জয়পুরহাটে বয়সের জটিলতায় অনেকেই ষষ্ঠ শ্রেণিতে অনলাইন ভর্তির আবেদন করতে পারছে না। নীতিমালা অনুযায়ী, আবেদন করতে হলে বয়স ১১ থেকে ১২ বছরের মধ্যে থাকতে হয়। কিন্তু অনেকের বয়স ১২ বছর পেরিয়ে যাওয়ায় অনলাইন সিস্টেম ফরম গ্রহণ করছে না। এতে অভিভাবকেরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। অনলাইনে ভর্তি আবেদনের শেষ তারিখ আগামী ৫ ডিসেম্বর।

অভিভাবকেরা দ্রুত বয়সসীমা শিথিল বা বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, শিশুরা কোনো দোষ করেনি। তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে এমন অনিশ্চয়তা মেনে নেওয়া যায় না। 

জয়পুরহাট শহরের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের সামনে গিয়ে দেখা যায়, অনেক অভিভাবক মুঠোফোন ও সাইবার ক্যাফেতে ভিড় করছেন। কেউ কেউ সন্তানের ভর্তির আবেদন করতে পারছেন না, আবার কেউ বারবার চেষ্টা করেও সিস্টেম থেকে ‘অযোগ্য’ বার্তা পাচ্ছেন।

বয়সের কারণে গত কয়েক দিনে অনলাইনে দেড় শ শিক্ষার্থীর ভর্তির আবেদন করতে পারেননি। -সাদ্দাম হোসেন, কম্পিউটার কম্পোজ ও ফটোস্ট্যাটের দোকানদার 

আক্কেলপুর পৌর শহরের রেলগেট এলাকার কম্পিউটার কম্পোজ ও ফটোস্ট্যাটের দোকানদার সাদ্দাম হোসেন বলেন, বয়সের কারণে গত কয়েক দিনে অনলাইনে দেড় শ শিক্ষার্থীর ভর্তির আবেদন করতে পারেননি। অভিভাবকদের অভিযোগ, বয়স মাত্র কয়েক মাস বা কয়েক দিন বেশি হওয়ায় ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হওয়া অযৌক্তিক। আক্কেলপুর পৌর শহরের বাসিন্দা ইলিয়াছ আহমেদ কাফি বলেন, ‘আমার মেয়ের জন্মসনদে ৮ নভেম্বর ২০১৩ সাল উল্লেখ আছে। বয়স বেশি হওয়ার কারণে অনলাইনে ভর্তির আবেদন গ্রহণ হচ্ছে না।’

আক্কেলপুর সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল ফজল মো.

রায়হান বলেন, ‘বয়সের কারণে ১২ জন শিক্ষার্থী ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন গ্রহণ হয়নি। বয়স সংশোধনের জন্য ইউএনও স্যারের কাছে আবেদন করেছি।’

জয়পুরহাট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহফুজুর রহমান তালুকদার বলেন, বয়সের জটিলতায় তাঁদের বিদ্যালয়ের অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন করতে পারেনি। এই শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা উচ্চ আদালতে রিট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। 

বয়সের কারণে অনেক শিক্ষার্থী অনলাইনে ভর্তির আবেদন করতে পারেনি বলে স্বীকার করেন জয়পুরহাট জেল মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রুহুল আমিন। তিনি বলেন, ষষ্ঠ শ্রেণির ভর্তি নীতিমালা শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রণয়ন করে দিয়েছে। অনলাইন সিস্টেম সেই নীতিমালার ভিত্তিতেই চলছে। এখানে স্থানীয়ভাবে কিছু করার সুযোগ নেই। ইতিমধ্যে বিষয়টি তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। 

জয়পুরহাট সদর ইউএনও রাশেদুল ইসলাম বলেন, বয়সের জটিলতার কারণে অনেক শিক্ষার্থী ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারেনি বলে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা তাঁকে জানিয়েছেন। অভিভাবকেরা ইউপি কার্যালয়ে গিয়ে বয়স সংশোধন করতে চাইছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ভর ত

এছাড়াও পড়ুন:

৮ খাতের পণ্য নিয়ে ঢাকায় তিন দিনের বৈশ্বিক সোসিং এক্সপো ১–৩ ডিসেম্বর

বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি সম্ভাবনা তুলে ধরতে ঢাকায় প্রথমবারের মতো সরকারি উদ্যোগে আয়োজন করা হচ্ছে ‘গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো’। আগামী ১ থেকে ৩ ডিসেম্বর রাজধানীর পূর্বাচলে অবস্থিত বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে।

তিন দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী আয়োজন করেছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আগামী ১ ডিসেম্বর বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের প্রদর্শনীটি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। এ ছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীর বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

প্রদর্শনী আয়োজন উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ইপিবি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে সোর্সিং এক্সপোর বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ হাসান আরিফ। তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি সম্ভাবনা তুলে ধরা ও আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদার করা এ আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য।

সংবাদ সম্মেলনে ইপিবির মহাপরিচালক বেবী রানী কর্মকার ও মো. আকতার হোসেনসহ অন্য পরিচালকেরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে এক্সপোর লক্ষ্য, সার্বিক প্রস্তুতি, বিদেশিদের অংশগ্রহণ ও রপ্তানি খাতের সম্ভাবনা বাড়ানোর নানা কৌশলের কথা তুলে ধরা হয়।

ইপিবি জানিয়েছে, সোর্সিং এক্সপোতে বাংলাদেশের আটটি গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি খাতের পণ্য প্রদর্শন করা হবে। খাতগুলো হচ্ছে তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, কৃষিজাত পণ্য, প্লাস্টিক ও কিচেনওয়্যার, হোম ডেকর ও ফার্নিচার, ওষুধ ও তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি)। প্রদর্শনীতে এসব খাতের শতাধিক প্রতিষ্ঠান, বহুজাতিক কোম্পানি, পাইকারি ব্যবসায়ী ও সরবরাহ খাতের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন বলে জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারের এক্সপোতে আফগানিস্তান, চীন, ইরান, জাপান, মিয়ানমার, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের ক্রেতা, বিনিয়োগকারী ও সোর্সিং প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে। তারা পণ্য ও সেবা নিয়ে সভা (বিটুবি), পণ্য কেনা ও চুক্তি করতে পারবে। সোর্সিং এক্সপোতে বিষয়ভিত্তিক ১০টি বিশেষ সেমিনার, অনলাইন ও অফলাইন বিজনেস-টু-বিজনেস (বিটুবি) বৈঠক, দেড় শতাধিক স্টল, নেটওয়ার্কিং ডিনার ও ফ্যাশন শোসহ নানা আয়োজন থাকবে।

ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ বলেন, গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো বাংলাদেশের বৈচিত্র্যময় রপ্তানি খাতকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরবে। এতে নতুন বাজার অনুসন্ধান, দীর্ঘমেয়াদি ব্যবসায়িক চুক্তি, ব্র্যান্ড অংশীদারত্ব ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় দেশের অবস্থান শক্তিশালী করার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

ইপিবি প্রত্যাশা করছে, এই প্রদর্শনী দেশের রপ্তানি খাতের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এবং বাংলাদেশকে আরও নির্ভরযোগ্য সোর্সিং কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে সহায়তা করবে। ভবিষ্যতে প্রতিবছর এই সোর্সিং এক্সপো অব্যাহত রাখা হবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে ইপিবি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ