পিআর পদ্ধতির পেছনে উদ্দেশ্য আছে, এগুলো ছাড়েন: মির্জা আব্বাস
Published: 1st, August 2025 GMT
পিআর পদ্ধতির পেছনে অন্য উদ্দেশ্য আছে বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেছেন, ‘এই পিআর পদ্ধতির পেছনে উদ্দেশ্য আছে। উদ্দেশ্য হলো, কেউ বলল করব, কেউ বলল করব না; অর্থাৎ একপর্যায়ে বলবে, এ কারণে নির্বাচন হচ্ছে না। সুতরাং আরও কিছুদিন সময় বাড়িয়ে দিতে হবে।’
মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘এ সমস্ত বাঁদরামি–ফাজলামি ছাড়েন। এগুলো ছাড়েন। এই দেশের লোক যে পদ্ধতিতে ভোট দিয়ে অভ্যস্ত, সেই পদ্ধতিতেই ভোট হবে।’
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় যাত্রাবাড়ীর শহীদ ফারুক রোডে আয়োজিত এক সমাবেশে মির্জা আব্বাস এ কথা বলেন। ‘চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে’ এ সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘নির্বাচন দিতে এত গড়িমসি কেন, আমি বুঝতে পারি না। আমি একটা জিনিস বুঝতে পারি, জাস্টিস ডিলেইড, জাস্টিস ডিনাইড; অর্থাৎ বিচারক যদি দেরি করেন বুঝতে হবে, বিচারক রায় ভালো দেবেন না।’
নির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘আর দেরি করবেন না। আমরা জানি, আপনারা ঘোষণা দেবেন, তারিখ ঘোষণা দেবেন, এর পেছনে আপনাদের আবার কোন ষড়যন্ত্রতত্ত্ব লুকিয়ে আছে, আল্লাহই বলতে পারবেন। আর কারও না হোক, আমি অনেক সন্দেহ করি। আমি অনেক সন্দেহ করি, তাদের নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পেছনেও অনেক ষড়যন্ত্র আছে। এরপরও ষড়যন্ত্র আছে।’
দেশের মানুষকে জোর করে ইভিএম খাওয়ানো যায়নি, পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধি) পদ্ধতিও খাওয়ানো যাবে না বলে মন্তব্য করেন মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, ‘এই দেশের লোককে ইভিএম পদ্ধতি খাওয়াতে চেয়েছিল হাসিনা, এ দেশের লোক গিলেনি। সুতরাং আপনাদের পিআর পদ্ধতিও কেউ গিলবে না, এই কথা মনে রাইখেন।’
দেশের মানুষ এখনো পিআর পদ্ধতি সম্পর্কে জানেন না বলে সমাবেশে উল্লেখ করেন মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, ‘আমরা তো এখন পর্যন্ত ভোট দেওয়া শিখলাম না। আমাদের ১৫ বছরে আমাদের নতুন প্রজন্ম.
মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘আমি এখনো মনে করি, নির্বাচন সুষ্ঠু হতে না দেওয়ার জন্য যত প্রক্রিয়া আছে, তারা সেটা করার চেষ্টা করবে। মানুষকে তারা বোঝাবে, বিএনপির বিরুদ্ধে ভুল বোঝাবে। কিন্তু বিএনপি ১৭টা বছর আন্দোলন করেছে। দরকার হলে আরও ১৭ বছর আন্দোলন করব, কোনো সমস্যা নেই আমাদের। বিএনপি আন্দোলন করে, বিএনপি হোঁচট খেয়ে, বিএনপি জেল খেটে, বিএনপি গুম হয়ে, আমাদের অভ্যাস হয়ে গেছে। আমাদের আর কোন ভয় নেই।’
জামায়াতকে ইঙ্গিত করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘তারা বিএনপি যেটা বলে, তার উল্টোটা করতে চায়। সব সময়। অথচ কোনো দিন দেশের মন্ত্রী-মিনিস্টার হওয়ার স্বপ্ন তারা দেখতে পারেনি। এরা একটা পরগাছার মতো অনেকটা। কখনো আওয়ামী লীগের ঘাড়ে পাড়া দিয়ে মন্ত্রী হয়, আবার কখনো বিএনপির ঘাড়ে সওয়ার হয়ে মন্ত্রী হয়। এখন সওয়ার হয়েছে এনসিপির ঘাড়ে। কোনো লাভ হবে না।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এই সরকারের বিশিষ্ট উপদেষ্টাবৃন্দ, তাঁরা বিভিন্নভাবে বিভিন্ন অপকর্ম করছেন। কী আর বলব, কার কথা বলব, লাভ নেই। এই সরকারের মাথা থেকে নিচ পর্যন্ত পচে গেছে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে এনসিপির সরকার উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমি ধারণা করেছিলাম, এই সরকার এনসিপির সরকার। সরি। তো হ্যাঁ, অবস্থাদৃষ্টিতে মনে হয় এই সরকার বোধ হয় এনসিপির সরকার। উনারা যখন যেখানে যান, প্রটোকল পান, সরকারি প্রটোকল। পুলিশ, বিডিআর, আর্মি, গার্ড থাকে। সার্কিট হাউস ব্যবহার করেন।’ তিনি বলেন, ‘আমরাও তো বহু যাই, বহু গেলাম, আমরা তো পেলাম না। আমরা তো মন্ত্রী ছিলাম বহুদিন, ঢাকা শহরের মেয়রও ছিলাম, কই, আমরা তো পাই না।’
বিএনপি নেতাদের কটাক্ষ করে বক্তব্য দেওয়ার সমালোচনা করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমাদের কটাক্ষ করে আমাদের সম্মানহানি করে কথা বলছেন। যাঁদের ৫ আগস্টের আগে জীবনেও কোনো দিন মাঠে দেখা যায়নি। কখনোই না।’
অনেকেই ১৭ বছর বিএনপির আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, বিএনপির ১৭ বছর রাজপথে আন্দোলন করার পরই সরকার ভঙ্গুর হয়েছে, দুর্বল হয়েছে, এক দিনেই সরকারের পতন হয়নি। তিনি বলেন, ‘যাঁরা এ কথাগুলো বলেন, আমি একটা কথা বলি ভাই, খারাপ কথা হবে। আমি বলি না যে আপনারাও শাহাদাতবরণ করেন, আপনাদের গায়ে তো একটা গুলিও লাগেনি। আপনাদের পায়ে তো হোঁচট খাওয়ার চিহ্নও তো নেই যে আপনারা হোঁচট খেয়েছেন। আপনাদের গায়ে গুলি লাগেনি কেন? আপনারা সহি–সালামতে রইলেন, এতগুলো ছেলে শহীদ হলো, তাদের বিচারও করছেন না।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম সভায় সভাপতিত্ব করেন। সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ সভা সঞ্চালনা করেন। সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান, বিএনপির বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক–বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী, ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সদস্য ইশরাক হোসেন, জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম প্রমুখ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এই সরক র ব এনপ র এনস প র ই সরক র আপন দ র মন ত র আম দ র আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
যে সাত ধরনের খাবার খেলে ৭০ বছর বয়সেও থাকবেন তরুণ
গত মার্চ মাসে ‘নেচার মেডিসিন’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, উদ্ভিজ্জ খাবার খেলে বয়সজনিত জটিলতার হার কমে। গবেষণাটির জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল ৭০ বছর বা তার বেশি বয়সী সুস্থ ব্যক্তিদের। অর্থাৎ যাঁদের দীর্ঘমেয়াদি কোনো শারীরিক বা মানসিক সমস্যা নেই। ৩৯–৬৯ বছর বয়সী ১ লাখ ৫ হাজার ব্যক্তিকে ৩০ বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করেছিলেন গবেষকেরা। মধ্যবয়সে খাদ্যাভ্যাস কীভাবে তাঁদের পরবর্তী বছরগুলোর সুস্থতাকে প্রভাবিত করেছে, সেটিই দেখা হয়েছে সেই গবেষণায়।
সুস্থ থাকার সম্ভাবনা কতটাগবেষণায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের খাদ্যাভ্যাসের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট স্কোর দেওয়া হয়েছে। এই স্কোর হার্ভার্ডের উদ্ভাবিত অল্টারনেটিভ হেলদি ইটিং ইনডেক্সের সঙ্গে সম্পর্কিত। ‘হার্ভার্ড হেলথ পাবলিশিং’ অনুসারে, যাঁদের এই স্কোর সবচেয়ে বেশি ছিল, ৭০ বছর বয়সে পৌঁছাতে পৌঁছাতে তাঁদের সুস্থ থাকার সম্ভাবনা বেড়েছে ৮৬ শতাংশ; ৭৫ বছর বয়সে সুস্থ থাকার সম্ভাবনা বেড়েছে ২ দশমিক ২ গুণ। বুঝতেই পারছেন, এই অল্টারনেটিভ হেলদি ইটিং ইনডেক্সই দীর্ঘমেয়াদি সুস্থতায় ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে।
কী আছে হার্ভার্ডের এই খাদ্যভ্যাসে, যা দীর্ঘদিন তারুণ্য ধরে রাখতে সহায়ক? চলুন, জেনে নেওয়া যাক।