সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ ধামে ভিড়ের চাপে তিনজনের মৃত্যু
Published: 27th, February 2025 GMT
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ ধাম মহাতীর্থে তিন দিনব্যাপী শিব চতুর্দশী মেলার দ্বিতীয় দিনে কয়েক লাখ পুণ্যার্থীর আগমন ঘটেছে। গতকাল বুধবার মেলার দ্বিতীয় দিন ছিল শিব চতুর্দশীর পুণ্য তিথি। এই তিথি ঘিরে বিপুল সংখ্যক মানুষের আগমন ঘটলে ভিড়ের চাপে তিনজন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে একজন চট্টগ্রাম জেলার চকরিয়ার বান্টু দাস (৫০); বাকি দু’জন নারী। তাদের বয়স ৫৫ ও ১৮ বছর; পরিচয় জানা যায়নি।
সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আয়োজকরা জানান, বুধবার সকাল ১০টা ১১ মিনিট ২৫ সেকেন্ডে শুরু হয়ে তিথি থাকবে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ৫৯ মিনিট ৫০ সেকেন্ড পর্যন্ত। এ সময় চন্দ্রনাথ ধামে ১০-১২ লাখ পুণ্যার্থীর সমাগম হয়।
তিন দিনের এ মেলায় পুণ্যার্থীরা যেন নিরাপদে তীর্থ দর্শন ও পূজা-অর্চনা সম্পন্ন করতে পারেন, সে লক্ষ্যে দুপুরে সেনাবাহিনী, র্যা ব, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে কাজ করছেন মেলা কমিটির নেতারা। সরেজমিন দেখা যায়, পুণ্য তিথি ঘিরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পুণ্যার্থীরা ধামে এসেছেন। বেশি পুণ্যার্থীর আগমন ঘটে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর।
ভক্তরা মহাতীর্থে এসে নানা স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। সীতাকুণ্ড মোহন্ত আস্তানায় আশ্রয় নেওয়া পুণ্যার্থী সন্ধ্যা সচন্দা দাশ বলেন, বরিশাল থেকে তিনি পরিবারের সঙ্গে এসেছেন এই মহাতীর্থে শম্ভুনাথ, চন্দ্রনাথ দর্শন করতে। শিব চতুর্দশী তিথি শুরু হলে ব্যাসকুণ্ডে পুণ্যস্নান শেষে মন্দিরে পূজা ও তীর্থ দর্শন করে মনের আশা পূরণ করতে চান। আরেক পুণ্যার্থী বলরাম রায় বলেন, ‘চন্দ্রনাথ ধামে আসতে পারা পরম সৌভাগ্যের বিষয়। আমি আসতে পেরেছি।’
পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, মেলাকে কেন্দ্র করে এদিন পুরো তীর্থভূমিতে বসেছে অনেক দোকানপাট। সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ ধাম পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক চন্দন দাশ বলেন, ‘দেশ-বিদেশ থেকে আগত পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় আমরা প্রশাসনকে সহযোগিতা করছি।’
সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফকরুল ইসলাম বলেন, মেলাটি সুষ্ঠু করতে সেনাবাহিনী, র্যা ব, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা কমিটির সঙ্গে কাজ করছেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ
ঝমঝম বৃষ্টি, কর্দমাক্ত পথঘাট, খাল-বিলে থৈ থৈ পানি- এমন দৃশ্যপট সামনে না থাকলেও ভেবে নিতে দোষ কি। কারণ, আজ পহেলা আষাঢ়।
রবি ঠাকুরের ভাষায়— ‘আবার এসেছে আষাঢ় আকাশও ছেয়ে... আসে বৃষ্টিরও সুবাসও বাতাসও বেয়ে...’।
অবশ্য একেবারে নিরাশ করেনি আষাঢ়। রাজধানীতে সকাল থেকেই আকাশে মেঘের আনাগোনা আর কোথাও হালকা বৃষ্টি জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে বর্ষার আগমন। বর্ষার আগমন যেন স্বস্তি-শান্তি ও আনন্দের। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস নগরবাসীর জীবনে এক আনন্দের বার্তা।
বাংলার প্রকৃতিতে আলাদা বৈশিষ্টময় বর্ষা ঋতুর আজ যাত্রা শুরু হলো।
বলা হয়, গ্রীষ্মের খরতাপের ধূসর নাগরিক জীবন আর রুদ্র প্রকৃতিতে প্রাণের স্পন্দন জাগায় বর্ষা। জ্যৈষ্ঠের প্রচণ্ড খরতাপে রুক্ষ প্রকৃতি সজীব হয়ে উঠবে বর্ষার বর্ষণের মৃদঙ্গ-ছোঁয়ায়, এটাই যে সকল বাঙালির চাওয়া।
আষাঢ়ের রিমঝিম বৃষ্টি গ্রীষ্মের ধুলোমলিন জীর্ণতাকে ধুয়ে ফেলে গাঢ় সবুজের সমারোহে প্রকৃতি সাজে পূর্ণতায়। রঙিন হয়ে পুকুর-বিলে ফোটে শাপলা-পদ্ম। বর্ষা ঋতু তার বৈশিষ্ট্যের কারণে স্বতন্ত্র। বর্ষার প্রবল বর্ষণে নির্জনে ভালোবাসার সাধ জাগে, চিত্তচাঞ্চল্য বেড়ে যায়। বর্ষার নতুন জলে স্নান সেরে প্রকৃতির মনও যেন নেচে ওঠে। ফুলে ফুলে শোভিত হয় প্রকৃতি। তাই বর্ষাবিহীন বাংলাদেশ ভাবাই যায় না।
বর্ষা বাঙালি জীবনে নতুন প্রাণসঞ্চারকারী। বৃষ্টিস্নাত কদম ফুলের সৌন্দর্য্য যে দেখেছে, মুগ্ধ নয়নে চেয়ে না থেকে পারেনি। এর বর্ণনায় পল্লীকবি জসীমউদদীন লিখেছেন- ‘বনের ঝিয়ারি কদম্বশাখে নিঝঝুম নিরালায়, / ছোট ছোট রেণু খুলিয়া দেখিছে, অস্ফুট কলিকায়।’
বৃষ্টি হলে গ্রামের নদী নালা পুকুরে জল জমে থৈ থৈ করে। বর্ষা আনন্দ-বেদনার সারথী। সবুজের সমারোহে, মাটিতে নতুন পলির আস্তরণে বর্ষা আনে জীবনেরই বারতা।
উন্নয়নের নামে চলমান প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসের প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি নিয়ে প্রতি বছরের মতো এ বছরও বর্ষা ঋতুকে বরণ করে নিতে ‘বর্ষা উৎসব’ আয়োজন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।
রবিবার (১৫ জুন) আষাঢ়ের প্রথমদিনে বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সকালে সুর-সংগীতে প্রকৃতি-বন্দনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে উৎসবের কর্মসূচি।
ঢাকা/টিপু