খাগড়াছড়ির বিস্তীর্ণ মাঠে সোনালি ধানের হাসি
Published: 28th, November 2025 GMT
খাগড়াছড়ির বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে গালিচার মতো কেবলই ধান আর ধান। রোদ গায়ে মাখা ধান দূর থেকে অনেকটাই সোনার মতো দেখচ্ছিল। এই ধান কাটতে কাক ডাকা কুয়াশা মোড়ানো ভোর থেকেই মাঠে কাজ শুরু করেছেন কৃষকরা। তাদের অনেকেই আঁটি বাঁধা পাকা ধান ঘরে তুলতে কাঁধে নিয়ে ছুটতে দেখা গেছে।
কৃষকরা বলছেন, গত বছর থেকে এই বছর আমন ধানের অনেক ভালো ফলন হয়েছে। এর মূল কারণ ছিল, অনুকূল আবহাওয়া এবং সময় মতো বৃষ্টি। বাজারে ন্যায্য মূল্য পাবেন এমনটি আশা তাদের।
আরো পড়ুন:
কড়াইল অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা নিশ্চিতের আশ্বাস প্রধান উপদেষ্টার
বঞ্চিত এসআই–সার্জেন্টদের যোগদানে প্রধান উপদেষ্টার চূড়ান্ত অনুমোদন দাবি
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে খাগড়াছড়িতে ২৯ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল। জমি আবাদ হয়েছে ২৯ হাজার ৪১০ হেক্টর। ধান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৫ হাজার ২১৮ টন।
সরেজমিনে দেখা যায়, কৃষকদের হাঁকডাকে মুখর চারদিক। জমি থেকে ধান কাটা ও ঘরে তোলার ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। তাদের অনেককেই ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজ করছিলেন। সোনালি ধানের গন্ধে ভরে উঠেছে গ্রামীণ সব জনপদ। সবখানেই উৎসবের আমেজ।
খাগড়াছড়ি সদরের গোলাবাড়ী এলাকার কৃষক নিয়হ্লামং মারমা বলেন, “এ বছর আবহাওয়া এবং সময় মতো বৃষ্টি হওয়ায় আমন ধানের চাষ ভালো হয়েছে। এ জন্য আমরা খুশি। কারণ গত বছর বারবার বন্যার কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলাম।”
ঠাকুরছড়া এলাকার চিজি পরিমল ত্রিপুরা বলেন, “ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এখন জমি থেকে ধান কাটা, শুকানো ও মাড়াইয়ের কাজ চলছে। সরকারিভাবে যাতে ধানের দাম নির্ধারন এবং সংগ্রহ যাতে জোরদার করা হয় সেই দাবি জানাচ্ছি।”
খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক নাসিরুদ্দিন জানান, নিবিড় তত্ত্বাবধান, অনুকূল আবহাওয়া, দেশীয় ও হাইব্রিড ধানের যথাযথ চাষ এবং সঠিক বালাইনাশক প্রয়োগের কারণে এ বছর ধান চাষে সাফল্য পেয়েছেন চাষিরা। গত বছর পরপর ৪-৫ বার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন তারা।”
তিনি বলেন, “আমন ধানের এ বাম্পার ফলন শুধু কৃষকের মুখে হাসি নয়, পুরো দেশের খাদ্য নিরাপত্তায়ও আনবে স্বস্তির বার্তা।”
ঢাকা/রূপায়ন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ঝুঁকি নিয়ে আগাম টমেটো চাষ, লাভবান চাষিরা
কেউ খেতে জীবাণুনাশক ছিটাচ্ছেন, কেউ পরিচর্যায় ব্যস্ত। আবার কোথাও তোলা হচ্ছে কাঁচা-পাকা টমেটো। চাষিরাও এসব টমেটো বাছাই করে খেতের পাশেই স্তূপ করছেন। সব মিলিয়ে যেন উৎসবের আমেজ। চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা ও সরল ইউনিয়নের গ্রামগুলোর বর্তমান চিত্র এটি। এই এলাকায় ঝুঁকি নিয়ে আগাম টমেটো চাষ করে লাভবান হয়েছেন চাষিরা।
অন্য বছর অক্টোবরে টমেটো চাষ শুরু হতো। কারণ, এ সময়টাতে সাধারণত বৃষ্টি হয় না। তবে এবার আগস্টেই শুরু হয়েছে টমেটো চাষ। বৃষ্টির পানিতে ক্ষতি রোধে চাষিরা রেখেছেন বিশেষ ব্যবস্থাও। পানি জমে যেন টমেটোগাছের ক্ষতি না হয় এ জন্য খেতজুড়ে কেটেছেন সেচের নালা। আর এটিই সাফল্য এনে দিয়েছে।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, গন্ডামারা, সরল, বাহারছড়া, বৈলছড়ী, খানখানাবাদ, কাথরিয়া, শীলকূপ, চাম্বল ও পুইছুড়ি ইউনিয়নে এবার ৪১৫ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ হয়েছে। এর মধ্যে গন্ডামারা ও সরল ইউনিয়নেই চাষ হয়েছে ৩৫০ হেক্টর জমিতে। এসব জমিতে ‘প্রফিট আর্লি’, ‘দুর্জয়’ ও ‘বাহুবলী’ জাতের উচ্চফলনশীল টমেটো চাষ করছেন কৃষকেরা। অন্য বছরের তুলনায় ভালো ফলন আর বাজারদর বেশি থাকায় কৃষকের প্রত্যাশাও বেড়েছে।
গন্ডামারা, সরল, বাহারছড়া, বৈলছড়ী, খানখানাবাদ, কাথরিয়া, শীলকূপ, চাম্বল ও পুইছুড়ি ইউনিয়নে এবার ৪১৫ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ হয়েছে। এর মধ্যে গন্ডামারা ও সরল ইউনিয়নেই চাষ হয়েছে ৩৫০ হেক্টর জমিতে। এসব জমিতে ‘প্রফিট আর্লি’, ‘দুর্জয়’ ও ‘বাহুবলী’ জাতের উচ্চফলনশীল টমেটো চাষ করছেন কৃষকেরা।উপজেলার যে এলাকাটিতে আগাম টমেটো চাষ হয়েছে এটি উপকূলীয় অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্ষা পুরোপুরি শেষ হওয়ার আগেই আগস্টের শুরুতে বিশেষ পদ্ধতিতে টমেটো রোপণ শুরু করেন তাঁরা। এর মধ্যে ভারী বৃষ্টিও হয়েছে। তবে চাষিরা বৃষ্টিতে জমা পানি সেচে খেত থেকে বের করেছেন। কারণ, জমিতে পানি জমে থাকলে টমেটোর ফল ভালো হয় না। চার মাস পর এখন ফল পাচ্ছেন তাঁরা। অন্য বছর ছোট আকারে চাষাবাদ হলেও এ বছর হয়েছে বাণিজ্যিকভাবে।
খেত থেকে সংগ্রহ করা টমেটো বিক্রির জন্য বাছাই করা হচ্ছে। সম্প্রতি বাঁশখালীর গন্ডামারা ইউনিয়নের পাওয়ার প্ল্যান্ট এলাকায়