প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে অন্নপূর্ণা পর্বতশৃঙ্গ জয় করে নিরাপদে বেজক্যাম্পে (৪১৩০ মিটার) নেমে এসেছেন বাবর আলী। সেখান থেকেই মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটায় তিনি বললেন, ‘আমি ঠিকঠাক আছি। বিকেলে বেজক্যাম্পে পৌঁছেছি।’
সোমবার সকালে পর্বতশৃঙ্গে পৌঁছান বাবর আলী। ৮০৯১ মিটার পর্বতের চূড়ায় বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান। সেখানে তার সঙ্গে আছেন গাইড ফূর্বা অংগেল শেরপা।
বাবর আলী বলেন, অন্নপূর্ণা ১-এর ক্যাম্প ২ ও ৩-এর পথ অনিশ্চয়তায় ভরা। সেখানে প্রতি মুহূর্তে তুষারধস আর ওপর থেকে পাথর পড়ার ঝুঁকি থাকে। আমার অভিযানের সময়ই দুজন শেরপার মৃত্যুর সংবাদ পেয়েছি।
তিনি বলেন, ঝুঁকি বিবেচনায় অন্নপূর্ণা–১-কে আমি ১০–এ ১০ দেব। যেখানে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্টকে দেব ১০-এ দুই, আর লোৎসের ক্ষেত্রে ১০-এ চার। আসলে এটি সত্যিই ‘মাউন্টেনিয়ারস মাউন্টেইন’, যা সবকিছুকে চ্যালেঞ্জ করে।
পর্বতারোহী বাবর আলী পেশায় চিকিৎসক। তিনি চট্টগ্রামভিত্তিক পর্বতারোহণ ক্লাব ভার্টিক্যাল ড্রিমার্সের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক। গত বছর প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে একই অভিযানে বিশ্বের সর্বোচ্চ উচ্চতার মাউন্ট এভারেস্ট এবং চতুর্থ সর্বোচ্চ উচ্চতার লোৎসে পর্বত জয় করেন।
অন্নপূর্ণা-১ বিশ্বের দশম সর্বোচ্চ উচ্চতার পর্বত হলেও পর্বতারোহীদের মৃত্যুর হার বিবেচনায় বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক পর্বত হিসেবে পরিচিত। দুর্গম এই পর্বত জয় করতেই গত ২৪ মার্চ বাংলাদেশ থেকে নেপালে যান বাবর আলী। প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ করে কাঠমান্ডু থেকে পোখারা হয়ে ২৮ মার্চ পৌঁছান অন্নপূর্ণা বেজক্যাম্পে। সেখানে এক দিন বিশ্রাম নেন। এরপর উচ্চতার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে ক্যাম্প–১–এ (৫২০০ মিটার) দুই রাত এবং ক্যাম্প–২–এ (৫৭০০ মিটার) এক রাত কাটিয়ে আবার ২ এপ্রিল নেমে আসেন বেজক্যাম্পে।
বাবর আলীর সংগঠন এবং এই অভিযানের আয়োজক পর্বতারোহণ ক্লাব ভার্টিক্যাল ড্রিমার্সের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উচ্চতার সঙ্গে নিজেকে খাপ খাওয়ানোর পর পর্বতারোহীরা অনুকূল আবহাওয়ার জন্য বেজক্যাম্পে অপেক্ষা করেন। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বাবর আলী জানতে পারেন, সেই অনুকূল আবহাওয়া থাকবে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত। তাই পরিকল্পনা মোতাবেক ৩ এপ্রিল আবার চূড়ার দিকে উঠতে শুরু করেন তিনি। ওই দিন ক্যাম্প–১–এ থেকে পরদিন উঠে যান ক্যাম্প–২–এ। এর মধ্যেই শুরু হয় তুষারঝড়। প্রতিকূল আবহওয়ার মধ্যেও বাবর পৌঁছে যান ক্যাম্প–৩–এ (৬৫০০ মিটার)। সাধারণত ৭ হাজার ৪০০ মিটার উচ্চতায় ক্যাম্প তৈরি করে পর্বতারোহীরা চূড়ায় আরোহণের চূড়ান্ত পদক্ষেপ (সামিট পুশ) নেন। কিন্তু আবহাওয়া বিবেচনায় বাবর আলী ক্যাম্প-৩ থেকেই সেই পদক্ষেপ নেন ৬ এপ্রিল রাতে।
সোমবার পর্বত জয় করে ক্যাম্প ২–এ নামার পরিকল্পনা থাকলেও দলের অন্য পর্বতারোহীদের কারণে ক্যাম্প ৩–এ অবস্থান করেন বাবর আলী। মঙ্গলবার সেখান থেকে সকালে নামতে শুরু করেন। ক্যাম্প–২ ও ১ হয়ে নেপালের স্থানীয় সময় বিকেলে নেমে আসেন বেজক্যাম্পে।
অভিযানের ব্যবস্থাপক ফরহান জামান জানান, টানা কয়েক দিনের অভিযানে বাবর আলী অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছেন। আজ বিশ্রাম নেবেন। বুধবার সকালে শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন বাবর।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ছেলে প্রবাসে যাবে, কাপড় ইস্ত্রি করতে গিয়ে মায়ের মৃত্যু
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শিল্পী বেগম (৪০) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (১৬ জুন) সন্ধ্যায় উপজেলার মনিয়ন্ধ ইউনিয়নের উত্তর পাড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত শিল্পী বেগম ওই গ্রামে বাসিন্দা ইরাক প্রবাসী জলফু মিয়ার স্ত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিল্পী বেগমের ছেলে ওয়াসিম প্রবাসে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এজন্য তার মা বাড়িতে বৈদ্যুতিক ইস্ত্রি দিয়ে ছেলের কাপড় ইস্ত্রি করছিলেন। এসময় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তিনি গুরুতর আহত হন। পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আরো পড়ুন:
কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত মসজিদ কমিটির সভাপতির মৃত্যু
পরকীয়ার জেরে স্বামী-স্ত্রীর বিষপান, মারা গেলেন স্বামী
আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ছমিউদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঢাকা/মনিরুজ্জামান/রাজীব