আধুনিক ‘ল্যান্ড সার্ভিস গেটওয়ে’ চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার
Published: 7th, April 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের জরুরি নির্দেশনা অনুসারে, ভূমি ডিজিটাইজেশনের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে নেওয়ার অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে ঢাকা জেলার ১৯টি ভূমি সার্কেলে ই-মিউটেশনের উন্নততর ভার্সন এবং সহজে ব্যবহারযোগ্য সফটওয়্যারের পাইলটিং শুরু হয়েছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের নেতৃত্বে এছাড়াও চার ধরনের ভূমিসেবা অনলাইনে নাগরিকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। সেবাগুলো হচ্ছে-এলডি ট্যাক্স (সারাদেশে), ই-মিউটেশন (পাইলট ফেইজ, ঢাকার ১৯টি সার্কেল), ই-পর্চা (সারাদেশে), ই-খতিয়ান এবং মৌজা ম্যাপ (সারাদেশে)।
এলডি ট্যাক্স সেবাটি সারা দেশে উন্মুক্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ২০০ কোটি টাকার ভূমিরাজস্ব আদায় সম্পন্ন হয়েছে।
নাগরিক ভোগান্তি কমাতে বিচ্ছিন্নভাবে আলাদা আলাদা সফটওয়্যার সিস্টেমে ডিজিটাল ভূমি সেবা না দিয়ে সরকার এলডি ট্যাক্স, ই-মিউটেশন, ই-পর্চা/ই-খতিয়ানসহ চারটি সেবাকে আন্ত:সংযুক্ত করে একটি আধুনিক ‘ল্যান্ড সার্ভিস গেইটওয়ে’ চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। এতে সেবাগুলোর জন্য আলাদা রেজিস্ট্রেশন প্রয়োজন হবে না। এই সিঙ্গেল সার্ভিস গেটওয়ে সারাদেশের সব ভূমি সার্কেলের উন্মুক্ত করা গেলে নাগরিকদের আরো সহজে ভূমি সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।
যেহেতু ই-মিউটেশন পদ্ধতিগতভাবে বিচারিক প্রক্রিয়ার সাথে সংযুক্ত, পাশাপাশি এতে একাধিক সংস্থা ও দপ্তর সংস্থার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, এই সেবাটির পদ্ধতিগত সহজিকরণ এবং ই-নথি ব্যবস্থা সহজীকরণে আরো পর্যাপ্ত পাইলটিং প্রয়োজন।
প্রধান উপদেষ্টা নিজে এবং তার দপ্তর, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ এবং ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব ভূমি সেবার ট্রান্সফর্মেশনে যৌথভাবে কাজ করছেন।
ভূমি সেবা ডিজিটাইজেশনের পরবর্তী পর্যায়ে বেসরকারি উদ্যোক্তা এবং ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তাদের ট্রেইনিং এর ব্যবস্থা করা হবে। এর মাধ্যমে ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে অনলাইন ভূমি সেবাগুলোকে উদ্যোক্তাদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
বাংলাদেশের আদালতগুলোতে মোট মামলা এবং অপরাধের প্রায় ৭০ শতাংশের বেশি ভূমির মালিকানা, দখল, বেদখল, অধিগ্রহণ ও হস্তান্তর কেন্দ্রিক। এমতাবস্থায় সরকার ভূমি সেবাগুলোকে যথাসম্ভব দ্রুততার সাথে সহজে ব্যবহারযোগ্য সফটওয়্যারের মাধ্যমে নাগরিকদের কাছে উন্মুক্ত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ঢাকা/হাসান/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে ব্যবসা সম্প্রসারণ ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য ডেস্ক চালু করল বেসিস
বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য জোরদার, ব্যবসা সম্প্রসারণ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং ব্যবসায়িক সহযোগিতা আরও বাড়াতে কোরিয়া ডেস্ক চালু করেছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)। আজ মঙ্গলবার বেসিস মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বেসিস-কোরিয়া ডেস্কের উদ্বোধন করা হয়। এর আগে আমেরিকা ও জাপান ডেস্কও চালু করেছে বেসিস।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দক্ষিণ কোরিয়া উদ্ভাবনমুখী ও প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতির দেশ। আর তাই দেশটিতে বাংলাদেশের আইসিটি খাতের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। কোরিয়া ডেস্কের মাধ্যমে বাংলাদেশের সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানগুলো সহজেই দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কার্যকর অংশীদারত্ব গড়ে তোলার সুযোগ পাবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী।
সম্মানিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. তৈয়বুর রহমান, কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (কোইকা) কান্ট্রি ডিরেক্টর কিম তায়ইয়োং, কোরিয়ান কমিউনিটি ইন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ইউ ইয়ং ওহ, বাংলাদেশ-কোরিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (কেবিসিসিআই) সভাপতি শাহাব উদ্দিন খান ও বেসিস কোরিয়া ডেস্কের চেয়ারম্যান এডওয়ার্ড কিম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বেসিস সহায়ক কমিটির সদস্য (প্রশাসন) মো. ইমরুল কায়েস।
শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার ট্রিলিয়ন ডলারের প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতি ও শক্তিশালী ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার (ডিপিআই) কৌশলগত সহযোগিতার জন্য একটি আদর্শ মডেল তৈরি করেছে। বাংলাদেশ দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্ভাবনী প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সমানতালে এগিয়ে যেতে প্রস্তুত। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বেসিস কোরিয়া ডেস্কের মাধ্যমে উভয় দেশ একসঙ্গে ডিজিটাল অর্থনীতির বিশাল সুযোগ কাজে লাগাতে পারবে, যা পারস্পরিক প্রবৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক বলেন, ‘বেসিস-কোরিয়া ডেস্ক আইসিটি সেক্টরে বাংলাদেশ ও কোরিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধমান সমন্বয়ের একটি মাইলফলক। এই উদ্যোগ দুই দেশের তথ্যপ্রযুক্তি এবং সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য জোরদারকরণ ও ব্যবসা সম্প্রসারণ এবং ব্যবসায়িক সহযোগিতা জোরদার করতে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে বলে আমি আত্মবিশ্বাসী।
বেসিস কোরিয়া ডেস্কের চেয়ারম্যান এডওয়ার্ড কিম বলেন বেসিস কোরিয়া ডেস্ক বাংলাদেশি এবং কোরিয়ার প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কৌশলগত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করবে। বেসিস কোরিয়া ডেস্কের যাত্রা বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে শক্তিশালী করতে এবং বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশকে তথ্যপ্রযুক্তির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করতে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক।