বনাঞ্চলে দ্রুত অভিযান চালানোও কঠিন। বনদস্যু দমনে একটি স্মার্ট পেট্রোল টিম ও দুটি বিশেষ দল মাঠে রয়েছে। সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গেলে অপহৃত জেলেদের উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হবে।’