যে ভাস্কর্য মনে করিয়ে দেয়, এই যুদ্ধ ছিল সবার
Published: 26th, March 2025 GMT
আজ যেখানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন, একসময় সেখানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল। যুদ্ধের সময় ভবনটি হয়ে ওঠে টর্চার সেল, যেখানে নারী-পুরুষনির্বিশেষে চালানো হতো পাশবিক নির্যাতন। মাহাতাব বিশ্বাস, শান্তিলতা সাহা—এমন অনেকের রক্তে ভেজা এই মাটি। বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ মহাসিন আলির ভাষায়, ‘ওখান থেকে কেউ ফিরে আসেনি।’ এই নির্মম অতীত আজও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্তিত্বে বয়ে চলছে।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে আছে ‘অদম্য বাংলা’, ভাস্কর্যটি মুক্তিযুদ্ধের আত্মত্যাগ ও গৌরবময় ইতিহাসের এক জীবন্ত প্রতীক। ২৩ ফুট উচ্চতার এই ভাস্কর্যে পুরুষের পাশাপাশি এক নারীর বলিষ্ঠ ভঙ্গিমা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, এই যুদ্ধ ছিল সবার। ভাস্কর্যের চারপাশে পোড়ামাটির ফলকে তুলে ধরা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ, জাতীয় চার নেতার মুখাবয়ব, বধ্যভূমির বিভীষিকা ও আত্মসমর্পণের স্মৃতি। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সামনে ইতিহাসকে জীবন্ত করে তোলে গল্লামারী বধ্যভূমি স্মৃতি জাদুঘর, যা শুধু একটি জাদুঘর নয়, বরং একধরনের চেতনার পাঠশালা।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে ‘চেতনা ৭১’ নামের একটি শিক্ষার্থী সংগঠন। সারা বছর ধরে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সেমিনার, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে এই সংগঠন। তাদের উদ্যোগে অনেক শিক্ষার্থী মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারছেন, ভাবতে পারছেন। আমি নিজেও খুলনা বিভাগীয় লাইব্রেরি থেকে দীপা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আমার মুক্তিযুদ্ধ-খুলনা একাত্তর বইটি পড়ে ক্যাম্পাসের ইতিহাস নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে বাধ্য হয়েছি। অনুভব করেছি, এই ক্যাম্পাস শুধুই শিক্ষার জায়গা নয়, বরং এক গৌরবোজ্জ্বল আত্মত্যাগের স্মৃতিবহ স্থান।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়নের ছাত্র ইন্দ্রনীল দত্তে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ভ স কর য
এছাড়াও পড়ুন:
হাদিকে গুলির ঘটনা আ.লীগের নির্বাচনবিরোধী ছকের অংশ: নাহিদ
ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনা কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নির্বাচনবিরোধী ছকের অংশ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এই মন্তব্য করেন তিনি।
আরো পড়ুন:
জুলাই অভ্যুত্থানকে নস্যাতের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান
দুর্নীতি-সন্ত্রাসের অভিযোগ পেলে প্রার্থিতা বাতিল: নাহিদ
নাহিদ ইসলাম বলেন, “হাদির ওপর হামলা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, আওয়ামী লীগের নির্বাচনবিরোধী ছকের অংশ।”
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগকে নরমালাইজ করার চেষ্টা চলছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করার চেষ্টা দেখছি।”
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় সব জায়গায় আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করা, প্রশাসনিকভাবে প্রতিহত করা এবং ভারতের হস্তক্ষেপ বন্ধ করার কথা বলেছি।”
পতিতরা নির্বাচন ঠেকাতে চাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সবাইকে দায়িত্ব নিয়ে নির্বাচনি পরিবেশ ফেরাতে হবে।”
নাহিদ বলেন, “আমরা সর্বাত্মকভাবে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখব বলেছি। হামলাকারী ও পরিকল্পনাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছি।”
এর আগে সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে করেছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বৈঠকে তিনটি দলের দুজন করে প্রতিনিধি অংশ নেন।
বিএনপির প্রতিনিধি দলে ছিলেন-দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দলে ছিলেন-দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।
এছাড়া এনসিপির প্রতিনিধিদলে ছিলেন- দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ।
ঢাকা/রায়হান/সাইফ