‘ঘোড়াটির বয়স পাঁচ বছর। নাম বাহাদুর। ভারতীয় মারোয়ারী তাজী জাতের প্রাণীটি দ্রুত দৌঁড়াতে পারে। একে নিয়ে বিভিন্ন ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছি। অনেক পুরস্কারও পেয়েছি। খয়েরি লাল-সাদা ঘোড়াটির যত্ন নিয়েছি নিজেই। এবারের মেলায় এর দাম ঠিক করেছি ৯ লাখ টাকা। অনেকে বিভিন্ন অংকের দাম বললেও এ পর্যন্ত সাড়ে ৭ লাখ টাকা দাম উঠেছে।’ জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে ৫১৭ বছরের ঐতিহ্যবাহী গোপীনাথপুর দোল পূর্ণিমার মেলায় কথাগুলো বলছিলেন বাহাদুরের মালিক নওগাঁর ধামইরহাটের আব্দুল মজিদ।

ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাক আর দর-দামে এখন মুখর ঘোড়ার মেলা। ক্রেতা-বিক্রেতারা দামাদামি করছেন। সাধ্যের মধ্যে মিললে হচ্ছে বেচাকেনা। এ মেলায় এবার প্রধান আকর্ষণ হয়ে উঠেছে ভারতীয় মারোয়ারী তাজী জাতের ঘোড়াটি। এ ছাড়া পঙ্খিরাজ, বিজলি, কিরণমালা, বাংলার রানী, সুইটিসহ বাহারি নামের ঘোড়াও রয়েছে। তাদের দেখতে ভিড় করছেন নানা বয়সী মানুষ। ক্ষিপ্রতা আর বুদ্ধিমত্তা দেখে পছন্দের ঘোড়া কিনতে ক্রেতাদের মধ্যেও রয়েছে প্রতিযোগিতা।

আয়োজকরা জানান, দেশের একমাত্র ঘোড়া বেচাকেনার হাট গোপীনাথপুর দোলের মেলা। সারাদেশের ক্রেতা-বিক্রেতারা আসেন। দোল পূর্ণিমা উপলক্ষে মাসব্যাপী চলে মেলা। কিন্তু পশুর মেলা হয় প্রথম ১০ দিন। দোল পূর্ণিমার কয়েকদিন আগে থেকে মেলায় অবস্থান নিয়েছেন ঘোড়া ব্যবসায়ীরা। মহিষ, গরু, ভেড়া ও ছাগলও বেচাকেনা হয় এখানে। দরদাম ঠিকঠাকের পর পাশের একটি মাঠে ঘোড়া নিয়ে গিয়ে ক্রেতাকে দেখানো হয় ঘোড়দৌড়।

নীলফামারীর ডোমার থেকে আবুল হোসেন ঘোড়া কিনতে এসেছিলেন মেলায়। তিনি বাহাদুরের দাম বলেছেন সাড়ে ৭ লাখ টাকা। আরও দুই-একটি দেখার পর তিনি কেনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। সওয়ারি ও ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, আগে তাদের বাপ-দাদারা মেলায় ঘোড়া বেচাকেনা করতেন। পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রাখতে তারাও এ পেশায় রয়েছেন। আগে ঘোরদৌড়ের বড় মাঠ থাকলেও এখন সঙ্কুচিত হয়ে গেছে। এতে বেচাকেনায়ও সমস্যা হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনজুরুল আলম বলেন, গোপীনাথপুরের মেলাটি প্রাচীন মেলা। এখানে বিশালাকৃতির ঘোড়া এসেছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রমজানের পবিত্রতা ও নিরাপত্তার জন্য বিনোদনমূলক যাত্রা, সার্কাসের অনুমোদন দেওয়া হয়নি। কেউ বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে কঠোরভাবে দমন করা হবে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ শুরু 

কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ। মহান মে দিবস উপলক্ষে ঢাকার নয়াপল্টনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত এ সমাবেশে হাজার হাজার নেতকর্মী উপস্থিত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে ওলামা দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক কারী গোলাম মোস্তফার কোরআন তেলাওয়াত শুরু করেন।

এর আগে দুপুর ১২টা থেকে সমাবেশ মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের শিল্পীরা গান পরিবেশন করেন। 

দুপুর আড়াইটায় আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই মিছিল নিয়ে ঢাকা মহানগরী ও আশপাশের জেলা থেকে দলে দলে নেতাকর্মীরা যোগ দেন সমাবেশে।

নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে লন্ডন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশ মঞ্চে উপস্থিত আছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, সহ দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুসহ বিএনপির সিনিয়র নেতারা। সমাবেশে শ্রমিক দলের পক্ষ থেকে তুলে ধরা হবে ১২ দফা দাবি। 

সমাবেশ স্থলে দেখা যায়, নেতাকর্মীরা ব্যানার, মাথায় নানা রঙের ক্যাপ, দলীয় টি-শার্ট পরে নয়পল্টনে আসছেন। জায়গায় জায়গায় চলছে স্লোগান, দলীয় সংগীত আর ঢাক-ঢোলের বাদ্য।

সমাবেশস্থলে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি উপস্থিত রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) আহ্বায়ক হেলাল খান, সদস্যসচিব জাকির হোসেন রোকন প্রমুখ।

এদিকে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সমাবেশস্থলে পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। জিরো পয়েন্ট থেকে পল্টনমুখী সড়ক সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা রাখা হয়েছে।

টানা চার মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রথম এতো বড় সমাবেশ করছে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল।

এর আগে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত বছরের ৮ আগস্ট প্রথম বাধাহীন সমাবেশ করে বিএনপি। এতে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন। পুরো এলাকায় ছিল উচ্ছ্বল নেতাকর্মীদের ভিড়।

ঢাকা/এএএম/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ