ঈদযাত্রার শেষ দিনে কমলাপুরে যাত্রীদের ভিড়
Published: 30th, March 2025 GMT
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঈদযাত্রার শেষ দিন আজ রোববার। আজও কমলাপুর রেলস্টেশনে ঘরমুখী মানুষের ভিড় চোখে পড়ার মতো।
আজ সকাল থেকেই স্টেশনের প্রবেশ ফটক, টিকিট কাউন্টার, প্ল্যাটফর্ম ও ট্রেনের বগির ভেতরে যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। অনেক ট্রেনের কিছু বগি যাত্রীতে ঠাসা দেখা যায়। তবে কিছু ট্রেনে তুলনামূলকভাবে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ছিল।
আজ সকাল ১০টা ১০ মিনিটে স্টেশনের ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে জামালপুর এক্সপ্রেস ছেড়ে যায়। ট্রেনটির কিছু বগিতে মাঝের হাঁটাচলার জায়গায় বসে যাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন কেউ কেউ। কিছু লোক আবার শৌচাগারের পাশে, কেউবা দুই বগির সংযোগস্থলে জায়গা নেন। তবে কিছু বগিতে নির্ধারিত আসনের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীর সংখ্যা খুব বেশি ছিল না।
এই ট্রেনের একটি বগিতে স্বামী, শাশুড়ি, ননদ, দেবর ও ছয় মাস বয়সী ছেলেকে নিয়ে ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছিলেন দীপা আক্তার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্রামে যাচ্ছি, আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে ঈদ পালন করব। অনেক ভালো লাগছে।’
সন্তানকে নিয়ে প্রথমবার ঈদযাত্রার অভিজ্ঞতা জানিয়ে দীপা আক্তার বলেন, ‘আগের ঈদযাত্রার অভিজ্ঞতা খুবই বাজে। এ কারণে শঙ্কায় ছিলাম, এত ছোট ছেলেকে নিয়ে কীভাবে যাব? কিন্তু স্টেশনে এসে দেখলাম, পরিস্থিতি বেশ ভালো। কোনো ভোগান্তি হয়নি। ভেতরে একটু গরম লাগছে। আশা করছি ট্রেন ছাড়লেই ঠিক হয়ে যাবে।’
একই চিত্র দেখা গেছে ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে সকাল ১০টা ২২ মিনিটে ছেড়ে যাওয়া একতা এক্সপ্রেসে। ট্রেনটির শোভন ও সুলভ শ্রেণির কোচে যাত্রীদের ভিড় ছিল। নির্ধারিত আসনের বাইরেও দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী দেখা গেছে। ট্রেনের দরজায়, সিঁড়িতেও দাঁড়ানো যাত্রীদের দেখা গেছে।
এই ট্রেনের যাত্রী আবদুল গনি চৌধুরী বলেন, নির্ধারিত আসনের বাইরে স্টেশনের বাইরে থেকে জরিমানা কেটে অনেকের কাছে টিকিট বিক্রি করা হয়েছে। টিকিট পরীক্ষকেরা (টিটিই) যে যাঁর মতো এই টিকিট বিক্রি করছেন। ফলে বগির ভেতরে ভিড় হচ্ছে। এ ছাড়া সার্বিকভাবে ঈদযাত্রার অভিজ্ঞতা এখন পর্যন্ত স্বস্তির।
অন্যদিকে বেসরকারি কমিউটার ট্রেনের টিকিট কাউন্টারেও আজ বিগত দিনগুলোর তুলনায় যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। আজ সকাল ১০টা দিকে কাউন্টারের সামনে নারী ও পুরুষের দুটি সারিতেই টিকিটের জন্য শতাধিক মানুষ দেখা গেছে।
প্রায় এক ঘণ্টা ধরে সকাল ৯টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন বলে জানান শিহাব উদ্দীন। তিনি বলেন, দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের রাজশাহী কমিউটার (৫ নম্বর) ট্রেনের টিকিট লাগবে। কিন্তু ১০টা বাজলেও তিনি কাউন্টার পর্যন্ত যেতে পারেননি।
ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশনমাস্টার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, বেলা ১১টা পর্যন্ত ১৫টি আন্তনগর ট্রেন কমলাপুর স্টেশন ছেড়ে গেছে। প্রতিটি ট্রেনই নির্ধারিত সময়ে ঢাকা ছেড়েছে। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক আছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আজই ঈদযাত্রার শেষ দিন। ঈদের আগে শেষ মুহূর্তে প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ কাটানোর আশায় রাজধানী ছাড়ছেন অনেকে। যাত্রীদের নিরাপত্তা ও যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে স্টেশনে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ঈদয ত র র
এছাড়াও পড়ুন:
অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ
দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।
এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।
শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।
সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।
হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫