কলকাতা বিমানবন্দরের ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজিট টার্মিনাল অপেক্ষা করছিলেন সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকা গামী বিমানের যাত্রী এক বাংলাদেশি যুবক। আচমকাই উত্তেজিত হয়ে পড়েন ওই যুবক। বিমানবন্দরের লাউঞ্জের কাঁচ হাত দিয়ে ভেঙে বিমানবন্দরের বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করতে থাকেন তিনি।

এদিকে বাংলাশি যুবকের এমন কর্মকাণ্ডেরর জেরে শুরু হয় নিরাপত্তা রক্ষীদের দৌড়াদৌড়ি চিৎকার। আর এমন পরিস্থিতিতে বিমানবন্দরে জঙ্গি হামলা ভেবে মুহূর্তে হুলুস্থুল অবস্থা তৈরি হয়। পরে যুবককে আটক করেছে পুলিশ। 

জানা গেছে, কলকাতা বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে লে ওভারের সময়ে কলকাতায় নামলেও ভারতে ঢোকার ভিসা ছিল না বাংলাদেশের বাসিন্দা মোহাম্মদ আসরাফুল (২৫) হোসেনের। কলকাতায় নেমে তার যাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের ঢাকায়। মাঝের সময়টুকু ছিলেন কলকাতা বিমানবন্দরের ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেটে।

কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, শুক্রবার আসরাফুল আচমকাই ওই ট্রানজ়িটের কাচের দেওয়াল ভেঙে টার্মিনালের অন্য প্রান্তে দিয়ে বিমানবন্দরের বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এমন করতেই খবর পৌঁছয় বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ–এর কাছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা এসে ধরেন ২৫ বছরের আসরাফুলকে। হাতের ধাক্কা দিয়ে কাচ ভাঙার ফলে, হাত কেটে যায় ওই যুবকের।

সিআইএসএফ আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর এনএসসিবিআই এয়ারপোর্ট থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয় তাকে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ওই বাংলাদেশি যুবককে। ভারতের ভিসা না থাকা সত্ত্বেও কেন তিনি কলকাতা শহরে ঢুকতে চাইছিলেন তা শুক্রবার রাত পর্যন্ত স্পষ্ট হয়নি। তবে, গোয়েন্দাসূত্রের খবর ওই যুবকের কথাবার্তা সন্দেহজনক বলে মনে হয়েছে। শুক্রবারেই তার জন্য টেমপোরারি বা অস্থায়ী ল্যান্ডিং পারমিটের ব্যবস্থা করে তাকে তুলে দেওয়া হয়েছে পুলিশের হাতে।
 
সূত্রের খবর, বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জে বাড়ি আশরাফুলের। কাজের সূত্রেই তিনি সিঙ্গাপুরে থাকেন। জিজ্ঞাসাবাদের সময় বেশ কিছু অসংলগ্ন কথাবার্তা বলায় আটক হয় থাকে। সূত্রের খবর, জিজ্ঞাসাবাদীর সময় ওই যুবক জানায়, স্রষ্টা তাকে বলেছেন সূর্যের আলোই তার ক্ষমতা বাড়বে। তাই কৃত্রিম আলো ছেড়ে সূর্যের আলো যেদিকে সেদিকে যেতে চাইছিলেন তিনি।

ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ত র র খবর কলক ত

এছাড়াও পড়ুন:

অ্যাপে পরিচয়-প্রেম, বিয়ে করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এলেন চীনের যুবক

ভাষা, সংস্কৃতি ও হাজার মাইলের দূরত্বকে হার মানিয়েছে ভালোবাসা। ভালোবাসার টানে এক তরুণীকে বিয়ে করতে বাংলাদেশে এসেছেন চীনের এক যুবক। গত শুক্রবার রাতে চীন থেকে ঢাকায় পৌঁছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে এক তরুণীর বাসায় আসেন তিনি। আজ রোববার আদালতের মাধ্যমে তাঁরা বিয়ে সম্পন্ন করবেন।

চীনের যুবকের নাম ওয়াং তাও (৩৬)। চীনের হোয়ানান প্রদেশের ওয়াং ইচাং চাওয়ের ছেলে তিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামের তাহের মিয়ার মেয়ে সুরমা আক্তারের (২২) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক আছে তাঁর। সুরমা একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন এবং ঢাকার লালবাগে থাকেন। আজ রোববার তাঁরা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন বলে তরুণীর পরিবার জানিয়েছে।

জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পৌঁছান চীনের যুবক ওয়াং তাও। বিমানবন্দর থেকে চীনের যুবককে আতিথেয়তা দিয়ে নিজ বাড়ি নাসিরনগরের কুন্ডার কোনাপাড়ায় নিয়ে আসেন তরুণী সুরমাসহ তাঁর পরিবারের লোকজন।

স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও তরুণীর পরিবারের দাবি, দেড় থেকে দুই মাস আগে ডেটিং এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ওয়ার্ল্ড টক’ নামের একটি অ্যাপের মাধ্যমে ওয়াং তাওয়ের সঙ্গে সুরমার পরিচয় হয়। তাঁরা নিয়মিত চ্যাটে যোগাযোগ রাখতে শুরু করেন। তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ক গড়ায় প্রেমে। বিষয়টি চীনের যুবক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তরুণী নিজ নিজ পরিবারকে জানান। উভয় পরিবারের সম্মতিতে তাঁরা একে অপরকে বিয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। পরে চীনের যুবক বাংলাদেশ ও চীনের দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসেন। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে দুপুরের পর থেকে চীনের যুবককে দেখার জন্য সুরমার বাড়িতে ভিড় করেন স্থানীয় লোকজন।

সুরমা স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ‘ওয়ার্ল্ড টক’ অ্যাপের মাধ্যমে চীনের যুবক ওয়াং তাওয়ের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ক প্রেমে গড়ায়। ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে তাঁরা একে অপরের সঙ্গে চ্যাট করতেন। একপর্যায়ে তাঁরা পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের সিদ্ধান্তে পৌঁছান।

সুরমার মা নুরেনা বলেন, ‘আমার মেয়ের ভালোবাসা পেতে চীন থেকে যুবক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে চলে এসেছে। ওই যুবক কোনো ধর্মই বিশ্বাস করে না। মেয়েকে বিয়ে করতে প্রয়োজনে সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে রাজি হয়েছে। আগামীকাল (আজ) রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে মুসলিম রীতি মেনে সুরমাকে বিয়ে করবে চীনের যুবক। এতে দুই পরিবারের সম্মতি আছে। আমরা এই বিয়েতে আনন্দিত। মেয়ের খুশিই আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’

নাসিরনগর থানার কুন্ডা বিট উপপরিদর্শক (এসআই) জাহান-ই-আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরে কুন্ডা গ্রামে যাই। পাসপোর্ট দেখে নিশ্চিত হলাম যে যুবক চীনের নাগরিক। ওই তরুণী ঢাকার লালবাগে থাকেন। ‘ওয়ার্ল্ড টক’ নামের একটি অ্যাপসের মাধ্যমে তাঁদের পরিচয়। একপর্যায়ে তাঁরা প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। চীনের যুবক ইংরেজি বোঝেন না। তাই কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাঁরা একে অপরের সঙ্গে ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে কথা বলতেন। তরুণী ও তাঁর পরিবার জানিয়েছে, রোববার হলফনামার মাধ্যমে চীনের যুবক মুসলিম হবেন। তারপর তাঁরা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন।’ তরুণীর বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, চীনের যুবক এক থেকে দেড় মাস থাকবেন। যাওয়ার সময় হয় ওই তরুণীকে সঙ্গে নিয়ে যাবেন বা পরে নিয়ে যাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ