ঢাকী নদীর পানি আটকানো গেছে, এখন বড় চিন্তা ধান নিয়ে
Published: 10th, October 2025 GMT
বেড়িবাঁধ ভেঙে গত মঙ্গলবার রাতে খুলনার দাকোপ উপজেলার তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের বটবুনিয়ায় ঢাকী নদীর পানি হুহু করে ঢুকে পড়ে লোকালয়ে। উঠোন ছাপিয়ে পানি উঠে যায় প্রিয়া খাতুনদের ঘরে। খোরাকির জন্য রাখা ধান খাটে তুলে রেখে স্বামী ও ছোট সন্তানকে নিয়ে রাস্তায় আশ্রয় নেন তিনি। পরদিন বাঁধের ওপরই তাঁবু খাটিয়ে বসবাস শুরু করেন।
চার দিন ধরে পরিবার নিয়ে বাঁধেই থাকছেন প্রিয়া খাতুন। কপালে জুটেছে কেবল শুকনো খাবার। দুই দিন পর বৃহস্পতিবার রাতে পানির বড় প্রবাহ আটকানো সম্ভব হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে পানি কিছুটা নামার পর অস্থায়ী চুলায় প্রথমবার ভর্তা আর ভাত রান্না করতে পেরেছেন প্রিয়া খাতুন। দুপুরে ওই বাঁধ দিয়ে আর জোয়ারের পানি ঢোকেনি।
পানি আটকানোয় আপাতত স্বস্তিতে এলাকার মানুষ। তবে মুখে দুশ্চিতার স্পষ্ট ছাপ। ধান নিয়েই যত চিন্তা। গত মঙ্গলবার রাতে বটবুনিয়া হরিসভা মন্দিরসংলগ্ন ঢাকী নদীর বাঁধ ভেঙে বটবুনিয়া গ্রাম ও নিশানখালী বিলে পানি ঢুকে পড়ে। বাঁধ ভাঙার কারণে ওই এলাকার প্রায় ২ হাজার ২৩১ বিঘা জমির আমন ধান পানিতে তলিয়ে যায়। গ্রামজুড়ে এখন সবচেয়ে বড় আলোচনা—ধানের কী হবে?
প্রিয়া খাতুন বলেন, ‘তিন বিঘা জমি করেছিলাম। ধান পাটায়ে (নুইয়ে) গেছে। গাছের গোড়ার এক বিঘত (৯ ইঞ্চি) বালি। ওই ধান আর বড় হবে কি না আল্লাহপাক জানে। গাছ বড় হলেও হয়তো ধানে চিটা হয়ে যাবে। গত বছর পানখালী ভেঙে গেলে ওদের তাই হয়েছিল। আমরা তবু রাস্তায় উঠে থাকতি পারতিছি। ধানগাছ তো আর ঠেকাতি পারলাম না। ভালো বাঁধ থাকলে এত বড় ক্ষতি তো হইত না।’
প্রিয়া খাতুনদের তাঁবুর ঘরে বসে ছিলেন আরও কয়েকজন নারী। তাঁদের একজন ফিরোজা বেগম বলেন, ‘বাড়তি কোনো ইনকাম নেই এখানকার মানুষের। এই একটা ফসলেই ভরসা। এই ধান খেয়ে ও বিক্রি করে সংসার চলে। আগামী একটা বছর কী হবে, সেটা নিয়েই চিন্তা। বাঁধটা যদি এক দিন আগেও বাঁধা যেত। ফসলের ক্ষতি এত হতো না। আমাদের ত্রাণ, এই চিড়ে, মুড়ি, গুড়ের দরকার নেই ভাই। আমাদের স্থায়ী বাঁধ দরকার। বছর বছর ভাইসে আর পারা যায় না।’
আরও পড়ুনখুলনায় ঢাকী নদীর বাঁধ ভেঙে তলিয়েছে হাজার বিঘার আমন০৮ অক্টোবর ২০২৫আজ শুক্রবার সকালেও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বালু ও জিও টিউব দিয়ে বাঁধ শক্ত করার কাজ চালাচ্ছিল। পাশে স্বেচ্ছাশ্রমে বালুর বস্তা মাথায় নিয়ে বাঁধের পাশে ফেলছিলেন ৩০-৩৫ জনের একটা দল। শিউলি সরদার, মালবিকা মণ্ডল, মাধুরী সরদারসহ ওই দলের বেশির ভাগই নারী।
মাথায় বালুর বস্তা নিয়ে বাঁধ ফেলে ফেরার পথে কথা হয় মাধুরী সরদারের সঙ্গে। সচ্ছল পরিবারের গৃহবধূ মাধুরী বলেন, রান্নাঘর গেছে, ঘরের বারান্দা ধসে গেছে। আড়াই লাখ টাকা ইজারায় ধান করেছিলেন, সব ডুবে গেছে। মাছের ঘের শেষ, হাঁস-মুরগি গাছে উঠিয়ে রাখছেন। রান্নাবান্না বন্ধ। নিজেরা বাঁচার জন্যই মাথায় করে বালি ফেলছেন। স্থায়ী সমাধান দরকার।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের পাশাপাশি স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ শক্তিশালীকরণের কাজে যোগ দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আজ শুক্রবার সকালে খুলনার দাকোপের বটবুনিয়ায়.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বটব ন
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দরে কক্সবাজারের নারী মাদক ব্যবসায়ীসহ গ্রেপ্তার ২
বন্দরে পৃথক অভিযান চালিয়ে এক নারী মাদক কারবারিসহ ২ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ওই সময় সংশ্লিষ্ট পুলিশ ধৃত মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ২০১৬ পিছ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
ধৃত মাদক কারবারিরা হলো সুদূর কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানার জালিয়াপাড়া এলাকার মৃত হাজী আবুল হোসেন মিয়ার মেয়ে ইয়াবা ব্যবসায়ী সলিমা বেগম (৫০) ও বন্দর থানার ২০ নং ওয়ার্ডের আকাশ মিয়ার ছেলে ইয়াবা ব্যবসায়ী হৃদয় (২৫)।
পৃথক স্থান থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধারের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারি সংস্থা বাদী হয়ে ধৃতদের বিরুদ্ধে বন্দর থানায় মাদক আইনে পৃথক মামলা রুজু করেছে। যার মামলা নং- ৩৮(১১)২৫ ও ৩৯(১১)২৫। ধৃতদের বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে বন্দর থানায় রুজুকৃত পৃথক মাদক মামলায় এদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
এর আগে গত বুধবার (২৬ নভেম্বর) বিকেল ৫টায় বন্দর থানার ঢাকা টু চট্টগ্রাম মহাসড়কের মদনপুরস্থ রাফি ফিলিং স্টেশনের সামনে যাত্রীবাহী ঢাকা মেট্রো ব ১৪- ৯৯৪৫ নাম্বারে ষ্টার লাইন পরিবহন ও একই তারিখ দিবাগত রাত সোয়া ২টায় বন্দর থানার মাহমুদনগর ছোট ব্রীজের সামনে পৃথকঅভিযান চালিয়ে উল্লেখিত ইয়াবাসহ এদেরকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
থানা সূত্রে জানা গেছে, ধৃত মাদক কারবারিরা দীর্ঘ দিন ধরে অবাধে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উল্লেখিত পৃথক স্থানে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ এদেরকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।