চুলচেরা বিশ্লেষণ বিপিএলের দল নির্বাচন, ১০ কোটির ব্যাংক গ্যারান্টির অপেক্ষা
Published: 5th, November 2025 GMT
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ঘণ্টা তাহলে বেজেই গেল। বিপিএলের দল নির্বাচন। সাম্ভাব্য শুরু ও শেষের তারিখ। প্লেয়ার্স ড্রাফটের দিনক্ষণ ঠিক করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। দুয়েক দিনের মধ্যেই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে।
পাঁচ দল নিয়ে হবে বিপিএলের আগামী আসর। গুলশানে নাভানা টাওয়ারে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সভার পর ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর মালিকানাও চূড়ান্ত করেছে বিসিবি। বসুন্ধরা গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন টগি স্পোর্টস রংপুর রাইডার্সের মালিকানা পেয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে রংপুরকে তারাই প্রতিনিধিত্ব করছে। আগামী পাঁচ বছরও তারা থাকবে।
ট্রায়াঙ্গাল সার্ভিসকে দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম ফ্র্যাঞ্চাইজি। এ ছাড়া নাবিল গ্রুপ রাজশাহী, ক্রিকেট উইথ সামি সিলেট ও চ্যাম্পিয়ন স্পোর্টস পেয়েছে ঢাকা ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকানা। প্রত্যেককেই ফ্রাঞ্চাইজি দেয়া হয়েছে পাঁচ বছরের জন্য।
বিপিএলে ফ্রাঞ্চাইজি নির্বাচনে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড তিনটি বিষয়ে খেয়াল করেছে,
১) আর্থিক সামর্থ্য
২) ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড মোটিভেশন
৩) অভিজ্ঞতা ও ক্রিকেটে সংশ্লিষ্টতা
এজন্য কাজ করেছে অডিট ফার্ম, ল এন্ড ফোর্সমেন্ট সংস্থা, বিসিবির নিজস্ব সোর্স।
বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইফতিখার রহমান মিঠু সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘‘১১টা টিম ছিল। সেখান থেকে তিনটি দল প্রথম সিলেকশনে বাদ পড়ে। পরে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে, বিপিএলের গভর্নিং কাউন্সিলের সর্বসম্মতিমতে এই পাঁচটি টিম চূড়ান্ত করতে পেরেছি।’’
পাঁচ দল নিয়ে বিপিএল আয়োজনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা বাড়বে বলেই আশাবাদ মিঠুর, ‘‘পাঁচ দলে বরং প্রতিযোগিতা বাড়বে। একেক দলে ১১ জন করে প্লেয়ার থাকবে। আমরা চাই দেশের সকলের সুযোগ দেওয়ার। যারা কনট্রাকটিভ হবে, তারা যাতে টাকা সময়মতো পায়। আমাদের বিপিএল যে এতটা তলানীতে চলে গেছে, সেটাই বড় কারণ।’’
দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে নাম ঠিক করা হবে বলে জানিয়েছে বিসিবি। আজ থেকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে ১০ কোটি টাকা ব্যাংক গ্যারান্টি না পেলে ফ্র্যাঞ্চাইজি বাদও হতে পারে।
বিপিএলের ১২তম আসর ১৯ ডিসেম্বর মাঠে গড়ানোর পরিকল্পনা বিসিবির। ফাইনাল হতে পারে আগামী বছরের ১৬ জানুয়ারি। আগেই নির্ধারণ করা ১৭ নভেম্বর হবে প্লেয়ার্স ড্রাফট।
রংপুর রংপুর রাইডার্স ও ঢাকা ঢাকা ক্যাপিটালস নামে বিপিএল খেলবে। এছাড়া চিটাগং বুলস, রাজশাহী স্টারস ও সিলেট ইউনাইটেড নামে মাঠে নামতে পারে দলগুলো।
ঢাকা/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ঞ চ ইজ ব প এল র
এছাড়াও পড়ুন:
ভালোবাসা ও শ্রদ্ধায় ঢাবিতে মানবেন্দ্র লারমাকে স্মরণ
সাবেক আইনপ্রণেতা ও বিপ্লবী নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় এক স্মরণসভায় তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
স্মরণসভার শুরুতে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন এম এন লারমার ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন জাতীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা।
মানবেন্দ্র লারমা গরিব মেহনতি মানুষের নেতা উল্লেখ করে স্মরণসভায় সাংবাদিক সোহরাব হাসান বলেন, ‘তিনি কেবল পাহাড়ি মানুষের নেতা ছিলেন না। বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা সমগ্র নিপীড়িত মানুষের কথা বলেছেন। তিনি বাহাত্তরের সংবিধানে আদিবাসী, শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের কথা তুলে ধরেছেন। তিনি সে সময় সংসদে দাড়িয়ে দৃঢ় কণ্ঠে প্রতিবাদ করেছিলেন যে তিনি একজন চাকমা, একজন চাকমা কোনো দিন বাঙালি হতে পারেন না।’
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, ‘জুলাই সনদে আজকে আদিবাসী মানুষের কথা বলা নেই। অথচ কেবল মুখে বহুত্ববাদী, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের কথা বলা হচ্ছে। বিগত সময়ের দলীয় সরকার নাহয় আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করেনি। কিন্তু গণ–অভ্যুত্থান–পরবর্তী বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময় পাহাড়ি আদিবাসীরা কমপক্ষে দুটি সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার হয়েছেন। অন্যদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যাকে রাজনৈতিভাবে সমাধানের লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের কথা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনো উচ্চারণ করেনি।’
ঐক্য ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ তারেক বলেন, ‘চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থান যে চেতনা নিয়ে শুরু হয়েছিল, আজ সেই চেতনা মৌলবাদী শক্তির কাছে লুট হয়ে গেছে। সত্তরের দশকে নতুন বাংলাদেশে মহান নেতা মানবেন্দ্র লারমা সেই স্বপ্ন দেখছিলেন, যে স্বপ্ন একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার, গরিব মেহনতি তথা নিপীড়িত পাহাড়ি আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বুনেছিলেন।’
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সহসাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, বাহাত্তরের সংবিধানে নিপীড়িত মানুষের অধিকারের কথা বলা হয়নি, নারী-পুরুষের বৈষম্য বিলোপ এবং মেহনতি মানুষের মৌলিক অধিকারের কথা তুলে ধরা হয়নি। সে সময় শোষিত মানুষের বন্ধু মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা তাঁদের হয়ে কথা বলেছেন। তিনি সংবিধান প্রণয়নের সময় শ্রমিক, গরিব ও আদিবাসী নিপীড়িত মানুষের কথা বলেছিলেন।
সাবেক সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে এ দেশের যত রাজনৈতিক দল আছে, তারা অন্য জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করার মতো মানসিকতা এখনো তৈরি করতে পারেনি। ভোটের আগে মুখে বললেও তা বাস্তবে বাস্তবায়ন করে না।’
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল কাফি রতন বলেন, ‘মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা জুম্ম জাতির জন্য ছাত্রজীবন থেকে অধিকারের কথা বলেছিলেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের সংবিধান যখন বাঙালি বলে আদিবাসী মানুষের পরিচয় করে দিতে চেয়েছিল, সেই সময় গণপরিষদে এম এন লারমা প্রতিবাদ করেছিলেন।’
স্মরণসভায় আরও বক্তব্য দেন লেখক ও সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, সাংবাদিক সাইফুর রহমান, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা ও নারীনেত্রী শিরিন হক। স্মরণসভা শেষে গান, কবিতা পাঠ ও প্রদীপ প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।