একটা সময় ছিল, যখন কমোডে ফ্লাশ করা হতো শিকল টেনে। শিকল টানলেই পরিষ্কার হয়ে যেত সব। সেখান থেকে আসে হাতল। হাতলের জমানা শেষে বাজারে আসে ফ্লাশ বাটন। শুরুর দিকে ফ্লাশ বাটন ছিল একটাই। এখনকার কমোডে ফ্লাশ বাটন থাকে দুটি করে। একটা ছোট, আরেকটা বড়। দুটির ব্যবহার ও কার্যকারিতা কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন।

আলাদা দুটি বাটন মূলত ব্যবহার করা হয় পানি সাশ্রয়ের জন্য। যত দিন যাচ্ছে, সুপেয় পানির পাশাপাশি ব্যবহার্য পানির পরিমাণও কমে আসছে দুনিয়াজুড়ে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ব্যবহার্য পানির চাহিদা। দ্রুতই সেই চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হবে সবাইকে। তাই পানির অপচয় রোধ করাই সর্বোত্তম পন্থা। কমোডের ফ্লাশের সঠিক ব্যবহার সেখানে রাখতে পারে বড় ভূমিকা।

আরও পড়ুনযে ৭ কাজে নিজের শক্তি-সময় অপচয় করবেন না০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪যেভাবে ফ্লাশ বাটনের সঠিক ব্যবহার পানির অপচয় রোধ করে

একটি কমোডের ট্যাংকে ৬–৯ লিটার পানি থাকে। বড় বাটন প্রেস করলে একসঙ্গে পুরো ট্যাংক খালি হয়ে যায়। সাধারণত বর্জ্য পরিষ্কার করতে পুরো ট্যাংকের পানি প্রয়োজন হয়। অন্যদিকে ছোট বাটনে খরচ হয় অর্ধেক ট্যাংক পানি। অর্থাৎ ৩–৪.

৫ লিটার পানি। প্রসাবের পর তাই ছোট বাটনটি প্রেস করাই উত্তম। এভাবেই কমোডের ফ্লাশ বাটনের সঠিক ব্যবহার কমাতে পারে পানির অপচয়। ঠিকমতো ফ্লাশ ব্যবহার করে একটা বাসা থেকে বছরে প্রায় ২০ হাজার লিটার পানি সাশ্রয় করা সম্ভব।

আরও পড়ুনবিদ্যুৎ বিল বাঁচাতে যেসব নিয়ম মেনে চলবেন২৭ মে ২০২৪যেভাবে এল কমোডের ফ্লাশ বাটন

কমোডে ডুয়েল বাটনের প্রচলন হয়েছিল জাপানে। ষাটের দশকে একই সঙ্গে ফ্লাশ ও হাত ধোয়ার কমোড উদ্ভাবন করে তারা। সেই কমোডে দুটি ফ্লাশের হাতলের পাশাপাশি ছিল একটি হ্যান্ডওয়াশ বেসিন। বেসিনের হাত ধোয়া ময়লা পানি পুনরায় ব্যবহার করা হতো ফ্লাশের কাজে। তবে সে ডিজাইন খুব একটা জনপ্রিয়তা পায়নি। পরবর্তী সময়ে, ১৯৭৬ সালে মার্কিন ডিজাইনার ভিক্টর পাপানেক কমোডে ডুয়েল ফ্লাশ বাটনের প্রস্তাব দেন। তাঁর ‘ডিজাইন ফর দ্য রিয়াল ওয়ার্ল্ড’ বইয়ে দেখা মেলে এই ডিজাইনের। ১৯৮০ সালে প্রথম অস্ট্রেলিয়ায় শুরু হয় এর ব্যবহার। ধীরে ধীরে পুরো বিশ্বে এটি জনপ্রিয়তা পায়।

তথ্যসূত্র: এমএসএন

আরও পড়ুনখাবারের অপচয় ও ব্যয় কমাবেন যেভাবে১১ মার্চ ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ ল শ ব টন র যবহ র ক ব যবহ র র অপচয় কম ড র ড জ ইন

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত

নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।

কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।

১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)

আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)

ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।

৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)

ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।

৪. ঋণের মেয়াদ

কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।

৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)

শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।

৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)

ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।

৭. প্রসেসিং ফি

আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।

৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)

বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।

৯. জামানত (কোলেটারাল)

ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।

১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও

আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ