বিশ্বের উষ্ণমণ্ডলীয় প্রবালপ্রাচীরগুলো এমন এক সীমা অতিক্রম করেছে, যেখান থেকে আর ফেরার পথ নেই। কারণ, সমুদ্রের তাপমাত্রা এখন এমন মাত্রায় পৌঁছেছে, যেখানে অধিকাংশ প্রবালের টিকে থাকা অসম্ভব। আজ সোমবার প্রকাশিত এক বৈজ্ঞানিক প্রতিবেদনে এমন সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে প্রথমবারের মতো বিজ্ঞানীরা বলেছেন, পৃথিবী সম্ভবত একটি ‘বিপজ্জনক’ সীমারেখায় পৌঁছেছে। এতে বিশ্বের প্রকৃতিতে বড় ধরনের, এমনকি স্থায়ী পরিবর্তনও দেখা যেতে পারে।

প্রতিবেদনের মূল লেখক এবং এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ু ও বিশ্বব্যবস্থাবিষয়ক বিজ্ঞানী টিম লেন্টন এএফপিকে বলেন, ‘দুঃখজনক বিষয় হলো, এখন আমরা অনেকটাই নিশ্চিত যে আমরা উষ্ণ পানির বা উষ্ণমণ্ডলীয় প্রবালপ্রাচীরের একটি ‘বিপজ্জনক সীমা’ অতিক্রম করেছি।’

বিশ্বের বিভিন্ন গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের ১৬০ জন বিজ্ঞানী প্রতিবেদনটি তৈরি করছেন। বিজ্ঞানীরা এ বিষয়ে একমত যে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির হার শিল্পপূর্ব যুগের চেয়ে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি হলেই অধিকাংশ প্রবালপ্রাচীর ধ্বংস হয়ে যাবে। আর কয়েক বছরের মধ্যে বৈশ্বিক উষ্ণতা সে সীমারেখাকে ছুঁয়ে ফেলতে পারে।

উষ্ণ সমুদ্রে চাপের কারণে প্রবালগুলো তাদের স্বাভাবিক রং ও খাদ্যের উৎস হারাচ্ছে। যদি সমুদ্র ঠান্ডা না হয়, তাহলে রং হারিয়ে ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া প্রবাল আর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারে না। তা ছাড়া খাবার না পেয়ে এগুলো ধীরে ধীরে মরে যায়।

২০২৩ সালের পর থেকে সমুদ্রবিজ্ঞানীরা এমন মাত্রায় প্রবালের মৃত্যু দেখেছেন, যা আগে কখনো দেখা যায়নি। প্রশান্ত, ভারত মহাসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগরে প্রবালপ্রাচীরগুলো ভুতুড়ে সাদা রং ধারণ করেছে।

আরও পড়ুন২০২৪ সাল ছিল বিশ্বের সবচেয়ে উষ্ণতম বছর১০ জানুয়ারি ২০২৫

বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রবালপ্রাচীর পুরোপুরি নষ্ট না হয়ে তা কম বৈচিত্র্যপূর্ণ বাস্তুব্যবস্থায় পরিণত হবে। অ্যালজি, স্পঞ্জের মতো যেসব প্রাণী উষ্ণ সমুদ্রে টিকে থাকতে সক্ষম, তাদের আধিপত্য দেখা যাবে। নতুন জলজ পরিবেশে এসব প্রজাতি আধিপত্য করবে। আর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মৃত প্রবালের কঙ্কালগুলো ভেঙে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে।

এ ধরনের পরিবর্তন প্রবালপ্রাচীরের ওপর নির্ভরশীল লাখ লাখ মানুষ এবং প্রায় ১০ লাখ প্রজাতির প্রাণীর জন্য বিপদের কারণ হয়ে উঠবে।

আরও পড়ুনবিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রবালের সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা১৫ নভেম্বর ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রব ল র

এছাড়াও পড়ুন:

বিশ্বের সবচেয়ে ছোট ঘোড়া

ছোট্ট পুমুকেলকে দেখে যে কেউ অবাক হবেন—এটি ঘোড়া, গাধা, কুকুর নাকি পুতুল, তা বুঝতে কারও কারও কয়েক সেকেন্ড সময়ও লেগে যেতে পারে।

পুমুকেলের বাস জার্মানিতে। এটি দেখে আপনার যা–ই মনে হোক, পুমুকেল কিন্তু একটি জীবন্ত ঘোড়া। বাদামি ও উজ্জ্বল সাদা রঙের ঘোড়াটির ঘাড়ে-মাথায় বেশ বড় বড় লোম। সেগুলো অনেকটা চুলের মতো ঝুলে থাকে। এ কারণে হঠাৎ দেখায় সেটিকে একটি পুতুল বলে মনে হতে পারে।

তবে এসবের কিছুই পুমুকেলের মূল বৈশিষ্ট্য নয়। প্রাণীটির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো সেটির উচ্চতা। পুমুকেলের উচ্চতা মাত্র ২১ দশমিক ১ ইঞ্চি। নিজের এ উচ্চতার কারণে প্রাণীটি এখন গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের মালিক। পুমুকেল এখন সবচেয়ে কম উচ্চতার জীবন্ত ঘোড়া।

২০২০ সালে ক্যারোলা ভাইডেমান নামের এক নারী পুমুকেলকে পালন করতে নেন। সে সময় এটির বয়স ছিল মাত্র ৫ মাস, উচ্চতা মাত্র ১৮ ইঞ্চি।

পুমুকেলকে প্রথমবার দেখার দিনের কথা এখনো স্পষ্ট মনে আছে ক্যারোলার। তিনি একটি থেরাপি ঘোড়া খুঁজছিলেন। তখন এক বন্ধু তাঁকে পুমুকেলের কথা জানান এবং তিনি পুমুকেলকে দেখতে যান।

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষকে ক্যারোলা বলেন, ‘আমি গাড়ি চালিয়ে সেখানে গিয়ে ওকে দেখি এবং সত্যিই, পুরোপুরি ধাক্কা খাই। এর আগে আমি এত ছোট ঘোড়া কখনো দেখিনি।’

এর আগে যে ঘোড়া এই রেকর্ডের মালিক ছিল, সেটির চেয়ে পুমুকেলের উচ্চতা দেড় ইঞ্চি কম।

পুমুকেল একটি প্রশিক্ষিত ঘোড়া। প্রাণীটি থেরাপি দেওয়ার কাজ করে। এ জন্য সেটিকে নিয়মিত বিভিন্ন নার্সিং হোম, হাসপাতাল, স্কুল ও প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য নানা প্রতিষ্ঠানে নেওয়া হয়।

ক্যারোলা বলেন, ‘সে খুবই মিষ্টি স্বভাবের। সে শিশুদের সঙ্গে অবিশ্বাস্য রকম ভালো আচরণ করে, খোঁচাখুঁচি ও আলিঙ্গন পছন্দ করে। পুমুকেল মনোযোগের কেন্দ্রে থাকতে খুবই পছন্দ করে।’

পুমুকেল কোনো ছোট আকারের ঘোড়ার প্রজাতি নয়। ক্যারোল বলেন, পুমুকেল স্বাভাবিক আকারের ঘোড়ার প্রজাতি। প্রকৃতিই প্রাণীটিকে এই আকার দিয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ