ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী সাজিদ হত্যায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে ফের অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শাখা ছাত্রদল।

শনিবার (১১ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন চত্বরে এ কর্মসূচি পালন করেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। 

আরো পড়ুন:

ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার ছাত্রদল নেতাকে বহিষ্কার 

চাকসু: ছাত্রদলকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরলেন দুই প্রার্থী

এ সময় সাজিদের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে আওয়ামী দোসরদের বাতিল করা ও পরিবহন সমস্যা নিরসনে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। 

কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ, সদস্য সচিব মাসুদ রুমি মিথুন, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ, যুগ্ম-আহ্বায়ক আবু দাউদ, আনারুল ইসলাম, রাফিজ আহমেদ, নুর উদ্দিন, রোকনউদ্দিন, সদস্য সাব্বির হোসেন, আবু সাইদ রনি প্রমুখ। 

ছাত্রদলের সদস্য সচিব মাসুদ রুমি মিথুন বলেন, “মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে গিয়ে ছাত্রলীগের পুনর্বাসন করলে তো চলবে না। আওয়ামী দোসরদের সব জায়গায় থেকে বিতাড়িত কর‍তে হবে। প্রমোশন বোর্ড করে ফ্যাসিস্টদের প্রমোশন দেওয়া হয়েছে। আমাদের প্রশ্ন জাগে, এ উপাচার্যের কাজ ছাত্রলীগের পুনর্বাসন করা কি না।”

তিনি বলেন, “বিভিন্ন সময় ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াসহ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি নিয়ে স্মারকলিপি দিচ্ছি। কিন্তু প্রশাসন স্মারকলিপি গ্রহণ করেই যাচ্ছে, কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। আমরা সাজিদ হত্যার বিচার চাই, যেকোনো মূল্যে খুনিদের গ্রেপ্তার করতে হবে। অপরাধী কোনো দলের না, তার একমাত্র পরিচয় সে অপরাধী।”

শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, “একটি চক্র আমাদের ভাই সাজিদকে হত্যা করে পুকুরে ফেলে দিয়েছে। আমরা বারবার বিচার চেয়েছি, প্রশাসন বারবার আমাদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনের মতো অথর্ব, নির্লজ্জ, বেহায়া প্রশাসন আমি আগে কখনো দেখিনি। আপনারা শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে প্রশাসনগিরি করছেন।”

তিনি বলেন, “আপনারা এমন ভাব দেখান, যেন আপনারা কিছু বোঝেন না। আপনার পরে রয়েছে আওয়ামী লীগ আর ছাত্রলীগের পুনর্বাসন নিয়ে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ হায়ার বোর্ডে কারা রয়েছে, আপনারা সেটা এখনো বলেন, আমাদের সাংবাদিকরাও জানেন না। আপনাদের যা ইচ্ছা, তাই গোপনে গোপনে করছেন। শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে ২৬ জন চিহ্নিত ফ্যাসিস্ট রয়েছে। আপনারা কেন তাদের সুযোগ দেবেন।”

তিনি আরো বলেন, “সর্বশেষ ফোকলোর বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে বোর্ডে ছাত্রলীগকে আমন্ত্রণ-নিমন্ত্রণ করা হয়েছে। তাদের পুনর্বাসন করেছে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়াও শুক্রবার (১০ অক্টোবর) ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে বোর্ডে যে চেয়ারম্যান একটি ফ্যাসিস্ট অভিযোগে জড়িত, তাকে সেখানে সদস্য করা হয়েছে। আপনি ফ্যাসিস্টদের সঙ্গে প্রেম প্রেম খেলবেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এবং ছাত্রদল তা কখনো মেনে নেবে না।”

গত ১৭ জুলাই বিকেল শাহ আজিজুর রহমান হল পুকুর থেকে আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ বর্ষের শিক্ষার্থী সাজিদের লাশ উদ্ধার করা হয়। ভিসেরা রিপোর্ট অনুযায়ী সাজিদকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় ছাত্র সংগঠনসহ শিক্ষার্থীরা জড়িতদের বিচার দাবিতে আন্দোলন করে।

হত্যার ঘটনায় প্রায় ২ মাস পর আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্তের দায়িত্ব পায় অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ব শ বব দ য ছ ত রদল র আম দ র সদস য ইসল ম আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

সিরামিক শিল্পে কর কমানোর চেষ্টা করব: বাণিজ্য উপদেষ্টা

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, একটি কমপ্লায়েন্ট, প্রতিযোগিতামূলক ও উদ্ভাবনী শিল্প তৈরি করুন। সরকার করহার কমানোর চেষ্টা করবে। দেশ আর আগের অবস্থানে ফিরে যাবে না।

বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সরকারের কাছে এমন যুক্তি তুলে ধরুন, যা বিশ্বাসযোগ্য ও ন্যায্য। সরকার হিসেবে আপনাদের কথা শোনার জন্য আমরা বাধ্য। কারণ, আমরা আপনাদেরই ব্যবসা করার জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করি।’

আজ রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) চতুর্থবারের মতো আয়োজিত সিরামিক এক্সপোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ, ঢাকায় নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিসিএমইএ সভাপতি মইনুল ইসলাম, মেলা কমিটির চেয়ারম্যান ও বিসিএমইএর সাধারণ সম্পাদক ইরফান উদ্দীন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিসিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. মামুনুর রশীদ, বিসিএমইএর সাধারণ সম্পাদক ইরফান উদ্দীন।

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘আজকে একটি গণমাধ্যমে দেখলাম বাংলাদেশে বর্তমানে খেলাপি ঋণ প্রায় ৩৫ শতাংশ। যা বিশ্বে সর্বোচ্চ পর্যায়ে এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন, তিউনিসিয়া, লেবাননের চেয়ে ২ থেকে ৩ গুণ বেশি। বিগত সরকার দারিদ্র্য এমনভাবে বসিয়ে দিয়েছে যে অর্থনীতি ভঙ্গুর অবস্থায় চলে গিয়েছিল। সেখান থেকে অন্তর্বর্তী সরকার রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে গেছে।’

শেখ বশিরউদ্দীন আরও বলেন, বিসিএমইএ সম্ভবত গ্যাস সমস্যায় সবচেয়ে বেশি ভুগেছে। বিসিএমইএর সভাপতি জানান আগের থেকে পরিস্থিতি ভালো। যদি ওনার কারখানায় গ্যাসের অবস্থা ভালো থাকে, তাহলে এই খাতে সবার ক্ষেত্রেও ভালো থাকার কথা।

বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমইএ) সভাপতি মইনুল ইসলাম বলেন, সিরামিক সম্ভাবনাময় শিল্প হিসেবে এগিয়ে আসছে। ইতালিতে তাদের বর্তমান সিরামিক বাজার প্রায় ১ বিলিয়ন ইউরো, যা তারা ২ বিলিয়ন ইউরোতে উন্নীত করার কথা বলছে। তারা সিরামিক শিল্পের জন্য করহার ৫০ শতাংশ কমিয়েছে। বাংলাদেশও এমন চিন্তা করতে পারে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান হাসান আরিফ বলেন, সিরামিক শিল্প একটি অপ্রচলিত রপ্তানি খাত হিসেবে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের জন্য নতুন ক্ষেত্র উন্মোচন করেছে। গত বছর সিরামিক শিল্পের রপ্তানি হয়েছে প্রায় ৩৫ মিলিয়ন ডলার।

ঢাকায় নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো বলেন, বাংলাদেশের শিল্প মূলত তৈরি পোশাকশিল্পনির্ভর, সেখানে সিরামিক একটি গুরুত্বপূর্ণ নতুন বৈচিত্র্য সৃষ্টি করেছে। যা অত্যন্ত ইতিবাচক একটি দৃষ্টান্ত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ