জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেলের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর সমর্থিত প্যানেল ‘মাওলানা ভাসানী ব্রিগেড’। এ ছাড়া শিক্ষকদের আচরণবিধি লঙ্ঘনের প্রতিবাদ, পূর্বঘোষিত তারিখ ২২ ডিসেম্বরেই নির্বাচন আয়োজন, ক্যাম্পাসের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর সংস্কার এবং পক্ষপাতমুক্ত নির্বাচন নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে প্যানেলটি।

সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমের সামনে এসব দাবি তুলে ধরেন প্যানেলের প্রার্থীরা। এ সময় তাঁরা জানান, জকসু নির্বাচন, প্রার্থীদের আচরণবিধি লঙ্ঘন, ভূমিকম্প ও দুর্যোগকালীন ছুটি, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা—এমন প্রতিটি বিষয়ই আজ আলোচনার দাবি রাখে। গত ২১ নভেম্বর বাংলাদেশের মানুষ একটি বিপজ্জনক ভূমিকম্প অনুভব করেন। প্রশাসনের উচিত ছিল নিরাপত্তাবিধানে ক্যাম্পাসে যেসব ভবন ঝুঁকিপূর্ণ, সেসব ভবনকে ভূমিকম্প–সহনশীল করতে সংস্কার করা এবং প্রয়োজনীয় উদ্ধার কার্যক্রম চালু করে আবার একাডেমিক কার্যক্রম চালু করা। এ ক্ষেত্রে প্রশাসন তার চরম অযোগ্যতা ও দায়িত্বহীনতার পরিচয় রেখেছে।

ভাসানী ব্রিগেডের প্রার্থীরা অভিযোগ করেন, গত ২৩ নভেম্বর আয়োজিত কনসার্টে ছাত্রদল–সমর্থিত প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী খাদিজাতুল কোবরা এবং সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদপ্রার্থী তাকরিম আহমেদ অর্থ সহযোগিতার ঘোষণা দিয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। একই প্যানেলের ভিপি প্রার্থী গত ২৪ নভেম্বর খাবার বিতরণ করে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। তাঁরা আরও অভিযোগ করেন, গত ২৪ নভেম্বর দূরপাল্লার শিক্ষার্থীদের বাড়িতে যাওয়ার জন্য বাস সরবরাহ করে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেল। দুই কার্যক্রমই আচরণবিধির লঙ্ঘন।

মাওলানা ভাসানী ব্রিগেড প্যানেল থেকে জিএস পদপ্রার্থী ইভান তাহসীভ বলেন, জকসু হতেই হবে এবং সময়মতোই হতে হবে। কেননা জকসু শিক্ষার্থীদের বৃহত্তর ক্ষমতায়ন হিসেবে কাজ করবে। অনেক অপশক্তি আছে, যারা ক্যাম্পাসের গণতান্ত্রিক রূপায়ণ সত্যিকার অর্থেই চায় না। সেই শক্তিকে প্রতিহত করতেই সময়মতো একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হওয়াটা জরুরি।

অভিযোগের বিষয়ে ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী এ কে এম রাকিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভূমিকম্প পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় শিক্ষার্থীদের বিষয়ে দৃষ্টি দিয়েছি। সে জন্য আমরা দূরপাল্লায় যাতায়াতের জন্য বাসের ব্যবস্থা করেছি। বিষয়টি মানবিক দৃষ্টি থেকে আমরা দিয়েছিলাম। এটা কোনো প্যানেলের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি। সেটা ছাত্রদলের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে।’

ছাত্রশিবির–সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী রিয়াজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথমত, ওই পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় সকালে আমরা এ উদ্যোগ নিয়েছিলাম। দ্বিতীয় বিষয় হলো নির্বাচন কমিশনকে জিজ্ঞেস করেছিলাম বাস দেওয়া যাবে কি? তারা আমাদের জানিয়েছিল ক্যাম্পাসের ভেতরে দেওয়া যাবে না। তৃতীয় বিষয় হলো আমরা আচরণবিধি মেনে বাস দিয়েছিলাম। আমরা নিয়ম মেনে ক্যাম্পাসের বাইরে বাসের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম। এ ক্ষেত্রে আচরণবিধি লঙ্ঘিত হওয়ার কথা নয়।’

জকসুর নির্বাচন কমিশনার মো.

আনিসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘যেসব প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে, তাদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এই কয়েক দিনে যেসব অভিযোগ আমরা পেয়েছি, তার পরিপ্রেক্ষিতে প্যানেলে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে আমরা চিঠি দিয়েছি। অবশ্যই এর জবাব তিন দিনের মধ্যে দিতে হবে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র সমর থ ত প য ন ল পদপ র র থ আচরণব ধ ভ ম কম প ছ ত রদল

এছাড়াও পড়ুন:

‘আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে শোকজ ছাড়াই প্রার্থিতা বাতিল’

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেছেন, ‘‘নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে কাউকে ছাড় দেবে না কমিশন। এক্ষেত্রে আমরা কোনো শোকজ করব না। যে প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করবেন, তার প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যাবে।’’

সোমবার (১ ডিসেম্বর) নারায়ণগঞ্জ বন্দরে সায়রা গার্ডেনে ‌‘নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের চ্যালেঞ্জসমূহ নিরূপণ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ইসি আনোয়ারুল বলেন, ‘‘যেনতেনভাবে কোনো নির্বাচনের আয়োজন হবে না। যেখানে জরিমানা করা দরকার, জেল দেওয়া দরকার, ম্যাজিস্ট্রেটরা সবসময় তৎপর থাকবেন এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।’’

নির্বাচনি পোস্টারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘এবার নির্বাচনের সময় কোনো পোস্টার থাকবে না। তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে আমরা এ বিষয়ে কঠোর হবো। প্রার্থীদের সবার জন্য একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করার জন্য যা যা করার দরকার করব।’’

ভোটকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘‘কমিশনের একটি মনিটরিং সেল থাকবে। তারা আইনশৃঙ্খলা এবং প্রশাসনের সমন্বয়ে যে কোনো মুহূর্তে সহজে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। আমরা আশা রাখি, এবারের নির্বাচন একটি সর্বোত্তম নির্বাচন হবে।’’

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. হাসানুজ্জামান, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. রায়হান কবির, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সী প্রমুখ।

ঢাকা/অনিক/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করলেই প্রার্থিতা বাতিল : নারায়ণগঞ্জে ইসি আনোয়ারুল
  • নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করলেই প্রার্থিতা বাতিল : ইসি আনোয়ারুল
  • ‘আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে শোকজ ছাড়াই প্রার্থিতা বাতিল’