জনতা চায় নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন, এটিই আমাদের লক্ষ্য: মির্জা ফখরুল
Published: 11th, October 2025 GMT
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “দেশের জনগণই নির্ধারণ করবে কে তাদের প্রতিনিধিত্ব করবে। সবাই চাই নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে পার্লামেন্ট গঠন হোক।”
শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে গাজীপুরের কাপাসিয়া পাইলট সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রয়াত নেতা হান্নান শাহের নবম মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
বিএনপির ধানের শীষ নিয়ে টানাটানি কেন, প্রশ্ন ফখরুলের
ফখরুলের সঙ্গে জার্মানির নতুন রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
তিনি বলেন, “আমাদের একমাত্র দাবি হলো দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। একটি নির্বাচিত সংসদ আমরা চাই, এবং তা হবে শুধু একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে।”
তিনি আরো বলেন, “অধ্যাপক ড.
পাশাপাশি লন্ডনে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের কথাও তুলে ধরেন ফখরুল, যেখানে দলের নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সভা হয়েছে এবং সিদ্ধান্ত হয়েছে-আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হবে। এই ঘোষণার পরে দেশের মানুষ আশাবাদী বলে তিনি দাবি করেন।
বক্তব্যে মির্জা ফখরুল দায়েরকৃত দমন-পীড়নমূলক মামলা কথা উল্লেখ করে জানান, গত কয়েক বছরে তাদের বহু নেতা–কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে, অনেকে নিহত ও গুম হয়েছেন, এবং বিএনপির চেয়ারপারসন দীর্ঘদিন কারাবাসে ছিলেন। এই মূল্যভার বহন করেই তারা আজকের আন্দোলনে রয়েছে।
সম্মেলনে তিনি দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে স্পষ্টভাবে অনুরোধ করে বলেন, “এখন নীরব থাকার সময় শেষ; গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার জন্য প্রতিটি মানুষকে সক্রিয় হতে হবে, শান্তিপূর্ণ হলেও দৃঢ় প্রত্যয়ে মাঠে নামতে হবে।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ কে এম ফজলুল হক মিলন, প্রয়াত হান্নান শাহের ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান, বিএনপি ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল প্রমুখ।
মির্জা ফখরুল অনুষ্ঠানে শাহ রিয়াজুল হান্নানকে গাজীপুর-৪ (কাপাসি) আসনের বিএনপি প্রার্থী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন এবং সবার কাছে তার জন্য ধানের শীষ প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন।
ঢাকা/রফিক/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম র জ ফখর ল ইসল ম আলমগ র ব এনপ ব এনপ ফখর ল
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হলে স্বৈরাচারী কাঠামোর বিলোপ হবে: বদিউল আলম
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হলে স্বৈরাচারী কাঠামোর বিলোপ হবে।
শনিবার (১১ অক্টোবর) এফডিসিতে ‘গণতন্ত্র সুরক্ষায় আগামী নির্বাচনের গুরুত্ব’ নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদে এসব কথা বলেন তিনি। ছায়া সংসদে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
ড. বদিউল আলম বলেন, নির্বাচনী ও রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ করতে হবে। ক্ষমতার পালাবদলে যেন দুর্নীতির পালাবদল না হয়, সে বিষয়ে সজাগ থাকা অত্যন্ত জরুরি। গত ১৫ বছরে আমরা দেখেছি, ক্ষমতার সঙ্গে ‘জাদুর কাঠি’ যুক্ত ছিল। বিগত সময়ে ক্ষমতাসীন সংসদ সদস্য, মেয়র ও চেয়ারম্যানদের সম্পদ আকাশচুম্বী হয়েছে- এটা বন্ধ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতা থেকে বিদায় নিলেও স্বৈরাচারী আইন-কানুন ও কাঠামো এখনো বহাল রয়েছে। এসব কাঠামোই তাকে স্বৈরাচার বানিয়েছে। বর্তমানে চলমান সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এসব কাঠামো পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তাই আইনি, প্রাতিষ্ঠানিক ও কাঠামোগত সংস্কার অপরিহার্য। সুশাসন ও জবাবদিহিতা না থাকলে কেবলমাত্র নির্বাচন দিয়ে স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করতে চাই- এই নির্বাচন কমিশন একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে পারবে। ভবিষ্যৎ সরকার যদি জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না করে, তবে তাদের পরিণতিও শেখ হাসিনার মতোই হতে পারে। এই সনদ বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বৈরাচারী কাঠামোর বিলোপ হবে। আশা করি, ভবিষ্যতে যারা ক্ষমতায় আসবে, তারা এ বিষয়ে সজাগ থাকবে।
তিনি আরো জানান, আগামী নির্বাচনের দিনই গণভোট অনুষ্ঠিত হবে কি না, সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ ও রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রস্তাব দেবে ঐকমত্য কমিশন।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, জুলাই সনদ নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য এখন ‘সিলভার লাইন’ থেকে ‘গোল্ডেন লাইন’-এ উন্নীত হয়েছে। গণতন্ত্রকামী প্রতিটি রাজনৈতিক দলই একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন প্রত্যাশা করছে। দেশের মানুষও অপেক্ষায় আছেন, কবে তারা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন।
তিনি বলেন, যারা এ দেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিল, বিনা ভোটে ক্ষমতায় ছিল, দিনের ভোট রাতে করেছিল, ডামি নির্বাচন করে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছিল- সেখান থেকে মুক্তির জন্য আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন অত্যাবশ্যক।
তিনি আরো জানান, আগামী ১৫ অক্টোবর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জুলাই সনদ স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বন্দ্বের কারণে যদি জুলাই সনদ স্বাক্ষরে বাধা সৃষ্টি হয়, তাহলে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়বে। বিগত শাসনামলে ফ্যাসিস্ট সরকারের অন্যায়, অত্যাচার, গুম, খুন এবং জুলাই বিপ্লবের শহীদদের হত্যার বিচার বাধাগ্রস্ত হবে। দেশের আইনশৃঙ্খলায় ব্যাপক প্রভাব পড়বে এবং পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তি ফিরে আসার আশঙ্কা তৈরি হবে।
তিনি বলেন, হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের প্রত্যাশা, বিভেদের রাজনীতি পরিহার করে ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্যে ফ্যাসিস্টবিরোধী প্রতিটি রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ থাকবে।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ‘আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হলেই গণতন্ত্র সুরক্ষিত হবে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে তেজগাঁও কলেজ ও প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকরা যৌথভাবে বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, সিনিয়র সাংবাদিক মাঈনুল আলম, সাংবাদিক মো. হুমায়ূন কবীর এবং সাংবাদিক জাকির হোসেন লিটন। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
ঢাকা/এএএম/ফিরোজ