ধুনটে আওয়ামী লীগের ৬ নেতা-কর্মীর বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলার অভিযোগ
Published: 18th, February 2025 GMT
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় আওয়ামী লীগের ডাকা হরতালের সমর্থনে মশালমিছিলকে কেন্দ্র করে দলটির অন্তত ছয় নেতা-কর্মীর বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। গতকাল সোমবার রাতের বিভিন্ন সময়ে এসব ঘটনা ঘটে।
গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে ধুনট উপজেলা সদরের মডেল মসজিদের সামনে আওয়ামী লীগের ২০ থেকে ২৫ কর্মী-সমর্থক মাস্ক পরে একটি মশালমিছিল বের করেন। মিছিলটি ধুনট-গোঁসাইবাড়ি সড়কের চারতলা এলাকায় পৌঁছালে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা তাঁদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেন। পরে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বনি আমিনসহ কয়েকজন নেতা-কর্মীর বাড়িতে তাঁরা হামলা ও ভাঙচুর করেছেন বলে ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা অভিযোগ করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা অভিযোগ করেন, হরতালের সমর্থনে বের করা মশালমিছিলে বিএনপির ১৫ থেকে ২০ নেতা-কর্মী ধাওয়া দেন। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সোনামুখী সড়ক হয়ে পালিয়ে যান। তাঁদের ধরতে না পেরে ধুনট উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বনি আমিনের অফিসার্সপাড়ার বাসায় হামলা করেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
এ ছাড়া পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আল-আমিন তরফদার, যুবলীগ নেতা গোলাম মুহিত চাঁন, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক রাব্বি, ছাত্রলীগ কর্মী জাহাঙ্গীর আলম ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র এ জি এম বাদশাহর বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে আওয়ামী লীগের মশালমিছিলের প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার দুপুরে পাল্টা মিছিল করেছে ধুনট উপজেলা যুবদল।
বনি আমিনের স্ত্রী পারভীন আকতার প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে হঠাৎ বাসার বাইরে হট্টগোল শোনা যায়। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাইরে থেকে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। বিকট শব্দে তিনটি জানালার গ্লাস ভাঙচুর করা হয়। আতঙ্কে আমার শাশুড়ি ও ছোট ছোট দুই শিশু চিৎকার শুরু করে। প্রাণের ভয়ে বাসার ফটক বন্ধের পর বিদ্যুৎ–সংযোগ বন্ধ করে দিই। হামলাকারীরা ভেতরে ঢুকতে না পেরে পাশের এলাকায় আওয়ামী লীগ–সমর্থক আরও তিন-চারটি বাসা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করেন। হামলাকারীরা ধুনট পৌর বিএনপির সভাপতি আলীমুদ্দীন হারুনের অনুসারী।’
তবে অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন আলীমুদ্দীন হারুন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কর্মী–সমর্থকেরা মশালমিছিল করার চেষ্টা করলে দলীয় নেতা-কর্মী ও বিক্ষুব্ধ জনতা তাঁদের ধাওয়া করেন। ধাওয়া খেয়ে মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। আওয়ামী লীগের কোনো কর্মী-সমর্থকের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরে বিএনপির কেউ জড়িত নন।’
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
এদিকে আওয়ামী লীগের হরতালের সমর্থনে গতকাল রাতে বগুড়া সদর, সারিয়াকান্দি, ধুনট ও শাজাহানপুরেও ঝটিকা মশালমিছিল হয়েছে। শাজাহানপুর উপজেলার বেতগাড়ী এলাকায় মহাসড়কে পরপর দুটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এতে কেউ হতাহত হননি।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র কর ম র গতক ল আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
৮ বছরেও শুরু হয়নি কুবির ২ বিভাগের কার্যক্রম
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) দীর্ঘ ৮ বছর আগে অনুমোদন পাওয়া দুটি বিভাগ এখনো চালু হয়নি। অনুমোদন সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ, অবকাঠামোগত প্রস্তুতি এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমের ধীরগতির কারণে বিভাগ দুটি কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
জানা গেছে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধীনে ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ চালুর অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকেই বিভাগ দুটি চালু হওয়ার কথা থাকলেও, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত ও শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে নতুন অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের পরে বিভাগ দুটি চালুর পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে নতুন ভবন নির্মাণ হয়নি।
আরো পড়ুন:
শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় কুবি প্রক্টরের জরুরি নির্দেশনা
সিএনজি চালকের বিরুদ্ধে কুবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ
এছাড়া, তৎকালীন অর্গানোগ্রামে ৩১টি বিভাগের মধ্যে এই দুইটি বিভাগ অন্তর্ভুক্ত ছিল না, যা পরবর্তীতে চালু করা নিয়ে জটিলতা তৈরি করে।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে বৈঠক করে এই বিষয়ে পুনরায় আলোচনা করে। ইউজিসি নির্দেশনা অনুযায়ী, নতুন অর্গানোগ্রামে বিভাগের অন্তর্ভুক্তি ও নতুন বিভাগের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
সে অনুযায়ি ১৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত কুবির ৮৯তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে পূর্বের ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ এর পরিবর্তে ‘লজিস্টিক্স ও মার্চেন্ডাইজিং বিভাগ’ এবং ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’-এর পরিবর্তে ‘পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ নামে অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়। এছাড়াও অর্গানোগ্রামে নতুন আরও ১৮টি বিভাগের নাম অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
তৎকালীন বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রস্তাবক রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমান বলেন, “২০১৭ সালে অনুমোদন থাকলেও জায়গা সংকটের কারণে বিভাগ চালু করা সম্ভব হয়নি। পরে প্রশাসন পাল্টালেও কেউ উদ্যোগ নেয়নি।”
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, “অর্গানোগ্রামে অন্তর্ভুক্তি মানে এখনই চালু হবে না। অনুমোদন থাকলেও তৎকালীন সময়ে চালু করা সম্ভব হয়নি। এখন ইউজিসি নির্দেশনায় নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “তৎকালীন প্রশাসন বলতে পারবে কেন বিভাগ চালু হয়নি। আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা মাধ্যমে নতুন করে উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী ২ বছরের মধ্যে আশা করি বিভাগ চালু করা সম্ভব হবে, তখন নতুন ক্যাম্পাসও প্রস্তুত থাকবে।”
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী