তফসিলি ব্যাংকের তালিকায় ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’, লাইসেন্স হস্তান্তর
Published: 1st, December 2025 GMT
অনুমোদনের পর আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন গঠিত ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক পিএলসি’র লাইসেন্স হস্তান্তর করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সোমবার (১ ডিসেম্বর) গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের উপস্থিতিতে লাইসেন্স হস্তান্তর কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।
সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারকের পক্ষে লাইসেন্স গ্রহণ করেন বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো.
আরো পড়ুন:
চূড়ান্ত লাইসেন্স পেল ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’
শিক্ষাবৃত্তি পেল প্রয়াত সাংবাদিকদের সন্তানরা
এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ড. মো. কবির আহাম্মদ, গভর্নর অফিসের কর্মকর্তারা এবং ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের লাইসেন্সিং শাখার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের পরিচালক বায়েজিদ সরকার সরকারি প্রতিনিধিদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে নবগঠিত ব্যাংকের লাইসেন্স হস্তান্তর করেন।
এদিকে, সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের এক সার্কুলারের মাধ্যমে তফসিলি ব্যাংক হিসেবে ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক পিএলসি’ কে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ১ ডিসেম্বর থেকে ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক পিএলসি’কে তফসিলি ব্যাংক হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হলো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক পিএলসির পরিশোধিত মূলধন ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের জমাসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য শর্ত পূরণ করায় গত ৩০ নভেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সভায় সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংককে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে লাইসেন্স হস্তান্তর করে এবং দেশে ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করতে চিঠি দেওয়া হয়।
নতুন এই ব্যাংক নিয়ে দেশে মোট ব্যাংকের সংখ্যা ৬৩টিতে দাঁড়াল। এতদিন দেশে বেসরকারি ব্যাংক ছিল ৪৩টি। যেহেতু পাঁচটি ব্যাংক একীভূত করে সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে সরকার। তাই বেসরকারি তফসিলি ব্যাংক পাঁচটি বাদ যাবে এবং এখন বেসরকারি খাতে তফসিলি ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়াবে ৩৮টিতে। আর সব মিলিয়ে তফসিলি ব্যাংকের সংখ্যা কমে দাঁড়াবে ৫৮টিতে । এর মধ্যে সরকারি মালিকানাধীন ব্যাংকের সংখ্যা ১০টি। এছাড়া রয়েছে বিদেশি নয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, মূলধন বিবেচনায় এটি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ রাষ্ট্র-মালিকানাধীন এবং শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক হিসেবে যাত্রা শুরু করছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বিশ্বাস করে, আমানতকারীরা তাদের আমানতের নিরাপত্তা সম্পর্কে সম্পূর্ণ আশ্বস্ত থাকবেন। কোনো আমানতকারী তার অর্থ হারাবেন না।
ঢাকা/নাজমুল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক প এলস তফস ল সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
চামড়া ও পোশাক পণ্যে আগ্রহ বেশি
দেশের রপ্তানির নতুন বাজার খুঁজতে ও রপ্তানিতে পণ্য বৈচিত্র্য আনতে আট খাতের পণ্য নিয়ে প্রথমবারের মতো গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো বা প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। প্রথম দিনেই দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীদের কাছে এসব খাতের বিভিন্ন পণ্য প্রদর্শন করেন ব্যবসায়ীরা। তিন দিনের এই প্রদর্শনীর প্রথম দিনে চামড়া ও পোশাক পণ্যের স্টলেই ছিল দর্শনার্থীদের বেশি ভিড়।
ঢাকার পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে আয়োজিত তিন দিনের এ প্রদর্শনী চলবে আগামীকাল বুধবার পর্যন্ত। এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যৌথভাবে। আজ সোমবার সকালে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী ও এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ।
প্রদর্শনীস্থল ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন স্টলে দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীরা পণ্যের মান ও দাম দেখছেন। চামড়া পণ্যের অ্যানেক্স লেদারের স্টলে বিদেশি ক্রেতাদের ভিড় ছিল বেশি। ১০ বছর ধরে চামড়াজাত পণ্যের ব্যবসা করছে হাজারীবাগের প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী মো. মোস্তফা দিপু জানান, বিদেশি ক্রেতারা পণ্যের মান ও দাম দেখছেন। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় পণ্য রপ্তানি করে প্রতিষ্ঠানটি।
প্রথমবারের এ প্রদর্শনীতে তৈরি পোশাক; চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য; পাট ও পাটজাত পণ্য; কৃষি ও কৃষিজাত পণ্য; প্লাস্টিক ও কিচেনওয়্যার; হোম ডেকর ও ফার্নিচার; ফার্মাসিউটিক্যাল এবং আইসিটি খাতের ১২৫টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। তিন দিনের এই আয়োজনে ১৪টি দেশের ৬১ জন বিদেশি প্রতিনিধির অংশ নেওয়ার কথা জানিয়েছে ইপিবি। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান, চীন, ইরান, জাপান, মিয়ানমার, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা।
পোশাক খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও তাদের পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছে প্রদর্শনীতে। তাদের একটি ফকির ফ্যাশন। প্রতিষ্ঠানটির স্টলে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা বিদেশি ক্রেতারা পণ্য দেখছিলেন। প্রতিষ্ঠানটির ডিজাইন বিভাগে কর্মরত আহসান হাবীব বলেন, ‘রাশিয়ান ক্রেতারা অনেকটা সময় নিয়ে আমাদের পোশাক দেখছেন। তাঁরা আমাদের কারখানায় যাওয়ারও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।’ এ স্টলে স্যুট, জ্যাকেটসহ বিভিন্ন ধরনের পোশাকের কাপড় প্রদর্শন করা হচ্ছে। আশির দশকে যাত্রা শুরু করা এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান রপ্তানি বাজার ইউরোপের বিভিন্ন দেশ।
তিন দিনব্যাপী এই আয়োজনে রয়েছে পণ্য প্রদর্শনীর পাশাপাশি খাতভিত্তিক ১০টি বিশেষ সেমিনার, আগ্রহী ক্রেতাদের অনলাইন ও অফলাইন সভা।
প্রদর্শনীতে আসা দেশি–বিদেশি দর্শনার্থীরা পাট ও পাটজাতের পণ্যের প্রতিও বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন আনা ফ্যাশনের বিক্রয় নির্বাহী আয়েশা আক্তার। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, দেশের ক্রেতারা টেবিলে সাজিয়ে রাখার বিভিন্ন পণ্যের প্রতি বেশি আগ্রহী। যার মধ্যে রয়েছে ফাইল, কলম ও চশমার হোল্ডার। এসব পণ্যের দাম ২০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত। আর বিদেশিরা বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন পাটের ব্যাগ ও বস্তার প্রতি। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির এসব পণ্য জার্মানি, বেলজিয়াম ও অস্ট্রেলিয়ায় রপ্তানি হচ্ছে বলেও জানান আয়েশা আক্তার।
প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের পর কিছু আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের পণ্য প্রবেশে শুল্ক সুবিধা থাকবে না। তাই নতুন নতুন বাজারে আমাদের প্রবেশ করতে হবে। সে জন্য এ আয়োজন শুধু সময় উপযোগী নয়, বরং কৌশলগতভাবেও গুরুত্বপূর্ণ।’
কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের একাধিক স্টল ঘুরে দেখা যায়, অনেকে কামরান মধুর স্টলে মধুর মান পরীক্ষা করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য সংস্থার অনুমোদন নিয়ে দেশটিতে মধু রপ্তানি করছে প্রতিষ্ঠানটি। অবশ্য এসব মধু ভিয়েতনাম থেকে পরীক্ষা করে তবেই রপ্তানির অনুমোদন পায়। দেশের পাঁচ শতাধিক খামারি থেকে মধু সংগ্রহের পর প্রক্রিয়াকরণ করে রপ্তানি করা হয় বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মো. আবদুল গফুর।