ভুয়া সমন্বয়কদের বিষয়ে সতর্ক করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, ‘১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হওয়ার পর হঠাৎ করে একটি বাহিনীর আবির্ভাব ঘটেছিল, যেটাকে বলা হতো সিক্সটিন ডিভিশন। এখন আরেকটি সংকট হলো ভুয়া সমন্বয়ক। আপনাদের এখনই প্রতিরোধ শুরু করতে হবে, নইলে ভবিষ্যতে বড় সংকট হবে।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল সার্কিট হাউস মিলনায়তনে ‘দুর্নীতি ও হয়রানিমুক্ত নাগরিক সেবা ও সেবার মানোন্নয়নে করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুদক চেয়ারম্যান এ কথা বলেন। বরিশাল বিভাগে কর্মরত সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।

মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমাদের এখন বড় সুযোগ সামনে এসেছে। কারণ, একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রয়েছে, যার কোনো রাজনৈতিক পক্ষপাত নেই। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ না থাকলে আমাদের কাজের পরিবেশ অনেক ভালো হয়।’
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘সরকার পালিয়ে যায়, সরকার চলে যায়। কিন্তু আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক অবক্ষয় এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।’ তিনি বলেন, ‘নিরপেক্ষ সেবা নিশ্চিত করাই দুদকের মূল লক্ষ্য। আমরা সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি।’

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো.

রায়হান কাওসার। এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন, বরিশাল রেঞ্জ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক মো. মঞ্জুর মোরশেদ, জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন দুদেকর বিভাগীয় পরিচালক মো. মোজাহার আলী সরদার।

মতবিনিময় সভায় দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমরা অনেক সময় বলি, প্রশাসন রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত। কিন্তু আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, বিষয়টি উল্টো। আমরাই বরং রাজনীতিবিদদের কাছে যাই। যদি আমরা একটি নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকতে পারি, তাহলে পরিবর্তন আনা খুব সহজ হবে।’

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘কারও পক্ষ নেওয়া আমাদের জন্য ভালো নয়। আমাদের দায়িত্ব নিরপেক্ষ সেবা দেওয়া। আমরা সেই দায়িত্ব নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যদি একটা স্ট্যান্ড নিতে পারি, স্ট্যান্ড নিতে পারলে আমরা পরিবর্তন আনতে পারি। এই পরিবর্তন আমাদের এবং আপনাদের পক্ষে আনা খুব সহজ। আমার মনে হচ্ছে, আমরা একটা সুবর্ণ সুযোগ পাচ্ছি।’

আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আগামী নির্বাচন একটি বড় চ্যালেঞ্জ। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতিকে একটি ভালো নির্বাচন উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সেখানে আমাদের সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।’

মতবিনিময় সভায় দুদকের কাজের ধরন নিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের উচিত ভবিষ্যতের দুর্নীতি প্রতিরোধে বেশি কাজ করা। আগের দুর্নীতি নিয়ে কম সময় ব্যয় করা দরকার। আমরা শতভাগ সময় অতীতের দুর্নীতি তদন্তে ব্যয় করি, এটা আমাদের ভুল। এই ভুল থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম হ ম মদ আম দ র র জন ত বর শ ল সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত

নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।

দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।

ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্‌যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।

৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।

ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট

সম্পর্কিত নিবন্ধ