সিনিয়রদের দ্বন্দ্বে বরিশালে অস্বস্তি
Published: 2nd, August 2025 GMT
জাতীয় ক্রিকেট লিগের চার দিনের আসরে টানা তিন মৌসুম ধরে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে বরিশাল। গত বছর শুরু এনসিএল টি-টোয়েন্টিতেও তারা আট দলের মধ্যে হয়েছে অষ্টম। মাঠের এমন হতাশাজনক পারফরম্যান্সের সঙ্গে সিনিয়র ক্রিকেটারদের দ্বন্দ্বেও জেরবার বরিশাল।
নতুন মৌসুম শুরুর আগে এ নিয়ে দলের মধ্যে বইছে অস্বস্তির হাওয়া। সিনিয়র খেলোয়াড়দের দ্বন্দ্ব নিয়ে অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলটির একাধিক খেলোয়াড়, কর্মকর্তা। পরিস্থিতি এমন যে বরিশাল দলকে দ্বন্দ্বমুক্ত করতে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে বিসিবির টুর্নামেন্ট কমিটিকেও। সিনিয়রদের পরিবর্তে তরুণ কাউকে অধিনায়ক করার কথাও ভাবছে বোর্ড। বিসিবির টুর্নামেন্ট কমিটির প্রধান আকরাম খান প্রথম আলোকে এ নিয়ে বলেছেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর কিছু অভিযোগের কথা শুনেছি। এবার কোচ-ম্যানেজারকে আলাদা করে এসব বিষয়ে বলে দেওয়া হবে। যদি তাতেও কাজ না হয়, তাহলে আমরা অ্যাকশন নেব।’
আরও পড়ুন৭০ ওভারে ভারতের ২৫ চার, ১৬ ওভারেই ইংল্যান্ডের ২১ চার, ২ ছক্কা১৮ ঘণ্টা আগেসূত্র জানিয়েছে, বরিশাল দলের মধ্যে দুই সিনিয়র ক্রিকেটার ফজলে মাহমুদ ও সোহাগ গাজীর নেতৃত্বে দুটি বলয় গড়ে উঠেছে। এ দ্বন্দ্বের জেরেই গত বছর জাতীয় লিগের চার দিনের আসরের মাঝপথে অধিনায়কত্ব ছাড়েন ফজলে মাহমুদ। তখন তাঁর জায়গায় নেতৃত্বে আসেন তানভীর ইসলাম। পরে এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে অধিনায়ক হন সোহাগ গাজী।
অধিনায়কত্ব ছাড়ার কারণ হিসেবে বোর্ডের কাছে পাঠানো ই–মেইলে দলের বাজে পারফরম্যান্স ও তরুণ নেতৃত্বকে সুযোগ দেওয়ার কথা বলেছিলেন ফজলে মাহমুদ। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত তিন মৌসুম বরিশালকে নেতৃত্ব দেওয়া ফজলে মাহমুদের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরব ছিল দলের একটি পক্ষ। তাঁর বিরুদ্ধে দল গঠনে স্বজনপ্রীতিসহ নানা অভিযোগ ওঠার পর অধিনায়কত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এ নিয়ে ফজলে মাহমুদের ব্যাখ্যা অবশ্য বিসিবিকে জানানো কথাই, ‘আমি তরুণদের সুযোগ করে দিতে চেয়েছি। এ ছাড়া আর কোনো কারণ নেই।’
ফজলে মাহমুদ.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
২০২৬ আইপিএলের আগে নতুন হেড কোচ নিয়োগ দিল কেকেআর
আইপিএল ২০২৬ মৌসুমের আগে কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর) নতুন হেড কোচ হিসেবে দায়িত্ব দিল অভিষেক নায়ারকে। গত মৌসুমে তিনি ছিলেন চন্দ্রকান্ত পান্ডিতের সহকারী কোচ। এবার সেই জায়গা থেকেই পদোন্নতি পেয়ে দলের দায়িত্বভার নিলেন তিনি। এর আগে এক বছরের বিরতিতে নায়ার কাজ করেছিলেন ভারতের জাতীয় দলের প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীরের সহকারী হিসেবে।
সম্প্রতি নারী প্রিমিয়ার লিগের দল ইউপি ওয়ারিয়র্সও তাকে প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল।
আরো পড়ুন:
শেষটায় কী অপেক্ষা করছে?
ফাইনালে যেতে ভারতকে ৩৩৯ রানের টার্গেট দিলো অস্ট্রেলিয়া
কেকেআরের সিইও ভেঙ্কি মাইসোর এক বিবৃতিতে বলেন, “২০১৮ সাল থেকে অভিষেক কেকেআর পরিবারের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। মাঠের ভেতরে ও বাইরে- দুই জায়গাতেই তিনি আমাদের খেলোয়াড়দের গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। খেলার সূক্ষ্ম বিষয়গুলো বোঝার ক্ষমতা আর খেলোয়াড়দের সঙ্গে গভীর সংযোগ; দুটোই তাকে আলাদা করে রেখেছে। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে, এখন তিনি প্রধান কোচ হিসেবে কেকেআরকে নতুন অধ্যায়ে নেতৃত্ব দেবেন।”
৪২ বছর বয়সী অভিষেক নায়ার একসময় ছিলেন মুম্বাইয়ের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। ২০০৯ সালে ভারতের জার্সি গায়ে তিনটি ওয়ানডেও খেলেছেন তিনি। তবে খেলোয়াড়ি জীবনের চেয়ে কোচ হিসেবে তার সিভিটাই এখন অনেক সমৃদ্ধ।
২০১৮ সালে খেলোয়াড়ি জীবনের শেষ দিকে নায়ার কেকেআর একাডেমির প্রধান কোচ নিযুক্ত হন। ২০১৯ সালে অবসরের পর মূল দলের সহকারী কোচ হিসেবে যোগ দেন। পরে ২০২২ সালে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সের প্রধান কোচের দায়িত্বও পালন করেন।
কেকেআরে থাকাকালীন গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে তার গড়ে ওঠে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। যখন গম্ভীর ভারতের জাতীয় দলের প্রধান কোচ হন, তখন নায়ারও তার সহকারী হিসেবে যোগ দেন। তবে দলের পারফরম্যান্স নিয়ে বিসিসিআইয়ের পর্যালোচনার পর এক বছরেরও কম সময়ে তার চুক্তি নবায়ন করা হয়নি। এরপর আইপিএল ২০২৫ মৌসুমের আগে তিনি ফের ফিরে আসেন কেকেআরে।
তিন মৌসুম পর কেকেআর ও চন্দ্রকান্ত পান্ডিতের পথ আলাদা হয়ে যায়। সেই সময়ের মধ্যে দলটি দশ বছর পর ২০২৪ সালে আইপিএল শিরোপা জিতেছিল। তবে ২০২৫ মৌসুমে হতাশাজনক পারফরম্যান্সে মাত্র পাঁচ জয়ে পয়েন্ট তালিকায় অষ্টম স্থানে থাকাটা শেষ পর্যন্ত পান্ডিতের বিদায়ের কারণ হয়। এরপর তিনি ফিরে যান নিজ রাজ্য মধ্যপ্রদেশে এবং সেখানে ক্রিকেট পরিচালকের দায়িত্ব নেন।
কেকেআরের সহায়ক দলেও বড় পরিবর্তন আসতে চলেছে। বোলিং পরামর্শক ভরৎ অরুণ ও স্পিন-বোলিং বিশেষজ্ঞ কার্ল ক্রো দুজনই চলে গেছেন লখনউ সুপার জায়ান্টসে। ফলে আগামী কয়েক মাসে তাদের বিকল্প খোঁজার কাজ শুরু হবে।
অর্থাৎ, নতুন করে সাজানো কেকেআর এখন নতুন কোচ অভিষেক নায়ারের হাত ধরে এগোতে প্রস্তুত। আইপিএল ২০২৬-এ আবারও পুরনো জৌলুস ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশায়।
ঢাকা/আমিনুল