এশিয়ার চার দেশে ঘূর্ণিঝড়, ভারী বৃষ্টি, বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে গেছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এসব দুর্যোগ কয়েকটি দেশে গত রোববার সন্ধ্যা থেকে কমে এসেছে। এ পরিস্থিতিতে আক্রান্ত এলাকায় উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম বাড়ছে। তবে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। চার দেশে মৃত্যুর সংখ্যা ১ হাজার ১৪০-এর বেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে আল–জাজিরার প্রতিবেদনে।

সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইন্দোনেশিয়া ও শ্রীলঙ্কা। উভয় দেশ আহত ও বন্যাদুর্গতদের উদ্ধার ও সহায়তার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে। মালয়েশিয়ার ক্ষয়ক্ষতি কম হলেও থাইল্যান্ডে প্রাণহানি ১০০ ছাড়িয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এসব দেশে টানা ভারী বর্ষণ শুরু হলেও এই দুই অঞ্চলে আবহাওয়ার পৃথক কারণে তা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এ সময়ে প্রায় পুরো শ্রীলঙ্কায় ভারী বৃষ্টি হলেও বাকি তিন দেশে তা হয়নি। ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রার বড় অংশ, দক্ষিণ থাইল্যান্ড ও উত্তর মালয়েশিয়ায় ভারী বৃষ্টি হয়েছে।

গতকাল পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়ার অন্তত ৬০৪ জন নিহতের খবর জানা গেছে। দেশটিতে গতকাল পর্যন্ত ৫০০ জনের বেশি নিখোঁজ রয়েছেন। কিন্তু দেশটির সরকার উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল পর্যন্ত জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেনি। শ্রীলঙ্কা আন্তর্জাতিক সহায়তার ঘোষণা দিলেও ইন্দোনেশিয়া তা-ও করেনি। তবে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে সামরিক হেলিকপ্টার ও জাহাজ ব্যবহার করছে।

গতকাল ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শনে উত্তর সুমাত্রায় যান। তিনি বলেন, আশা করা যায়, খারাপ সময় কেটে গেছে।

২০১৮ সালের সুলাওয়েসিতে ভূমিকম্প ও সুনামির পর চলমান দুর্যোগ ইন্দোনেশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়। ওই দুর্যোগে ২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিলেন।

বন্যার পানিবন্দী মানুষ উদ্ধার করতে হেলিকপ্টার ব্যবহার করছে শ্রীলঙ্কা। ‘ডিটওয়া’ ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে লন্ডভন্ড শ্রীলঙ্কায় গতকাল পর্যন্ত অন্তত ৩৬৬ জন নিহত হয়েছেন। গতকাল পর্যন্ত আরও অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। রোববার দিবাগত রাতে রাজধানী কলম্বোতে বন্যার পানি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল। তবে গতকাল সকাল থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। কিছু দোকান ও অফিস খুলতে শুরু করেছে।

শ্রীলঙ্কার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মধ্যাঞ্চলের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ক্ষয়ক্ষতি পুরোপুরি এখনো বোঝা যাচ্ছে না। কারণ, ধ্বংসযজ্ঞের কারণে উদ্ধারকার্য চালাতে বেগ পেতে হচ্ছে।

ড্রোনে ধারণা করা বন্যার পানিতে প্লাবিত একটি রিসোর্টের দৃশ্য। থাইল্যান্ডের হ্যাট ইয়াই ডিসট্রিক্টে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইন দ ন শ উদ ধ র

এছাড়াও পড়ুন:

আরো বাড়ল স্বর্ণের দাম, মঙ্গলবার থেকে কার্যকর

দেশের বাজারে আবারো স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৫৭৫ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ লাখ ১২ হাজার ১৪৫ টাকা নির্ধারণ করেছে সংগঠনটি।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, দেশের বাজারে প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ২ লাখ ১২ হাজার ১৪৫ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ লাখ ২ হাজার ৪৯৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৭৩ হাজার ৫৭২ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৪৪ হাজার ৪২৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এদিকে, বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরো জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

এর আগে, সবশেষ গত ২৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সেদিন ভরিতে ২ হাজার ৪০৩ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ লাখ ১০ হাজার ৫৭০ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ লাখ ১ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৭২ হাজার ২৮৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩২৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছিল ৩০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছর মোট ৮২ বার দেশের বাজারে সমন্বয় করা হলো স্বর্ণের দাম। যেখানে দাম বাড়ানো হয়েছে ৫৬ বার, আর কমেছে মাত্র ২৬ বার। আর ২০২৪ সালে দেশের বাজারে মোট ৬২ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছিল। যেখানে ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল, আর কমানো হয়েছিল ২৭ বার।

স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ২৪৬ টাকায়।

এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৪ হাজার ৪৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৩ হাজার ৪৭৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬০১ টাকায়।

চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৯ বার সমন্বয় করা হয়েছে রুপার দাম। এর মধ্যে বেড়েছে ৬ বার, আর কমেছে মাত্র ৩ বার। আর গত বছর সমন্বয় করা হয়েছিল ৩ বার।

ঢাকা/নাজমুল/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ