পুরুষ ধর্ষণ ও পুরুষতন্ত্রের রাজকীয় নীরবতা
Published: 1st, December 2025 GMT
আজকাল ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুকের রিলসে একটা কথা ঘুরে বেড়ায়, ‘ইউ বিকাম হোয়াট ইউ মক!’ কোনো প্রবাদ বা বাক্য তো আমাদের বিশেষ কোনো ঘটনা, স্মৃতি, দুঃসহ অতীত মনে করিয়ে দিতেই পারে। আমার মনে পড়ে ২০১৯ সালের একটি ঘটনা।
২০১৯ সালে গাজীপুরের শ্রীপুরে জামাল উদ্দিনের মর্মান্তিক আত্মহত্যা বাংলাদেশের পুরুষতান্ত্রিক কাঠামো কীভাবে পুরুষদের বিরুদ্ধেও যেতে পারে, তার এক নির্মম উদাহরণ। তার অভিজ্ঞতা কেবল একটি অপরাধ বা ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি নয়, এটি এমন একটি সমাজব্যবস্থারও প্রতিফলন, যেখানে ‘পুরুষ সম্মান’ নামের বিমূর্ত ও অমানবিক একটি ধারণা অগ্রাধিকার পায়।
যে সংস্কৃতিতে মনের অনুভূতির প্রকাশকে পুরুষত্বের বিপরীত গুণ হিসেবে গণ্য করা হয়, সেই সমাজে যৌন সহিংসতার শিকার একজন পুরুষের মানসিক চাপ কতটা অসহনীয় হতে পারে, জামালের মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে সেই বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে।
অভিযোগ অনুযায়ী, সিয়াম, সাদেক মিয়া, রনি, পিন্টু, সজল ও শাওনের মতো পরিচিতদের নিয়ে একটি দল জামালকে কৌশলে একটি বনাঞ্চলে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে গণধর্ষণ এবং পুরো দৃশ্যটি মুঠোফোনে রেকর্ড করা হয়। এরপর ভিডিও প্রকাশের হুমকি দিয়ে তার কাছে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। সহজে অনুমান করা যায়, শারীরিক নির্যাতনের চেয়েও তাকে গভীরভাবে বিধ্বস্ত করে এই ব্ল্যাকমেলিং; কারণ বাংলাদেশের গভীরভাবে প্রোথিত পুরুষতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে যৌন সহিংসতার শিকার হওয়া একজন পুরুষের জন্য সামাজিক লজ্জা, অপমান এবং অসম্মানের চাপ অসীম।
যে সংস্কৃতিতে মনের অনুভূতির প্রকাশকে পুরুষত্বের বিপরীত গুণ হিসেবে গণ্য করা হয়, সেই সমাজে যৌন সহিংসতার শিকার একজন পুরুষের মানসিক চাপ কতটা অসহনীয় হতে পারে, জামালের মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে সেই বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে।বলা বাহুল্য, সেই চাপ, সেই ভয় এবং অপমানের সম্ভাব্য বিস্তার একটি মানুষের মানসিক সংকটকে দ্রুত অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে দিতে পারে। পরদিন সকালে আত্মহত্যা করার আগে পরিবারের সদস্যদের বিদায় জানানো তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তকে আরও করুণ এবং সমাজের প্রতি এক নীরব অভিযোগে পরিণত করে।
জামালের ঘটনা বাংলাদেশের এক নিষিদ্ধ বাস্তবতাকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসে—‘পুরুষ যৌন নির্যাতন।’
সমাজের গভীরে গেঁথে থাকা ভুল ধারণা, ‘পুরুষদের ধর্ষণ সম্ভব নয়’ একদিকে যেমন পুরুষ ভুক্তভোগীদের অমানবিক অভিজ্ঞতাকে অস্বীকার করে, অন্যদিকে তাদের নীরবতাকে স্থায়ী করে তোলে। এই নীরবতা শুধু লজ্জা বা সামাজিক বিচারভীতির কারণে নয়; এটি এমন একটি সামাজিক কাঠামোর ফল, যেখানে যৌন সহিংসতার শিকার হওয়া মানেই ‘পুরুষত্ব হারানো’র সমার্থক একটি সাংস্কৃতিক ধারণা, যা ভুক্তভোগীর সঙ্গে দ্বিতীয়বার সহিংসতা করে।
বাংলাদেশে পরিচালিত গবেষণাগুলো দেখায় যে পুরুষ যৌন নির্যাতনের অভিজ্ঞতা ভুক্তভোগীদের ওপর ভয়াবহ মানসিক প্রভাব ফেলে এবং প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ গুরুতর বিষণ্নতায় ভোগে। আত্মহত্যার প্রবণতাও অত্যন্ত উদ্বেগজনক। প্রায় এক-পঞ্চমাংশ অন্তত একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। অথচ এ ধরনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার হার মাত্র ১৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের হার প্রায় শূন্য।
‘পুরুষদের ধর্ষণ সম্ভব নয়’ এমন ধারণা একদিকে যেমন পুরুষ ভুক্তভোগীদের অমানবিক অভিজ্ঞতাকে অস্বীকার করে, অন্যদিকে তাদের নীরবতাকে স্থায়ী করে তোলে। এটি এমন সামাজিক কাঠামোর ফল, যেখানে যৌন সহিংসতার শিকার হওয়া মানেই ‘পুরুষত্ব হারানো’র সমার্থক একটি সাংস্কৃতিক ধারণা।আরও পড়ুনপুরুষ যখন পুরুষতন্ত্রের ‘ভিকটিম’০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫জামালের মৃত্যুর পর পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালানোর কথা জানায়। কিছু আলোচনা ও সংবাদ হলেও বিষয়টি দ্রুত জনসাধারণের দৃষ্টি থেকে সরে যায়। ২০২০ সালের অক্টোবরে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদিত হওয়ার পর যে জাতীয় প্রতিবাদ ও আলোচনার সূত্রপাত ঘটে, তা মূলত নারী ভুক্তভোগীদের কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়। পুরুষ যৌন সহিংসতা, তার সামাজিক কলঙ্ক এবং আইনি কাঠামোর অদৃশ্যতা, এই গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো তখনো অনালোচিত থেকে যায়, এমনকি এখনো তা মোটেই আলোচ্য নয়।
যে পুরুষতান্ত্রিক কাঠামো পুরুষকে ‘অজেয়’ ও ‘অদম্য’ হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছে, সেই একই কাঠামো শেষ পর্যন্ত পুরুষদের ওপরই সহিংস হয়ে ফিরে এসেছে।
সমাজ যে পুরুষত্বকে দুর্বলতা অস্বীকারকারী একটি শক্তির প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল, সেই মিথই পুরুষদের বাস্তব দুর্বলতাকে চরম নীরবতা, ভয়, লজ্জা এবং মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। ফলে সমাজ যাকে একসময় দুর্বলতা হিসেবে বিদ্রূপ করত, সেটি তার নিজেরই নির্মিত ফাঁদে পরিণত হয়েছে।
অপরাধীদের ক্ষেত্রেও একই সত্য প্রতিফলিত হয়। তারা যে আধিপত্য, ক্ষমতা ও ‘পুরুষালি শক্তি’র প্রদর্শনকে নিজেদের পরিচয়ের অংশ হিসেবে দেখেছিল, তা সমাজের দীর্ঘদিনের পুরুষতান্ত্রিক উপহাস ও ক্ষমতার রাজনীতিরই বিকৃত প্রতিফলন। এই ধারণা অন্যদেরকে ছোট করার, নিয়ন্ত্রণ করার ও দমন করার মাধ্যমে পুরুষত্ব প্রমাণের যে আচার সৃষ্টি করেছে, অপরাধীরা সেই আচরণই পুনরাবৃত্তি করেছে। অর্থাৎ তারা সেই রূপেই পরিণত হয়েছে, যেটিকে সমাজ একটি আদর্শ পুরুষত্ব বলে প্রচার করতে চেয়েছে, যদিও তা মূলত অমানবিক, সহিংস এবং ধ্বংসাত্মক।
যে সমাজ পুরুষ ভুক্তভোগীদের অভিজ্ঞতাকে ঠাট্টার বিষয় করেছে, সেই সমাজই আজ ভুক্তভোগীদের নীরবতার বোঝা বহন করছে। সাহায্য পেতে না পারা, কথা বলতে না পারা, ন্যায়বিচারের দ্বারস্থ হতে না পারা, এসবই সেই উপহাসের প্রতিক্রিয়া, যা বছরের পর বছর ধরে পুরুষদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।
‘ইউ বিকাম হোয়াট ইউ মক’—একটি সমাজ নিজের তৈরি মিথ্যে পৌরুষের সংস্কৃতির শিকার। আমার হাসি পায়, হাসি পায় লজ্জায়!
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৯ ক্রিকেটারের বিপিএলের নিলাম থেকে বাদ পড়ার ৩ কারণ
অবশেষে জল্পনাকল্পনা কিছুটা কাটিয়ে উঠেছে এবারের বিপিএল। বিসিবির দুর্নীতি দমন পরামর্শক অ্যালেক্স মার্শালের করা অধিকতর তদন্তের পর গত বিপিএলে ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার সন্দেহে ৯ ক্রিকেটারকে বাদ দিয়ে কাল নিলামের জন্য চূড়ান্ত খেলোয়াড় তালিকা প্রকাশ করেছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। আজ বিকেলে র্যাডিসন হোটেলে হবে দ্বাদশ বিপিএলের নিলাম।
আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মির্জা হুসাইন হায়দারের নেতৃত্বে বিসিবির তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ৯ জন স্থানীয় ও ১ জন বিদেশি ক্রিকেটারকে গত বিপিএলে ফিক্সিংয়ে সন্দেহভাজন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে সন্দেহভাজনদের তালিকায় নাম আছে ৬–৭ জন ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্মকর্তা, একজন কোচ ও একজন মিডিয়া ম্যানেজারের। তদন্ত কমিটির অপর দুই সদস্য ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবী ড. খালেদ এইচ চৌধুরী এবং সাবেক ক্রিকেটার শাকিল কাসেম।
চূড়ান্ত নিলাম তালিকায় না থাকা অভিযুক্ত ৯ ক্রিকেটারের মধ্যে প্রাথমিক তালিকায় ছিলেন ৮ জন। তাঁরা হলেন দুর্দান্ত রাজশাহীর এনামুল হক, শফিউল ইসলাম, সানজামুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান, ঢাকা ক্যাপিটালসের মোসাদ্দেক হোসেন ও আলাউদ্দিন বাবু এবং সিলেট স্ট্রাইকার্সের আরিফুল হক ও নিহাদুজ্জামান।
আরিফুল প্রথমে প্রাথমিক তালিকায় না থাকলেও পরে তাঁকে ঢোকানো হয়েছিল। এনামুল, মোসাদ্দেক, শফিউল, সানজামুল ও আরিফুল জাতীয় দলে খেলেছেন। জাতীয় দলে খেলা আরেক অভিযুক্ত সিলেট স্ট্রাইকার্সের আল–আমিন হোসেন প্রাথমিক তালিকাতে ছিলেন না, নেই চূড়ান্ত তালিকাতেও।
সূত্র জানিয়েছে, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে সন্দেহভাজন ক্রিকেটারদের মধ্যে আরও ছিলেন দুর্দান্ত রাজশাহীর সোহাগ গাজী ও ঢাকা ক্যাপিটালসে খেলা শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার থিসারা পেরেরা। তবে অ্যালেক্স মার্শালের তদন্তে ‘নিষ্কৃতি’ পাওয়ায় তাঁরা দুজনই চূড়ান্ত নিলাম তালিকায় জায়গা পেয়েছেন। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত হিসেবে এই ১১ ক্রিকেটারের নাম আসার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছে। এই ১১ ক্রিকেটার এবং কোচ–কর্মকর্তাসহ অভিযোগ আনা হয়েছে মোট ২০ জনের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুনবিপিএল নিলামের আগে সরাসরি চুক্তি করেছেন যাঁরা১১ ঘণ্টা আগেসূত্র জানিয়েছে, সন্দেহভাজন ক্রিকেটারদের মধ্যে একজন এবং কর্মকর্তাদের মধ্যে একই ফ্র্যাঞ্চাইজির দুজন আইসিসির ‘রেড ফ্ল্যাগ’ধারী। অর্থাৎ আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগের তালিকাতেও তাঁরা সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত।
আইসিসির ‘রেড ফ্ল্যাগ’ধারী ক্রিকেটারটি শুধু গত বিপিএলেই নয়, তার আগের বিপিএলেও সন্দেহজনক কর্মকাণ্ড করেছেন। যদিও তদন্ত কমিটিকে ওই ক্রিকেটার বলেছেন, তাঁকে আইসিসি কেন সন্দেহ করে, সেটা নাকি তিনি জানেন না। তিনিসহ সন্দেহভাজন ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ মূলত তিন ধরনের—খেলায় সুনির্দিষ্ট ঘটনা ঘটিয়ে সরাসরি ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকা, ফিক্সিংয়ে সহায়তা করা বা প্রস্তাব দেওয়া ও তথ্য গোপন করা।
‘রেড ফ্ল্যাগ’ধারী দুই কর্মকর্তাসহ আরও চারজন ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্মকর্তা, একজন কোচ, একজন মিডিয়া ম্যানেজার ও বিসিবির দুর্নীতি দমন বিভাগের এক কর্মকর্তার নামও আছে স্বাধীন তদন্ত কমিটির দেওয়া প্রতিবেদনে। তবে সবার বিরুদ্ধে সরাসরি ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগ করেনি কমিটি।
আরও পড়ুনব্যাট–প্যাড কিনতে পেছাচ্ছে বিপিএল২৭ নভেম্বর ২০২৫একটি ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকের বিরুদ্ধে যেমন অভিযোগ সঠিকভাবে ফ্র্যাঞ্চাইজি চালাতে না পারার। তাঁর দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে ফ্র্যাঞ্চাইজির খেলোয়াড় ও অন্য কর্মকর্তারা অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়ানোর সুযোগ পেয়েছেন বলে মনে করে কমিটি।
সন্দেভাজন মিডিয়া ম্যানেজারের বিরুদ্ধেও সরাসরি ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগ নেই বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। তবু তাঁকে নিয়ে সন্দেহের অন্যতম কারণ, প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত এলাকায় বিভিন্ন সময়ে তাঁর অনভিপ্রেত যাতায়াত। এ ছাড়া দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ আনা হয়েছে গত বিপিএলের সময় গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা বিসিবির দুর্নীতি দমন বিভাগের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
তদন্ত কমিটির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সদস্য কাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আমরা কিছু খেলোয়াড়–কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে তাদের ব্যাপারে অধিকতর তদন্ত প্রয়োজন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছি। পরে অ্যালেক্স মার্শালের তদন্তের ভিত্তিতে বিসিবি কিছু ক্রিকেটারকে চূড়ান্ত নিলাম তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে।’
আরও পড়ুনপ্রমাণ ছাড়াই কি ৭ ক্রিকেটারকে বিপিএল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, কী বলছে বিসিবি১২ ঘণ্টা আগেচূড়ান্ত নিলাম তালিকায় প্রাথমিক তালিকার কিছু ক্রিকেটারকে না রাখার ব্যাখ্যা দিয়ে বিসিবিও কাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে কয়েকজন খেলোয়াড়সহ কিছু ব্যক্তিকে এবারের বিপিএলে অংশ নিতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে অন্যান্য ঘরোয়া ক্রিকেটে আপাতত তাঁদের খেলতে বাধা নেই।
খেলোয়াড়দের বাইরে সন্দেহভাজনদের তালিকায় কারা আছেন, তা প্রকাশ না করলেও এবারের আসরে তাঁদের দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত না করতে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের জানিয়ে দিয়েছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল।
কাউন্সিলের সদস্যসচিব ইফতেখার রহমান কাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘যারা রেড ফ্ল্যাগড (সন্দেহভাজন) আছে, তারা দলের সঙ্গে থাকতে পারবে না। না মাঠে থাকতে পারবে, না ড্রেসিংরুমে থাকতে পারবে, না বাসে চড়তে পারবে, না হোটেলে থাকতে পারবে। এটাই নিয়ম, সারা বিশ্বে এইভাবেই ইন্টিগ্রিটি ইউনিট চলে।’
অভিযুক্তরা কী বলেনঅভিযুক্ত ক্রিকেটারদের দাবি, অভিযোগ প্রমাণের আগে নিলামের চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ দিয়ে তাঁদের ‘মানহানি’ করা হয়েছে। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে এনামুল প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘একটা প্রতিবেদন দিল আর বাদ দিয়ে দিল! দোষী না, কিন্তু বিপিএল খেলতে দেবে না—এটা কী হলো? কথা শুনে হাস্যকর মনে হচ্ছে।’
শফিউল বলেন, ‘আমি যদি অভিযুক্ত হই আমাকে প্রমাণ দেখাক। মানুষের সামনে প্রমাণ নিয়ে আসুক।’
সানজামুলের কথা, ‘বিসিবির কথা হচ্ছে দোষীও না, আবার দোষী। কী প্রমাণ করল সেটা বুঝলাম না। বলছে সব জায়গায় খেলতে পারব আবার বিপিএল খেলতে পারব না। যতটুকু জানি, যারা সাজাপ্রাপ্ত, তারা সব সময় নিষিদ্ধ থাকে।’
নিহাদুজ্জামান বলেছেন, ‘খুবই অপ্রত্যাশিত এটা। কখনো কল্পনা করিনি।’ নিলাম তালিকা থেকে বাদ পড়া মানতে পারছেন না মিজানুরও, ‘কোনোভাবে মেনে নিতে পারছি না। কী পদক্ষেপ নেব বা কী করব, সেটাও বুঝতে পারছি না।’
মোসাদ্দেক, বাবু, সোহাগ, আল–আমিন ও আরিফুলের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁদের পাওয়া যায়নি।
অভিযুক্তদের প্রতিক্রিয়ার জবাবে গভর্নিং কাউন্সিল সদস্যসচিব ইফতেখারের পাল্টা প্রতিক্রিয়া, ‘রেড ফ্ল্যাগড খেলোয়াড়দের আমরা নিলামের তালিকায় রাখব না, এটা সম্পূর্ণ আমাদের সিদ্ধান্ত। এটার এখতিয়ার আমাদের আছে। আমরা বিপিএল পরিচ্ছন্ন রাখতে চাই।’
আরও পড়ুনবিপিএল নিলামে জায়গা না পাওয়া অভিযুক্ত ক্রিকেটাররা কে কী বলছেন১০ ঘণ্টা আগে