এবার যুক্তরাষ্ট্রেও দল হারালেন সাকিব
Published: 16th, February 2025 GMT
এমনটা নতুন নয়। ক্যারিয়ারের সেরা সময়েই খুব বেশি ফ্র্যাঞ্চাইজির রিটেইন (ধরে রাখা) খেলোয়াড়ের তালিকায় সাকিব আল হাসানের নাম দেখা যেত না। আর এখন তো তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ার একেবারে শেষের দিকে। সঙ্গে সন্দেহজনক বোলিং অ্যাকশনের জন্য বোলিংটাও করতে পারেন না। এতে যা হওয়ার, সেটাই হয়েছে।
গতকাল মেজর লিগ ক্রিকেটের দলগুলো আগামী মৌসুমের জন্য রিটেইন ক্রিকেটারদের নাম প্রকাশ করেছে। ২০২৪ সালে লস অ্যাঞ্জেলস নাইট রাইডার্সে খেলা সাকিবকে সামনের মৌসুমের জন্য ছেড়ে দিয়েছে (রিলিজ) দলটি।
মাত্র ৩ জন বিদেশি ক্রিকেটার ধরে রেখেছে শাহরুখ খানের দল। নাইট রাইডার্সের দুই ঘরের ছেলে সুনীল নারাইন ও আন্দ্রে রাসেলের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি পেসার স্পেনসার জনসনকে রেখে দিয়েছে তারা।
সাকিবের মতো ছেড়ে দেওয়া খেলোয়াড়ের তালিকায় আছেন জেসন রয়, ডেভিড মিলার, অ্যাডাম জাম্পা। শুধু এঁরাই নন, প্যাট কামিন্স (সান ফ্রান্সেসকো ইউনিকর্নস), ট্রাভিস হেডকেও(ওয়াশিংটন ফ্রিডম) ছেড়ে দিয়েছে তাদের দল। এর কারণটা অবশ্য পারফরম্যান্স নয়।
আগামী জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলবে অস্ট্রেলিয়া। একই সময়েই মাঠে গড়াবে মেজর লিগ ক্রিকেট। তাই টেস্ট রেখে এই লিগে খেলার সুযোগ নেই তাদের। যদিও ওয়াশিংটন ফ্রিডম স্টিভ স্মিথকে ছাড়েনি।
সর্বশেষ ফ্র্যাঞ্চাইজি ছেড়ে দিলেও সাকিবসহ রিলিজ পাওয়া সব ক্রিকেটারই একই টুর্নামেন্টে, এমনকি একই দলেও আবার খেলতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে ড্রাফটে বিক্রি হতে হবে তাঁদের। এ বছরের এমএলসি প্লেয়ার্স ড্রাফট অনুষ্ঠিত হবে ১৯ ফেব্রুয়ারি। তবে সাকিব দল পান কি না দেখার বিষয়।
গত মৌসুমে নাইট রাইডার্সের হয়ে মাত্র ৪ ম্যাচ খেলেছিলেন এই বাঁহাতি। উইকেট নিয়েছিলেন মাত্র ১ টি, রান ৬০। এখন তো বোলিংও করতে পারছেন না। ব্যাটসম্যান সাকিবের প্রতি দলগুলো কি আগ্রহ দেখাবে?
সাকিবকে সর্বশেষ মাঠে দেখা গেছে গত বছরের নভেম্বরে, আবুধাবি টি-টেন লিগে। ভারতে লিজেন্ড ৯০ লিগে খেলার কথা থাকলেও সেখানেও তাঁকে দেখা যায়নি। তিনি বাংলাদেশের হয়ে সর্বশেষ খেলেছেন গত অক্টোবরে, টেস্টে ভারতের বিপক্ষে।
২০২৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হওয়া এই অলরাউন্ডার রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশে আসতে পারছেন না। নভেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘরের মাঠে টেস্ট খেলে বিদায় বলতে চাইলেও সেটি পারেননি। সুযোগ পাননি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
আরো পড়ুন:
নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা
সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।
বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।
অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ