আমাদের দৈনন্দিন জীবনে চলাফেরা ও কাজকর্মে জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধির ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। নানা কারণে সন্ধিতে বা জয়েন্টে ব্যথা হতে পারে। বেশির ভাগ মানুষ জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধির ব্যথা অনুভব করলেই ধরে নেন, হয়তো বাত হয়েছে। যদিও জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধির ব্যথার একটি অন্যতম প্রধান কারণ হলো বাত, তবে সব ব্যথাই বাত নয়। অনেক ক্ষেত্রেই এই ব্যথার উৎস হতে পারে মাংসপেশি, টেন্ডন, বা স্নায়ুতন্ত্র।

সব জয়েন্টের ব্যথা বাত নয়

প্রথমেই জানা দরকার, ‘বাত’ আসলে কোনো একক রোগ নয়। এটি মূলত আর্থ্রাইটিস বা গাঁটে প্রদাহের সাধারণ নাম, যার মধ্যে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, অস্টিওআর্থ্রাইটিস, গাউটসহ আরও অনেক ধরনের রোগ অন্তর্ভুক্ত। এসব ক্ষেত্রে সাধারণত জয়েন্ট ফুলে যায়, লালচে বা গরম অনুভূত হয় এবং নড়াচড়ায় ব্যথা বাড়ে। যেমন-
অস্টিওআর্থারাইটিস: বয়সজনিত কারণে জয়েন্টের ক্ষয় হলে বা ভেঙে গেলে দেখা দেয়।
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস: এটি একটি অটোইমিউন রোগ, যেখানে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ভুল করে জয়েন্টে আক্রমণ করে।

জয়েন্টের আশপাশে ব্যথা সৃষ্টি হওয়ার আরও বেশ কিছু কারণ আছে—
টেন্ডিনাইটিস বা বার্সাইটিস: জয়েন্টের কাছের টেন্ডন (পেশি ও হাড়ের সংযোগকারী অংশ) বা বার্সা (জয়েন্টের ভেতরের তরল থলি)-তে প্রদাহ হলে ব্যথা হতে পারে।
আঘাত বা অত্যধিক ব্যবহার: খেলাধুলা বা অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে মাংসপেশি বা লিগামেন্টে টান লাগা।

নিউরোলজিক্যাল কারণ

অনেক সময় জয়েন্টের কাছাকাছি যে ব্যথা অনুভব হয়, তা আসলে সেই জয়েন্টের সমস্যা নয়, বরং স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা। নিউরোলজিক্যাল কারণে সৃষ্ট জয়েন্ট ব্যথার প্রধান উৎসগুলো হলো—  

নার্ভ কম্প্রেশন: মেরুদণ্ড থেকে বেরিয়ে আসা কোনো স্নায়ু বা নার্ভে চাপ পড়লে (যেমন: কোমরে ডিস্ক প্রোল্যাপস বা সায়াটিকা) সেই ব্যথা বাহু বা পায়ে অবস্থিত জয়েন্ট পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে। একে রেফার্ড পেইন বলে। উদাহরণস্বরূপ, ঘাড়ের নার্ভে চাপ পড়লে কাঁধ বা কনুইতে ব্যথা হতে পারে।

পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি: ডায়াবেটিস বা অন্যান্য কারণে হাত-পায়ের প্রান্তীয় স্নায়ুগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলে জয়েন্টে বা তার আশপাশে জ্বালাপোড়া, তীব্র ব্যথা বা অসারতা অনুভূত হতে পারে।

অন্যান্য স্নায়বিক রোগ: কিছু স্নায়বিক রোগ, যেমন ফাইব্রোমায়ালজিয়া, শরীরের বিভিন্ন অংশে বিশেষ করে জয়েন্টের চারপাশে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা সৃষ্টি করে।

করণীয় কী?

যদি আপনার জয়েন্টের ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয়, সকালে বেশি থাকে, ফোলা থাকে বা এর সঙ্গে অসারতা বা ঝিনঝিন ভাব দেখা দেয়, তবে নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিপদে না পড়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তিনি পরীক্ষা করে বাত নাকি স্নায়বিক কোনো সমস্যা, তা নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা দিতে পারবেন।

আরও পড়ুনসহজ এই ১২টি উপায় মানলে মস্তিষ্ক থাকবে চাঙা ও কর্মক্ষম১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জয় ন ট ব জয় ন ট র

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠকে ভূখণ্ড নিয়ে ‘কোনো আপস’ হয়নি: রুশ কর্মকর্তা

যুদ্ধের ইতি টানতে ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ‘কোনো আপস’ হয়নি। মস্কোয় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তাদের বৈঠকের পর এক রুশ কর্মকর্তা এ কথা জানিয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও প্রেসিডেন্টের জামাতা জ্যারেড কুশনার মঙ্গলবার ক্রেমলিনে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে মারাত্মক যুদ্ধের অবসান ঘটাতে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতার অংশ হিসেবে তাঁরা এ বৈঠক করেন। এ বৈঠক প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে চলে এবং মধ্যরাতের পর শেষ হয়।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ক্রেমলিনের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ। তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা কোনো আপসে পৌঁছাতে পারিনি। তবে মার্কিন কিছু প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা এগোতে পারে।’

উশাকভ মঙ্গলবারের আলোচনাকে ‘খুবই ইতিবাচক ও গঠনমূলক’ উল্লেখ করলেও তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ওয়াশিংটন ও মস্কো— উভয় পক্ষের সামনে এখনো অনেক কাজ বাকি।’

মার্কিন প্রতিনিধিদল একটি শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করতে রাশিয়ার রাজধানীতে গিয়েছিল। সেখানে আগের ফাঁস হওয়া ২৮ দফা শান্তি পরিকল্পনার খসড়ার হালনাগাদ সংস্করণ নিয়ে আলোচনা হয়। ফাঁস হওয়া ‘খসড়াটি রাশিয়ার পক্ষে গেছে’— ইউক্রেন ও দেশটির মিত্রদের এমন কঠোর সমালোচনার মুখে ওয়াশিংটন এতে পরিবর্তন আনে।

কিয়েভ ও ইউরোপের পাল্টা প্রস্তাবটিরও নিন্দা করেছে ক্রেমলিন। পুতিন বারবার বলে আসছেন, এটি তাঁর দেশের কাছে ‘অগ্রহণযোগ্য’।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। মস্কো, রাশিয়া; ২ ডিসেম্বর, ২০২৫।

সম্পর্কিত নিবন্ধ