হাইতিতে গ্যাং সহিংসতায় ৬০ লাখ মানুষ চরম খাদ্য সংকটে
Published: 11th, October 2025 GMT
ক্যারিবীয় দেশ হাইতিতে প্রায় ৬০ লাখ মানুষ তীব্র খাদ্যসংকটে ভুগছে, যা দেশটির জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক। এই সংকটের প্রধান কারণ হলো গ্যাং সহিংসতা ও অর্থনৈতিক সংকট, যার ফলে খাদ্য সরবরাহ ব্যাহত এবং জীবনযাত্রা চরমভাবে প্রভাবিত হচ্ছে।
শনিবার (১১ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, হাইতিতে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো তাদের নিয়ন্ত্রণ ক্রমশ শক্ত করে তুলছে, যার ফলে বিধ্বস্ত অর্থনীতির নিম্নগামী ধারা অব্যাহত রয়েছে।
ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) কর্তৃক শুক্রবার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গ্যাংদের দখল, সহিংসতা, কৃষি উৎপাদন ধ্বংস ও ত্রাণ কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হওয়ার কারণে পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় ৫৭ লাখ হাইতিয়ান তীব্র খাদ্য ঘাটতির মুখোমুখি হচ্ছে। ১৯ লাখ মানুষ ইতিমধ্যেই জরুরি পর্যায়ের ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে ভুগছে। আর ৩৮ লাখ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। পরিস্থিতি আরো খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় হাইতির সরকার শুক্রবার ‘ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন সিকিউরিটি অফিস’ গঠনের ঘোষণা দিয়েছে, যাতে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে দ্রুত ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া যায়। অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট পরিষদের সদস্য লুই জেরাল্ড জিল বলেন, সরকার দ্রুততম সময়ে ক্ষুধার্ত জনগোষ্ঠীর কাছে সহায়তা পৌঁছাতে কাজ করছে।
তবে বাস্তবে এ প্রচেষ্টা কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে। বর্তমানে গ্যাংগুলো রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে এবং সম্প্রতি কৃষি অঞ্চলেও তাদের প্রভাব বিস্তার করেছে।
সহিংসতার কারণে ১৩ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে, যা ডিসেম্বরের পর থেকে ২৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকেই অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাসাঠাসি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন, যেখানে পানি, খাবার ও চিকিৎসার মতো মৌলিক সেবা নেই।
যারা কৃষিকাজে টিকে আছেন, তাদেরকে গ্যাংদের সঙ্গে দরকষাকষি করে জমিতে প্রবেশ করতে হচ্ছে এবং ফসলের একটি অংশ দিতে হচ্ছে চাঁদা হিসেবে। ছোট ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে, যার ফলে অসংখ্য পরিবারের আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে গেছে। ফসল স্বাভাবিক ফলনে পৌঁছালেও, গ্যাংগুলো প্রধান সড়ক অবরুদ্ধ করে রাখার কারণে পণ্য পোর্ট-অ-প্রিন্সে পৌঁছাতে পারছে না।
অর্থনৈতিকভাবে দেশটি মারাত্মক সংকটে পড়েছে। টানা ছয় বছর ধরে মন্দায় থাকা হাইতিতে গত জুলাইয়ে খাদ্যের দাম গত বছরের তুলনায় ৩৩ শতাংশ বেড়েছে।
গত সপ্তাহে প্রকাশিত একটি পৃথক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সহিংসতার কারণে ৬ লাখ ৮০ হাজার শিশু বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যা পূর্ববর্তী পরিসংখ্যানের প্রায় দ্বিগুণ। এক হাজারেও বেশি স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো শত শত নাবালককে নিয়োগ করেছে।
হাইতির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই মাসের শুরুতে জাতিসংঘে ৫ হাজার ৫৫০ সদস্যের একটি নতুন ‘গ্যাং দমন বাহিনী’ অনুমোদন করেছে।
কিন্তু নিরাপত্তা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল। বৃহস্পতিবার, পোর্ট-অ-প্রিন্স শহরের কেন্দ্রস্থলে জাতীয় প্রাসাদে সরকারি কর্মকর্তারা বৈঠক করার চেষ্টা করলে প্রচণ্ড গোলাগুলি শুরু হয়, যার ফলে দীর্ঘদিন ধরে গ্যাং দ্বারা নিয়ন্ত্রিত রাজধানী এলাকা থেকে তারা দ্রুত সরে যেতে বাধ্য হন।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর স থ ত য র ফল
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দরে কক্সবাজারের নারী মাদক ব্যবসায়ীসহ গ্রেপ্তার ২
বন্দরে পৃথক অভিযান চালিয়ে এক নারী মাদক কারবারিসহ ২ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ওই সময় সংশ্লিষ্ট পুলিশ ধৃত মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ২০১৬ পিছ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
ধৃত মাদক কারবারিরা হলো সুদূর কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানার জালিয়াপাড়া এলাকার মৃত হাজী আবুল হোসেন মিয়ার মেয়ে ইয়াবা ব্যবসায়ী সলিমা বেগম (৫০) ও বন্দর থানার ২০ নং ওয়ার্ডের আকাশ মিয়ার ছেলে ইয়াবা ব্যবসায়ী হৃদয় (২৫)।
পৃথক স্থান থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধারের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারি সংস্থা বাদী হয়ে ধৃতদের বিরুদ্ধে বন্দর থানায় মাদক আইনে পৃথক মামলা রুজু করেছে। যার মামলা নং- ৩৮(১১)২৫ ও ৩৯(১১)২৫। ধৃতদের বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে বন্দর থানায় রুজুকৃত পৃথক মাদক মামলায় এদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
এর আগে গত বুধবার (২৬ নভেম্বর) বিকেল ৫টায় বন্দর থানার ঢাকা টু চট্টগ্রাম মহাসড়কের মদনপুরস্থ রাফি ফিলিং স্টেশনের সামনে যাত্রীবাহী ঢাকা মেট্রো ব ১৪- ৯৯৪৫ নাম্বারে ষ্টার লাইন পরিবহন ও একই তারিখ দিবাগত রাত সোয়া ২টায় বন্দর থানার মাহমুদনগর ছোট ব্রীজের সামনে পৃথকঅভিযান চালিয়ে উল্লেখিত ইয়াবাসহ এদেরকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
থানা সূত্রে জানা গেছে, ধৃত মাদক কারবারিরা দীর্ঘ দিন ধরে অবাধে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উল্লেখিত পৃথক স্থানে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ এদেরকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।