বিপিএলে অনেক প্রত্যাশা নিয়ে ফিরেছে দুর্বার রাজশাহী। দীর্ঘদিন পর ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে ফিরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল দলটি। তবে মাঠের পারফরম্যান্সে সেই প্রত্যাশার পুরোটা মেটাতে পারেনি তারা। এরই মধ্যে বেতন সংক্রান্ত জটিলতা, অনুশীলন বর্জনের ঘটনা এবং দল গঠন নিয়ে প্রশ্ন উঠে এসেছে।  

টুর্নামেন্টের মাঝপথে অধিনায়ক পরিবর্তনের মতো ঘটনাও ঘটেছে। এনামুল হক বিজয়ের পরিবর্তে নেতৃত্বের দায়িত্ব পেয়েছেন তাসকিন আহমেদ। তবে অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ম্যাচেই বড় ব্যবধানে হারতে হয়েছে তাকে। চিটাগাং কিংসের বিপক্ষে রাজশাহী হেরেছে ১১১ রানের বিশাল ব্যবধানে।  

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহীর দল গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে কিছুটা অসন্তোষ প্রকাশ করেন তাসকিন। তিনি বলেন, ‘আমি কোনো খেলোয়াড়কে ছোট করতে চাই না। তবে অন্যান্য দলের তুলনায় আমাদের দল কিছুটা দুর্বল। দেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে ৩-৪ জন ভালো আছে। বিদেশিদের মধ্যে রায়ান বার্ল আর হারিস ছাড়া তেমন বড় নাম নেই। দল যারা গঠন করেছে, হয়তো শুরুতে ভুল করেছে। একই সময়ে ২-৩টি লিগ চলায় ভালো খেলোয়াড়দের পাওয়া যায়নি।’  

তাসকিন জানান, দলের দুর্বলতা সত্ত্বেও সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করছেন তারা। তার কথায়, ‘আমাদের দল তুলনামূলক দুর্বল। মানসম্পন্ন খেলোয়াড়ের অভাব আছে। তবে যারা আছেন, তারাও খারাপ খেলোয়াড় নন। এখন ৩ ম্যাচ বাকি আছে, এর মধ্যে ২ ম্যাচ জিতলে কিছুটা সম্ভাবনা আছে। প্রসেসে থেকে সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করছি। তবে সত্যি বলতে, কিছু ম্যাচ খুব বাজেভাবে হেরেছি। আশা করি সামনে ভালো কিছু হবে।’  

অধিনায়ক পরিবর্তনের বিষয়ে তাসকিন বলেন, ‘এটা ম্যানেজমেন্ট ও মালিকপক্ষের সিদ্ধান্ত। বিজয় ভাইয়ের সঙ্গে আমি অনূর্ধ্ব-১৯ থেকে খেলছি। সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বাকি কয়টা ম্যাচ আমিই নেতৃত্ব দেব।’  

নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে আত্মবিশ্বাসী তাসকিন। চিটাগাং কিংসের বিপক্ষে দুই উইকেট শিকার করা এই পেসার বলেন, ‘রকেট সায়েন্স কিছু না। প্রতিটা ম্যাচে পরিস্থিতি বুঝে পরিকল্পনা কাজে লাগাতে চাই। গত কয়েক বছর ধরে একই প্রক্রিয়ায় আছি—কীভাবে নিজেকে আরও উন্নত করা যায়। স্বপ্ন বড়, তবে প্রতিদিন নতুন করে শুরু করি। ভালো দিন বা খারাপ দিন, প্রতিটিই আমার কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব প এল

এছাড়াও পড়ুন:

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন আসরে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা, খেলা কবে-কোথায়

অভাগাদের বছরে ‘কুফা’ কাটানোর তালিকায় সর্বশেষ নাম দক্ষিণ আফ্রিকা। লর্ডসে গতকাল অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে টেস্টের রাজদণ্ড হাতে পেয়েছে টেম্বা বাভুমার দল। প্রোটিয়াদের শ্রেষ্ঠত্বের মধ্য দিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসর শেষ হয়েছে।

তবে এর রেশ থাকতেই চলে এসেছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ আসর বা চক্র। ২০২৫-২৭ চক্রের শুরুটা হচ্ছে বাংলাদেশকে দিয়েই। আগামী ১৭ জুন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্ট খেলতে নামছে নাজমুল হোসেন দল। ২৫ জুন কলম্বোয় শুরু দুই দলের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে এটিই প্রথম সিরিজ।

ক্রিকেটের অভিজাত এই সংস্করণে বাংলাদেশ প্রায় ২৫ বছর পার দিলেও রেকর্ড ভালো নয়। তবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আসার পর থেকে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ক্রমশ উন্নতির দিকে।

প্রথম চক্রে (২০১৯-২১) কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় চক্রে (২০২১-২৩) মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে ঐতিহাসিক জয় বাদ দিলে বলার মতো কিছু নেই। প্রথম দুই চক্র শেষ করতে হয়েছে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থেকে।

তবে তৃতীয় চক্রে (২০২৩-২৫) বাংলাদেশের পারফরম্যান্স বেশ আশাব্যঞ্জক। ১২ টেস্ট খেলে জিতেছে চারটিতে। এর মধ্যে গত বছর পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে ধবলধোলাইয়ের সুখস্মৃতিও আছে। পয়েন্ট তালিকায় অবস্থান ছিল সাত নম্বরে; পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপরে। তিন চক্র মিলিয়ে বাংলাদেশ খেলেছে ৩১ টেস্ট। জিতেছে পাঁচটি, ড্র করে দুটি আর হেরেছে ২৪টি।

এবার কী হবে? শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার আগে মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে আশার বাণীই শুনিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল। তিনি বলেছেন, ‘গত চক্রে আমরা চারটা ম্যাচ জিতেছি। আমাদের একটু উন্নতি হয়েছে। লক্ষ্য থাকবে এই চক্রে কীভাবে আরও একটা-দুইটা ম্যাচ বেশি জিততে পারি।’ সেটা কতটুকু সম্ভব, সময়ই বলে দেবে।

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আগের তিন চক্রের মতো এবারও অংশ নিচ্ছে ৯ দল। প্রত্যেক দল খেলবে ছয়টি করে সিরিজ—তিনটি নিজেদের মাঠে, তিনটি প্রতিপক্ষের মাঠে। পয়েন্ট সিস্টেমেও কোনো পরিবর্তন আসেনি (জিতলে ১২, ড্র করলে ৪, টাই করলে ৬ পয়েন্ট)।

তবে এবার ম্যাচের সংখ্যা গত দুবারের চেয়ে একটি বেড়েছে। ফাইনালসহ মোট ম্যাচ হবে ৭১টি, সিরিজ ২৭টি। প্রত্যেক সিরিজেই সর্বনিম্ন দুই ও সর্বোচ্চ পাঁচটি ম্যাচ হবে।

চতুর্থ চক্রের ফাইনালও লর্ডসে আয়োজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই ম্যাচ হবে ২০২৭ সালের জুনে। ফাইনালের আগে শেষ সিরিজ হবে সেই বছরের মার্চে; পাকিস্তানে দুটি টেস্ট খেলতে যাবে নিউজিল্যান্ড।

এবার সবচেয়ে বেশি ২২ ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়া, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ ম্যাচ খেলবে ইংল্যান্ড। সবচেয়ে কম ১২টি করে ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা, যাদের সিরিজ দিয়েই শুরু হচ্ছে এবারের চক্র। ২০২৫ সালে বাংলাদেশ দলের টেস্ট সিরিজ এই একটিই। নাজমুল-মুশফিক-তাইজুলদের বাকি পাঁচ সিরিজই ২০২৬ ও ২০২৭ সালে। সব সিরিজেই দুটি করে ম্যাচ।

২০২৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ মার্চে, ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে। সেই বছরের আগস্টে দল যাবে অস্ট্রেলিয়ায়। ২০০৩ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সেটিই হবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের প্রথম টেস্ট সিরিজ।

এই চক্রে বাংলাদেশের ঘরের মাঠে দ্বিতীয় সিরিজ খেলবে ২০২৬ সালের অক্টোবরে; খেলতে আসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরের মাসে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। বাংলাদেশের শেষ সিরিজ দেশের মাটিতেই; ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে আসবে ইংল্যান্ড। ২০১৬ সালের পর এটিই হবে ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সিরিজ।

অনুপ্রেরণা জোগানোর মতো খবর হলো ২০২৫-২৭ চক্রে বাংলাদেশ যে ছয় দলের বিপক্ষে খেলবে, এর চারটির বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে তারা হারেনি। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ ড্র করেছে আর পাকিস্তানকে করেছে ধবলধোলাই (দুই ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয়)। সিরিজ হেরেছে শ্রীলঙ্কা আর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে।  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন আসরে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা, খেলা কবে-কোথায়
  • ব্রাজিলে আলোকাড়া রিবেইরোয় চোখ আর্সেনাল-নাপোলির
  • ব্রাজিলে আলো কাড়া রিবেইরোয় চোখ আর্সেনাল-নাপোলির
  • রিবেইরোয় চোখ আর্সেনাল-নাপোলির 
  • কোচ কাবরেরার পদত্যাগ দাবি, অনিশ্চয়তায় ভবিষ্যৎ