সহজ ম‌্যাচ কঠিন করে জেতা পাকিস্তানের পুরোনো অভ‌্যাস, রোজকার কাজ। গতকাল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ফয়সালাবাদেও এমন কাজ করলেন তারা।

জয়ের অবস্থান থেকে হঠ‌্যাৎ ছন্দ হারিয়ে ম‌্যাচ হারের শঙ্কায় পড়ে যান। এরপর তীব্র লড়াইয়ে ম‌্যাচটাকে নাগালে নিয়ে আসেন। আবার বিপর্যয়ে পড়েন। সবশেষে চরম নাটকীয়তা ও রোমাঞ্চ উপহার দিয়ে ম‌্যাচ জয়।

রোমাঞ্চ, নখ কামড়ানো এক মুহূর্তকে পাশ কাটিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দারুণ এক জয় তুলে নিয়েছে পাকিস্তান। আগে ব‌্যাটিংয়ে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা ২৬৩ রানে গুটিয়ে যায়। জবাবে পাকিস্তান ২ বল আগে ২ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে।

অথচ একটা সময়ে ২৭ বলে মাত্র ২৩ রান দরকার ছিল তাদের। হাতে ৬ উইকেট। সেই ম‌্যাচ শেষ ওভারে যায় ৪ রানের সমীকরণে। হাতে ৩ উইকেট। অন্তিম মুহূর্তে আরো ১ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে স্বাগতিকরা। শেষ পর্যন্ত ভাগ‌্যবিধাতা পাকিস্তানের দিকে মুখ তুলে তাকায়। তিন ম‌্যাচ সিরিজে তারা এখন ১-০ ব‌্যবধানে এগিয়ে।

এই ম‌্যাচ দিয়ে ফয়সালাবাদে ১৭ বছর পর ফিরেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। এ বছর বাংলাদেশেরও এই মাঠে খেলার কথা ছিল। কিন্তু ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধের কারণে নিরাপত্তা শঙ্কায় পাকিস্তান সফর ওই মুহূর্তে বাতিল করে বাংলাদেশ।
পাকিস্তানের গতকালের জয়ের নায়ক সালমান আগা। ৭১ বলে ৬২ রান করেন তিনি। বোলিংয়ে নজর কেড়ে নেনে লেগ স্পিনার আবরার আহমেদ ও পেসার নাসিম শাহ। দুজন ৩টি করে উইকেট নেন। আবরার হ‌্যাটট্রিকের স্বাদ পেতে পারতেন। কিন্তু রিভিউ নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ব‌্যাটসম‌্যান বেঁচে যান।

ব‌্যাটিংয়ে নেমে ১৬ ওভারে ৯৮ রান পায় প্রোটিয়ারা। ইনিংস উদ্বোধন করেন ‍লুহান ড্রি প্রিটোরিয়াস ও কুইন্টন ডি কিক। দুজনই পেয়েছেন ফিফটি। প্রিটোরিয়াস ৫৭ ও ডি কক ৬৩ রান করেন। এই জুটি ভাঙার পর আর বড় জুটি গড়তে পারেনি অতিথিরা। শেষ দিকে তারা ৭ উইকেট হারায় মাত্র ৭২ রানে। নাটকীয় ব‌্যাটিং ধসের পর নবম উইকেটে লুঙ্গি এনগিডি ও কর্বিন বশ ৩৪ রান যোগ করেন। যেখানে কর্বিন একাই করেন ৩২ রান। সব মিলয়ে ৪০ বলে ৪১ রান করেন এই অলরাউন্ডার।

জবাব দিতে নেমে ফখর ও সায়েম ৮৭ রানের জুটি গড়েন। ভালো শুরুর পর পাকিস্তানের ব‌্যাটিংয়ে হোঁচট আসবেই। ৮৭ থেকে ১০৫ রানে যেতে তাদের ৩ ব‌্যাটসম‌্যান সাজঘরে। ফখর ৪৫, সায়েম ৩৯ ও বাবর ৭ রানে আউট হন। সেখান থেকে রিজওয়ানের ৫৫ ও সালমানের ৬২ রানে জবাব দেয় পাকিস্তান। কিন্তু তারা কেউই ম‌্যাচ জিতিয়ে আনতে পারেননি। শেষ দিকে হোসেন তালাহের ২২ ও মোহাম্মদ নওয়াজের ৯ ও অধিনায়ক আফ্রিদির ৪ রানে মুখ রক্ষা হয় পাকিস্তানের।
এই ম‌্যাচ দিয়ে পাকিস্তানের নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক শাহীন শাহ আফ্রিদির পথ চলা শুরু হলো। নতুন অধিনায়ক জয়ের খাতা খুলেই শুরু করলেন।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার একই মাঠে সিরিজের দ্বিতীয় ম‌্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। 

ঢাকা/ইয়াসিন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন কর ন উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

মনোনয়ন পেয়েই খুলনায় বিএনপি প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণা শুরু

দলীয় মনোনয়ন ঘোষণার পর খুলনায় বিএনপির প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিকভাবে উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে নিজেদের নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। দলের ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের জন্য ভোট প্রার্থনা করে দোয়া মাহফিল, মোটর শোভাযাত্রা এবং সভা-সমাবেশের মাধ্যমে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণা শুরু হয়েছে।

খুলনায় ছয়টি সংসদীয় আসন রয়েছে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সোমবার (৩ নভেম্বর) বিএনপি ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতে প্রার্থী ঘোষণা করে। একটি আসন স্থগিত রেখেছে।

মনোনীত প্রার্থীরা হলেন- খুলনা-২ আসনে সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, খুলনা-৩ আসনে রকিবুল ইসলাম বকুল, খুলনা-৪ আসনে আজিজুল বারী হেলাল, খুলনা-৫ আসনে আলী আসগর লবি এবং খুলনা-৬ আসনে খুলনা জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী। তবে, খুলনা-১ আসনের প্রার্থী এখনও ঘোষণা করা হয়নি।

দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জু এবং মনিরুল হাসান বাপ্পির মনোনয়নকে নতুন চমক বলে অভিহিত করেছে।

সূত্র মতে, খুলনা-২ আসনে প্রত্যাশীদের মধ্যে নগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা এবং সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলমসহ বিএনপির বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা মনোনয়ন ছিলেন। তবে, দল মঞ্জুকে বেছে নিয়েছে। যিনি ২০২৩ সাল থেকে সাংগঠনিক পদ থেকে অব্যহতিপ্রাপ্ত ছিলেন। কিন্তু নগরীতে তার অনুসারীর সংখ্যা রয়েছে প্রচুর।

অনুভূতি প্রকাশ করে নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ‘‘দল সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি তাদের আস্থা ও স্বীকৃতির জন্য কৃতজ্ঞ।’’

খুলনা-৩ আসনে দলের ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন। যিনি আগে একই আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।

খুলনা-৪ আসনে বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল এবং যুক্তরাজ্য বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক পারভেজ মল্লিকের মধ্যে মনোনয়নের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছিল। কিন্তু দলটি অবশেষে হেলালকে মনোনয়ন দেয়।

খুলনা-৫ আসনে প্রাক্তন এমপি এবং প্রাক্তন বিসিবি সভাপতি আলী আসগর লবিকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

তবে, সবচেয়ে বড় চমকটি এসেছে খুলনা-৬ আসনে। যেখানে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোমরেজুল ইসলাম, সিনিয়র সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী, বাসস চেয়ারম্যান আনোয়ার আল-দীন এবং স্থানীয় নেতা ডা. আব্দুল মজিদ এবং রফিকুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র বিএনপি নেতাকে সামনের দৌড়ে দেখা গেছে। তবুও দলটি মনিরুল হাসান বাপ্পিকে বেছে নিয়েছে। যিনি সম্প্রতি জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব নিযুক্ত হয়েছেন।

মনোনয়নের কথা স্মরণ করে বাপ্পী বলেন, “আমি ৩৫ বছর ধরে এই দলে আছি। ছাত্রদল থেকে যুবদল ও বিএনপি। আমি সবসময় হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্য রাস্তায় নেমেছি। দল আমার ত্যাগ স্বীকার করেছে। এই মনোনয়ন প্রমাণ করে যে নিষ্ঠা কখনও বৃথা যায় না।”

এদিকে, মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পর মঙ্গলবার থেকে খুলনার নির্বাচনী এলাকায় এরইমধ্যে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীরা প্রচারণা শুরু করেছেন।

খুলনা-৪ আসনের আজিজুল বারী হেলাল রূপসা ঘাটের ব্যাংক মোড়ে এক দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে তার প্রচারণা শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘‘ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে আবারো আমার জন্মস্থানের প্রতিনিধিত্ব করতে পারাটা অনেক সম্মানের।’’

খুলনা-৬ আসনের প্রার্থী মনিরুল হাসান বাপ্পী তার প্রচারণা শুরু করেন তার বাবার কবর জিয়ারত, হাসপাতালে অসুস্থ দলীয় নেতাদের সাথে দেখা করে এবং কয়রা ও পাইকগাছার উপজেলা নেতাদের সাথে কথা বলে।

তিনি বলেন, “বুধবার জেলা পর্যায়ের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার মাধ্যমে প্রচারণা আরো জোরদার করা হবে।”

এদিকে, খুলনা-২ আসনের প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু বর্তমানে অসুস্থ থাকায় তার অনুসারীদের মাধ্যমে প্রচারণা কার্যক্রম শুরু করেছেন।

মঞ্জুর অনুসারি সাবেক ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান মুরাদ বলেন, “প্রার্থী ঘোষণার আগে থেকেই দলীয় কর্মীরা তার পক্ষে দিনব্যাপী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এখনো চালাচ্ছেন।”

খুলনা-৩ আসনে রকিবুল ইসলামের পক্ষেও প্রচারণা কার্যক্রম অব্যাহত ছিল। বকুল সমর্থকরা দিনব্যাপী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ