জাতীয় দলে বাইরে অস্থিরতা, ভেতরে ‘ওয়েল সেট’!
Published: 28th, November 2025 GMT
প্রকাশ্যে বিরোধ সামনে নিয়ে এসেছেন গাজী আশরাফ হোসেন লিপু ও লিটন দাস। একজন জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক। আরেকজন জাতীয় দলের অধিনায়ক। দল নির্বাচন নিয়ে দুজন দুই মেরুতে। কেউ কাউকেই সম্মান দিয়েও কথা বলছেন না।
মাঠে সেই বিরোধের কী প্রভাব পড়েছে? কিংবা ড্রেসিংরুমে? উপমহাদেশের ক্রিকেটের যে সংস্কৃতি, আরও গভীরে গেলে, বাংলাদেশের ক্রিকেটের যে সংস্কৃতি তাতে দল নির্বাচনের মতের পার্থক্য নতুন কোনো ঘটনা নয়। কিন্তু নির্বাচক-অধিনায়ক প্রক্যাশেই একে অপরকে দোষারোপ করছেন তা কিছুটা বিরল। মাঠের বাইরে এই অস্থিরতার প্রভাব কি দলের ভেতরে পড়ছে?
আরো পড়ুন:
লিটনের কাঠগড়ায় শুরুর ব্যাটিং
বিব্রতকর পরাজয়ের সঙ্গে মিলল ‘ভুয়া, ভুয়া’ দুয়োধ্বনি
ওই সংস্কৃতির জোর দিয়েই বলা যায়, বাইরের অস্থিরতার বড় প্রভাব পড়েছে দলের ভেতরেও। জয়-পরাজয় ছাপিয়ে সেই অস্থিরতাই বড় আতঙ্কের নাম। যদিও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ব্যাট হাতে দ্যুতি ছড়ানো তাওহীদ হৃদয় বিষয়টি স্বীকারই করলেন না, ‘‘দল তো ওয়েল সেট।’’
তাওহীদ অবশ্য দলের কম্বিনেশন নিয়ে ওয়েল সেটের কথা বলেছেন। কিন্তু সেই কম্বিনেশনের কারণেই তো এতো অস্থিরতা, বিরোধ। শামীম হোসেন পাটোয়ারীকে দলে না নেওয়াতে নির্বাচক-অধিনায়কের বিরোধ। বিশ্বকাপের আগে শেষ সিরিজে যা প্রকট আকারেই ধারণ করলো। এই সময়ে দলের এমন বিবর্ণ রূপ দেখে শঙ্কার জায়গা আছে বটে।
অথচ এই বছরই টানা চারটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। পারফরম্যান্সের সূচক উঠা-নামা করলেও ভারসাম্যপূর্ণ দল গড়ে তুলতে পেরেছিলেন অধিনায়ক-কোচ। কিন্তু সেই দলেই এখন নানা কারণে জটিলতা দেখা দিয়েছে। তবে তাওহীদের কথায় আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি মনে হলো না মোটেও, “আমার কাছে এরকম মনে হয়নি (বিশ্বকাপের আগে শঙ্কা জাগছে)। দল তো ওয়েল সেট। আপনি যদি দেখেন, সব ক্রিকেটার গত এক বছরে অনেকগুলো ম্যাচ খেলেছে। সবাই পর্যাক্রমে খেলেছ ও ভালো খেলছে। সব ক্রিকেটার যদি সুযোগ পায়, অবশ্যই কাজে লাগাবে আর প্রত্যেকটা ক্রিকেটার চায় যে, সুযোগ যখনই আসুক, সেটা যেন ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারে।”
এ বছর টি-টোয়েন্টিতে বেশি সময় দিয়েছে বাংলাদেশ। ২০০৬ সালে টি-টোয়েন্টিতে পা রাখার পর এবারই সবচেয়ে বেশি ২৮ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। এর আগে গত বছর খেলেছিল ২৪ ম্যাচ। এ বছর ২৮ টি-টোয়েন্টির ১৩টিতে জিতেছে বাংলাদেশ। হেরেছে ১৪টিতে। ১টিতে ফল আসেনি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশের পর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই হার। টানা চার টি-টোয়েন্টিতে হারের পর দল লাগছে অগোছালো। সাম্প্রতিক সময়টা খারাপ লেগেও তাওহীদ মনে করিয়ে দিলেন, অতীতের সাফল্য। সঙ্গে একটি জয়ই পুরো দলকে ছন্দে ফেরাবে বলে বিশ্বাস তার, ‘‘দলটা ভালো ছিল। এখনও ভালোই আছে। আমরা কখনো তো ভাবছি না যে, দল আমাদের ডাউন হয়ে গেছে। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে আমরা টানা চারটা সিরিজ জিতেছি। একটা-দুইটা সিরিজ বা চারটা-তিনটা ম্যাচ খারাপ যেতে পারে। টি-টোয়েন্টি খেলাটা ছন্দের খেলা খেলা। আমরা হারছি, আবার যখন দেখবেন যে আমরা জিততে শুরু করি তখন দেখবেন কন্টিনিউ চলতে থাকবে।’’
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
এক ম্যাচে ১৭ লাল কার্ড!
বলিভিয়ার ঘরোয়া ফুটবলে যেন বাস্তবের চেয়ে সিনেমার দৃশ্যই দেখা গেল। কোপা বলিভিয়ার কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগ শেষে ফুটবল মাঠ মুহূর্তেই রূপ নিল সংঘর্ষের ময়দানে। রেফারির ৯০ মিনিটের বাঁশি শেষ হতেই মাঠজুড়ে শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি, ঘুষাঘুষি আর বিশৃঙ্খলা। শেষ পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নামতে হলো টিয়ারগ্যাস নিয়ে। ফুটবল ইতিহাসে নিশ্চয়ই ব্যতিক্রমী ঘটনা!
ব্লুমিং ও রিয়াল ওরুরোর লড়াই আগে থেকেই উত্তাপ ছড়াচ্ছিল। প্রথম লেগে ২–১ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল ব্লুমিং। দ্বিতীয় লেগে ২–২ গোলে ড্র করেই তারা জায়গা করে নেয় সেমিফাইনালে। কিন্তু মাঠের লড়াই শেষ হলেও আসল ড্রামা শুরু হয় শেষ বাঁশির পর।
আরো পড়ুন:
মেসি জানালেন, ‘খুব শিগগিরই দেখা হবে ভারত’
ছোটদের বিশ্বকাপে পর্তুগাল চ্যাম্পিয়ন, রোনালদোর অভিনন্দন
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ওরুরোর সেবাস্তিয়ান জেবায়োসকে প্রথমে শান্ত করার চেষ্টা করলেও তিনি বারবার প্রতিপক্ষের দিকে ফিরে গিয়ে মারমুখী আচরণ করেন। এরপর যোগ দেন হুলিও ভিয়াও। তিনিও হাত চালাতে কসুর করেননি। মুহূর্তেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
হট্টগোল থামানোর চেষ্টা করতে গিয়ে বিপদে পড়েন ওরুরো কোচ মার্সেলো রবলেদো। জাতীয় দলের কোচিং স্টাফের এক সদস্যের সঙ্গে তীব্র বাকবিতণ্ডার মাঝে ধাক্কা খেয়ে তিনি পড়ে যান। মাথা ও কাঁধে আঘাত লাগায় তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হয়।
সহিংসতা যখন আরও বাড়ছে, তখন মাঠে প্রবেশ করে প্রায় ২০ জন পুলিশ সদস্য। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাধ্য হয়েই টিয়ারগ্যাস ছুড়ে দাঙা থামায় তারা। এরই মধ্যে সতর্ক ব্যবস্থা হিসেবে ব্লুমিং কোচ মৌরিসিও সোরিয়া নিজের দলকে দ্রুত ড্রেসিং রুমে পাঠিয়ে দেন।
অতঃপর রেফারি রেকর্ড সংখ্যক ১৭টি লাল কার্ড দেখান। টুর্নামেন্ট কর্তৃপক্ষ পুরো ঘটনায় জড়িত কমপক্ষে ছয়জন খেলোয়াড়কে তাৎক্ষণিকভাবে নিষিদ্ধ করেছে। সহিংস আচরণের দায়ে গ্যাব্রিয়েল ভালভার্দে, রিচেট গোমেজ, ফ্রাঙ্কো পসে, রবার্তো মেলগার, সিজার রোমেরো ও লুইস সুয়ারেজকে শাস্তির মুখে পড়তে হয়।
শুধু ফুটবল নয়, বলিভিয়ার এই ম্যাচ যেন আচমকা এক সামাজিক বিশৃঙ্খলার প্রতিচ্ছবি। যেখানে জয়-পরাজয়ের চেয়ে বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে নিয়ন্ত্রণ হারানো আবেগ।
ঢাকা/আমিনুল