ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফুল্লাহ সাদেকের উদ্যোগে ২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সংসদ (ডিইউআরএস)। তরুণদের গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করা, গবেষণাভীতি দূর করা, গবেষণামুখী ক্যারিয়ারের দিকে ধাবিত করা ডিইউআরএসের অন্যতম লক্ষ্য। লক্ষ্য পূরণে নানামাত্রিক কার্যক্রম তাঁরা পরিচালনা করেন। সেসব কার্যক্রম সম্পর্কে একটা ধারণা দিলেন সংসদের সভাপতি মো.

ফাহিম হাসান, ‘বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর একটি গবেষণা। এই গবেষণার প্রসারে মৌলিক গবেষণার প্রশিক্ষণ, গবেষণা সেমিনার, সম্মেলন, জার্নাল প্রকাশের মতো বিষয়ে অবদান রেখে চলেছে আমাদের সংগঠন।’

আরও পড়ুনফ্রিল‍্যান্সিং শুরু করেও ব্যর্থ হওয়ার ৫ কারণ১২ ঘণ্টা আগে

শিক্ষার্থীভেদে গবেষণা সংসদের আয়োজন ভিন্ন হয়ে থাকে। যেমন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য আছে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট রিসার্চ সামিট, ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট রিসার্চ কনফারেন্স ও স্নাতক গবেষণা আড্ডা। আন্ডারগ্র্যাজুয়েট রিসার্চ ফেলোশিপও দেয় ডিইউআরএস। আছে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট রিসার্চ ইন্টার্ন হিসেবে কাজ করার সুযোগ। থিসিস, গবেষণা মনোগ্রাফ ও প্রস্তাবনা তৈরির বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয় এই সংগঠন। ২০২০ সালে সংগঠনটি প্রথমবারের মতো আয়োজন করে ফার্স্ট ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট রিসার্চ কনফারেন্স, ২০২৩ সালে ফার্স্ট আন্ডারগ্র্যাজুয়েট রিসার্চ সামিট। ২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর ‘আন্ডারগ্র্যাজুয়েট রিসার্চ ডে’ পালন করে তারা। নিয়মিত আয়োজন হিসেবে মিট দ্য রিসার্চার সেশন, দেশ-বিদেশে গবেষণাভ্রমণ ও গবেষণা মেলা তো আছেই।

উচ্চশিক্ষার জন্য এই সংগঠনে আছে ‘স্কলারশিপ অ্যান্ড হায়ার এডুকেশন উইং’। এখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সংসদের প্রাক্তন সদস্যরা তাঁদের অভিজ্ঞতার গল্প শোনান। এ সম্পর্কে মো. ফাহিম হাসান বলেন, ‘আমাদের গবেষণা সংসদের অনেক সদস্য ও নির্বাহী ইতিমধ্যে উচ্চশিক্ষা নিতে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। এশিয়া, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন দেশে নামী বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছেন বা করেছেন। মূলত তাঁরাই এখানে সাফল্যের গল্প শোনান। এই উইংয়ের নিজস্ব ডেটাবেজ আছে। একজন শিক্ষার্থীকে বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য কী কী করতে হবে, কীভাবে বৃত্তি পাবে—বিস্তারিত দিকনির্দেশনা এতে রয়েছে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সংসদের পাঁচ শতাধিক সদস্য এখন পর্যন্ত বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেয়েছেন। উচ্চশিক্ষার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে আরও কয়েক হাজার। সারা দেশে এই ইতিবাচকতার জোয়ার ছড়িয়ে দিতে প্রায় ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা সংসদ তৈরি করেছেন ডিইউআরএসের সদস্যরা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স গঠন সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ

দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।

এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।

শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।

সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।

হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ