জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। ওপার বাংলার সিনেমায় অভিনয় করেও নিজেকে প্রমাণ করেছেন। খানিকটা বিরতির পর ফের ভারতীয় বাংলা সিনেমায় অভিনয় করছেন চঞ্চল চৌধুরী। ‘শিকড়’ নামের সিনেমাটি পরিচালনা করছেন ব্রাত্য বসু।   

গত ১৩ অক্টোবর, বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় গিয়েছেন চঞ্চল। পশ্চিমবঙ্গের বোলপুরের একটি গ্রামে ব্রাত্য বসুর ‘শিকড়’ সিনেমার শুটিং করছেন। সেখানে ভারতীয় একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন চঞ্চল চৌধুরী।  

আরো পড়ুন:

কানতারা টু: ‘রাজকন্যা কঙ্কাবতী’ রুক্মিণীকে কতটা জানেন?

ট্রাম্পকে মিথ্যাবাদী বানিয়ে ছাড়লো ভারত

গত বছর গণঅভ্যুত্থানের পর ভারত-বাংলাদেশের রাজনৈতিক টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। এই টানাপড়েন কী কোনোভাবে শিল্পীদের কাজে বাধার সৃষ্টি করছে? কিংবা তাকে কী কোনো বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে?  

এ প্রশ্নের জবাবে চঞ্চল চৌধুরী বলেন, “আমি কাজের জন্য যতবার ভিসার আবেদন করেছি বা কোনো প্রোডাকশন হাউসের নিমন্ত্রণে আসতে হয়েছে, তখন তো খুব সহজেই ভিসা পেয়েছি। কোনো সমস্যা হয়নি।” 

রাজনৈতিক এই টানাপড়েন শিল্পীর স্বাধীনতা, দর্শকদের উপর প্রভাব ফেলছে কি না? জবাবে চঞ্চল চৌধুরী বলেন, “এটি খুবই স্পর্শকাতর বিষয়। পরিস্থিতির কারণে অনেক কিছুই ঘটে। বিশেষত রাজনৈতিক কোনো পরিস্থিতি যখন তৈরি হয়। অনেক স্বাভাবিক বিষয়ও তখন জটিল হয়ে যায়। সেটার আবার সমাধানও হয়। সমস্যা সবসময় কিছু না কিছু থাকবেই, দুটো আলাদা দেশ তো। যদিও চিরস্থায়ী কিছু নয়। দেশের মধ্যে কাজ করতে গেলেও তো অনেক সংকট তৈরি হয়। তাই আমার কাছে আলাদা করে কিছু মনে হয় না।” 

‘শিকড়’ সিনেমার শুটিং শুরুর আগেও মহড়া, মিটিং করতে দু’বার কলকাতায় গিয়েছেন চঞ্চল চৌধুরী। এসময়ে তাকে কোনো অসুবিধায় পড়তে হয়নি। আগামী দিনেও কোনো সমস্যা হবে না বলেই মত চঞ্চল চৌধুরীর। 

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুই গল্পের সংমিশ্রণে নির্মিত হচ্ছে ‘শিকড়’ সিনেমা। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের মার্চে সিনেমাটি মুক্তির পরিকল্পনা করেছেন নির্মাতারা।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

ক্ষতিপূরণ পেতে নতুন ঘর, থাকেন না কেউ, তবু টাকা দিতে চায় প্রশাসন

শরীয়তপুর-জাজিরা-নাওডোবা (পদ্মা সেতু অ্যাপ্রোচ) সড়কের নির্মাণকাজ চলছে। তবে ওই সড়কের একটি অংশের জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে ক্ষতিপূরণ পাওয়া নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা একটি চক্রকে সহায়তা করে অবৈধভাবে নির্মিত স্থাপনাগুলোর ক্ষতিপূরণ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে ওই এলাকার অবৈধ স্থাপনা শনাক্ত করে সেগুলোকে ‘জনস্বার্থবিরোধী’ হিসেবে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছিল প্রশাসন। সেই স্থাপনাগুলোর মূল্য নির্ধারণের জন্য সম্প্রতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাসুদুল আলম গণপূর্ত বিভাগ ও বন বিভাগের তালিকা পাঠিয়েছেন। সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) আশঙ্কা, এই স্থাপনাগুলোর ক্ষতিপূরণ দেওয়া হলে প্রকল্পে অতিরিক্ত ৮ থেকে ১০ কোটি টাকা ব্যয় হবে।

সওজের একজন প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, স্থাপনার ক্ষতিপূরণের একটি ইস্যু দীর্ঘদিন ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এখন তা নিষ্পত্তি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাতে কিছু নতুন স্থাপনা যুক্ত করা হয়েছে। যার জন্য অতিরিক্ত ৮ কোটি থেকে ১০ কোটি টাকা ব্যয় করতে হবে।

সওজ ও জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার তথ্য বলছে, পদ্মা সেতু হয়ে শরীয়তপুর জেলা শহর থেকে ঢাকায় যাতায়াত সহজ করতে ২০২০ সালে ২৭ কিলোমিটার সড়ক চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্প অনুমোদন দেয় সরকার। ভূমি অধিগ্রহণ ও সড়ক নির্মাণ মিলিয়ে খরচ ধরা হয় ১ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা। ২০২০ সালে জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়। সদর, নড়িয়া ও জাজিরা এলাকায় ২২টি ভূমি অধিগ্রহণসংক্রান্ত মামলার (এলএ কেস) মাধ্যমে প্রায় ২৬০ একর জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া এগোয়। ওই সময় জমিতে কী কী স্থাপনা আছে, তা নিশ্চিত হতে ভিডিও চিত্র ধারণ করে জেলা প্রশাসন।

৫ বছরে ২২টির মধ্যে ১৬টি এলএ কেসের জমি সওজকে হস্তান্তর করা হয়। তিনটি প্যাকেজে সড়ক নির্মাণ এগোচ্ছে। শহর থেকে জাজিরা কলেজ পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে সাড়ে ১১ কিলোমিটারের কাজ শেষ। কিন্তু জাজিরার ঢালীকান্দি ও মতিসাগর এলাকায় ২ কিলোমিটার এলাকার কাজ বন্ধ। কারণ, ১৬ নম্বর এলএ কেসে জমি হস্তান্তর হয়নি।

অধিগ্রহণের আড়ালে অবৈধ স্থাপনা

কেন কাজ হয়নি, তা জানতে গিয়ে নতুন তথ্য পাওয়া গেল। ২০২১ সালে ভূমিমালিকদের ৪ ধারা অনুযায়ী নোটিশ দেওয়া হলে একটি চক্র বেশি ক্ষতিপূরণের আশায় অবৈধভাবে ঘরবাড়ি নির্মাণ শুরু করে।

জেলা প্রশাসন ও সড়ক বিভাগের প্রতিনিধিরা সেখানে যৌথ তদন্ত করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের স্থাপনা-ঘরবাড়ি ও গাছপালার তালিকা করেন। ওই তালিকা যাচাই-বাছাইয়ের পর ২০২৩ সালে অধিগ্রহণ শাখার কর্মকর্তারা অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণের আশায় নির্মাণ করা স্থাপনা বাদ দিয়ে প্রকৃত তালিকা মূল্য নির্ধারণের জন্য গণপূর্ত বিভাগ ও বন বিভাগে পাঠান। আর বাদ দেওয়া স্থাপনাগুলোকে ‘জনস্বার্থবিরোধী’ হিসেবে চিহ্নিত করেন।

কিন্তু ওই স্থাপনার মালিকেরা ক্ষতিপূরণ চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে আপিল করেন। এরপর একটি চক্র অধিগ্রহণ শাখার কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সেই স্থাপনাগুলো তালিকাভুক্ত করতে সচেষ্ট হয়। সম্প্রতি ওই আবেদনগুলো আমলে নিয়ে ৩৮টি স্থাপনার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার উদ্যোগ নেয় অধিগ্রহণ শাখা।

২০ অক্টোবর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাসুদুল আলম গণপূর্ত বিভাগ ও বন বিভাগকে পুনরায় মূল্য নির্ধারণের তালিকা পাঠিয়েছেন। অভিযোগ হলো, এই নতুন তালিকায় অবৈধ স্থাপনাগুলোকে ঢোকানো হয়েছে।

ভিডিওতে নেই, মাঠে ‘নতুন’ ঘর

অধিগ্রহণ শাখা ও সওজের কাছ থেকে ৪ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সংগ্রহ করেছে প্রথম আলো। সেখানে দেখা যায়, সড়কের পূর্ব পাশে বসতি আর পশ্চিমে নিচু কৃষিজমি। যেখানে ফাঁকা জমি দেখা গেছে, বর্তমানে সেখানে কাঠের ও টিনের ঘর দাঁড়িয়ে আছে। বেশির ভাগ ঘর তালাবদ্ধ, কেউ বসবাস করে না, মালামালও নেই।
মাঠে গিয়ে দেখা যায়, অনেক ঘর কাঠের পাটাতনের ওপর বসানো। পুরোনো ঘর এনে বসিয়ে রাখা হয়েছে, যাতে ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায়।

মতিসাগর এলাকার কাজী নজরুল ইসলামের ঘরটি নতুন তালিকায় ‘মুরগির খামার’ হিসেবে দেখানো হয়েছে। কিন্তু সেখানে কোনো মুরগি নেই। তিনি বলেন, ‘আমি মুরগির খামারি। বাড়ির পাশে নিজেদের জমিতে খামার করেছি। সেই খামারের জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে, তাই ক্ষতিপূরণ পাব।’

অধিগ্রহণ কাজ শুরুর আগে জেলা প্রশাসনের ও সড়ক ও জনপথ বিভাগের করা ভিডিওতে এই সব স্থাপনা না থাকলেও এখন ক্ষতিপূরণ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। সম্প্রতি জাজিরার মতিসাগর এলাকায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ