‘আজ (গতকাল সোমবার) গণিত পরীক্ষা ছিল। তবে হবে না, এটা জানতাম না। এসে দেখি, পরীক্ষা হচ্ছে না।’ খুলনা জিলা স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে প্রথম আলোকে বলছিল সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী সরফুদ্দিন আয়ান।

১ ডিসেম্বর সকালবেলায় স্কুলের গেটে গিয়ে ‘১ এপ্রিলের’ ধোঁকা খাওয়ার অনুভূতি নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়েছে আয়ানকে। তার মতো সারা দেশে হাজার হাজার ছেলেমেয়েকে অকালবোধনের মতো এই ‘অকাল এপ্রিল ফুল’ যাঁরা ‘উপহার’ দিয়েছেন, তাঁরা আর কেউ নন, তাঁরা তাদের শিক্ষক।

সকালে স্কুলে এসে ‘ধোঁকা খেয়ে’ বাড়ি ফেরার জন্য শিক্ষকদের কেউ কেউ অবশ্য আয়ানকেই দায়ী করে বসতে পারেন। বলতে পারেন, এক দিন আগেই তো পরীক্ষা হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বোকার মতো সে পরীক্ষা দিতে গেল কেন?

আরও পড়ুনভাত দেওয়ার মুরোদ না থাকা গোঁসাইয়ের কিল কেন শিক্ষকের পিঠে১৪ অক্টোবর ২০২৫

ঘটনা যা দাঁড়িয়েছে তাতে মনে হচ্ছে, আয়ানরা তো বটেই, আয়ানদের মা–বাবাও মহাবোকা। আর বিষয়বুদ্ধিসম্পন্ন হলেন তাঁদের শিক্ষকেরা! তা না হলে নিজেদের ‘বিসিএস ক্যাডারের মর্যাদা’ ও আর্থিক সুযোগ-সুবিধা আদায় করার জন্য তাঁরা শিক্ষার্থীদের এইভাবে ঢাল বানাতে পারতেন না।

ঘটনা হলো, বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি নামে যে সমিতি আছে, সেই সমিতির সদস্যরা পরোক্ষভাবে বলে দিয়েছেন, সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে তাঁরা আঙুল বাঁকা করবেন। সেই প্রধান ‘ঘি’ হলো সহকারী শিক্ষক পদকে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক‍্যাডারভুক্ত করে ‘মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের’ গেজেট প্রকাশ। এর পাশাপাশি আরও তিনটি দাবি বা তিন ধরনের ‘ঘি’ আছে। তাঁরা বলেছেন, তাঁদের দাবি না মানা হলে আজ সোমবার থেকে তাঁরা লাগাতার কর্মবিরতিতে যাবেন। আর সোমবারই ছেলেমেয়েদের বার্ষিক পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। এখানে ‘কর্মবিরতি’র মতো সুশীল কথার ‘বাংলা’ মানে হলো, ‘হয় দাবি মানো, নয়তো শিক্ষার্থীদের সব পরীক্ষা বন্ধ।’

দেখা যাচ্ছে, ৫ আগস্ট–পরবর্তী সরকারের আমলে আর যা-ই হোক, সব দাবিদাওয়ার আন্দোলন যে অতি উচ্চফলনশীল হয়েছে, তাতে সন্দেহ নেই।

শিক্ষকেরা বার্ষিক পরীক্ষা না নিয়ে কর্মবিরতি পালন করছেন। বাংলা বাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, সদরঘাট, ১ ডিসেম্বর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

রূপগঞ্জে সাংবাদিকদের সঙ্গে জামাতের মতবিনিময় সভা

রূপগঞ্জে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রূপগঞ্জ উপজেলা শাখা।  সোমবার (১ ডিসেম্বর) বিকালে মুড়াপাড়া বাজারস্থ জামায়াতের কার্যালয়ে এই সভার আয়োজন করা হয়।

নারায়ণগঞ্জ জেলা জামাতের সূরা সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে জেলা আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইসরাফিল হুসাইন এর সঞ্চালনায় প্রদান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ ১ রূপগঞ্জ আসনের জামাত সমর্থিত প্রার্থী আনোয়ার হোসেন মোল্লা।

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ছাত্র শিবিরের জেলা সভাপতি আকরাম হোসেন, উপজেলা পশ্চিম সেক্রেটারি হানিফ ভূঁইয়া, উপজেলা উত্তর সেক্রেটারি খাইরুল ইসলামসহ থানা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্যবৃন্দ।

সাংবাদিক সমাজের প্রতিনিধিত্বে ছিলেন রুপগঞ্জ সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি, রূপগঞ্জ প্রেস ক্লাবের আহ্বায়ক সদস্য নাজমুল হুদা, সাংবাদিক ফোরামের সহ-সভাপতি মাসুদ করিম, সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম, শফিকুল আলম মামুনসহ রূপগঞ্জের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার নবীন প্রবীন সাংবাদিক বৃন্দ।

সভায় বক্তারা বলেন, সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ। তাদের সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় দ্বন্দ্ব বা দূরত্ব তৈরি হলে প্রকৃত চিত্র বিকৃত হয় এবং জনগণের আস্থার সংকট দেখা দেয়। তাই রাজনীতি ও প্রশাসনের সকল অঙ্গনে সাংবাদিকদের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক বজায় রাখার ওপর জোর দেওয়া হয়।

নারায়ণগঞ্জ ১ রূপগঞ্জ আসনের জামাত সমিতির প্রার্থী আনোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, আমাদের দল প্রচার-প্রচারণা বা ব্যানার-ফেস্টুন নির্ভর রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়।

আমাদের মূল শক্তি হলো কর্মীদের আদর্শিক চেতনা, সাংগঠনিক কাঠামো এবং জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ। আমরা বিশ্বাস করি, কোনো দলই যদি জনগণের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করতে না পারে, তার কার্যকারিতা সীমিত থাকে।

তিনি আরও বলেন, তিনি বলেন আগামী প্রয়াস জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হলে, রূপগঞ্জের সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, মাদকসহ শীতলক্ষ্যার অতীত ঐতিহ্য ফিরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে কাজ করবেন।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ